নবরাত্রির প্রথম দিনেই নারী ও কন্যাদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যজুড়ে ‘মিশন শক্তি ৫.০’ অভিযানের সূচনা করেন। এই অভিযানের আওতায় পুলিশ প্রশাসন, বিশেষত এডিজি পদ্মজা চৌহানের নেতৃত্বে, নজিরবিহীন পরিসরে নজরদারি ও অভিযান চালানো হয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ১,০৮,২৯২টি মন্দির ও জনসমাগমস্থলে পুলিশ পরিদর্শন চালায়, ৯,৭৭,২৬৯ জনকে যাচাই করা হয় এবং ২,৫০০-রও বেশি এফআইআর নথিভুক্ত হয়।
অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াডের নজরদারি জোরদার:
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াড মন্দির, বাজার, মল, পার্কসহ জনবহুল এলাকায় টহল ও নজরদারি কার্যক্রম বাড়িয়ে দেয়। এই সময়ে ২,৫৪২টি এফআইআর দায়ের করা হয় এবং ৩,৯৭২ জন সমাজবিরোধীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও, ৩,১৩,৯২৪ জনকে সতর্ক ও পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে তারা জনসমক্ষে শৃঙ্খলা বজায় রাখে। রাজ্যজুড়ে ৫৩,২৩৭টি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যা নারীদের প্রতি সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপকে প্রতিফলিত করে।
পূজা মণ্ডপ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কড়া নিরাপত্তা:
নবরাত্রি উপলক্ষে রাজ্যজুড়ে ৫৫,৩৭৭টি প্যান্ডেল তৈরি হয়েছিল। প্রত্যেকটি প্যান্ডেলেই পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা নিরাপত্তা পরিদর্শন চালান। একই সময়ে ৪,৯৪৭টি রামলীলা ও মেলাস্থলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। যোগী সরকারের কড়া তত্ত্বাবধানে রাজ্যের সব ধর্মীয় অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াড, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ সতর্কতায় মহিলারা ও কন্যারা উৎসবের সময় কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হননি।
ব্যাপক নিরাপত্তা বাহিনীর মোতায়েন:
নবরাত্রি চলাকালীন নিরাপত্তা বজায় রাখতে মোট ৩৭,৩৩৭ জন পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মী মোতায়েন করা হয়। এর মধ্যে ছিলেন ৪১১ জন গেজেটেড অফিসার, ৭,৯৯৯ জন ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টর, ২২,৫৪৭ জন হেড কনস্টেবল ও কনস্টেবল, এবং ৬,৩৮০ জন হোমগার্ড, পিআরডি ও এসপিও সদস্য। তারা দিনরাত টহল ও নজরদারি চালিয়ে উৎসবের পরিবেশকে শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিত রাখেন।
নারীদের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি:
মিশন শক্তি অভিযানের অংশ হিসেবে রাজ্যের ৩৯,৯১১টি মন্দির, ধর্মীয় স্থান, মেলা ও জনসভাস্থলে নারীদের চৌপাল (পাবলিক মিটিং) আয়োজন করা হয়। এতে মোট ২০,৫৪,৩০৮ জন মানুষ অংশ নেন, যার মধ্যে ১৩,৫৩,৯০৩ জন নারী ও ৭,০০,৪০৫ জন পুরুষ ছিলেন। পাশাপাশি, মহিলা ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা মোট ১,৫৬,৯১,০৮০টি তথ্যবহুল ফোল্ডার, পামফ্লেট ও পোস্টার বিতরণ করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে।
সরকারের বার্তা: নিরাপত্তা ও সম্মানই মূল লক্ষ্য:
‘মিশন শক্তি ৫.০’ কেবল একটি অভিযান নয়, এটি নারী নিরাপত্তা ও সম্মানকে সামাজিক আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। যোগী সরকারের এই পদক্ষেপ রাজ্যজুড়ে এক ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে—মহিলারা যেন নিরাপদে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নবরাত্রি ও রামলীলা উদযাপনের মধ্য দিয়ে এই উদ্যোগ তার কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে।