নয়াদিল্লি, ২১ সেপ্টেম্বর: রাজধানী দিল্লিকে রক্তাক্ত গ্যাং সংঘর্ষ থেকে রক্ষা করতে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে বড় সাফল্য (Crime Branch)। সানি সাই গ্যাং-এর দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে তারা প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাং-এর বিরুদ্ধে হামলার একটি ষড়যন্ত্র বানচাল করে দিয়েছে। এই অভিযানে পুলিশ দুটি অস্ত্র এবং কয়েকটি গুলি উদ্ধার করেছে, যা রাজধানীতে সম্ভাব্য হত্যাকাণ্ডের ঝুঁকি কমিয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া ব্যাক্তিদের পরিচয় হিসেবে ২৭ বছর বয়সী সুখপ্রীত আলিয়াস ‘মাফিয়া’ এবং ২৫ বছর বয়সী শমশাদ আলী আলিয়াস ‘পাহলওয়ান’। পুলিশের তথ্য অনুসারে, সুখপ্রীত ২০১৯ সালে জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সানি সাই-এর যোগাযোগে এসেছিল। পরবর্তীকালে সে নিহাল ভিলারে একজন সট্টাবাজের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল।
অন্যদিকে, শমশাদ ২০১৫ সালে মদ্যপান আইন লঙ্ঘন করে অপরাধের জগতে প্রবেশ করে এবং ২০২৩ সালে সোনার বিস্কুট লুটের মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর সানি সাই গ্যাং-এ যোগ দেয়। দুজনেই হত্যা, হত্যা চেষ্টা এবং ডাকাতির মতো একাধিক মামলায় জড়িত ছিল।পুলিশের একজন সিনিয়র অফিসার জানান, দুজন গ্রেপ্তারকৃত সদস্য দুই মাস আগে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাং-এর উপর হামলার পরিকল্পনা করছিল।
শমশাদ আলীর কাছ থেকে একটি পিস্তল এবং দুটি গুলি উদ্ধার হয়েছে, যখন সুখপ্রীতের কাছ থেকে একটি লোডেড সিঙ্গল-শট পিস্তল পাওয়া গেছে। এই অস্ত্রগুলো দিল্লির রাস্তায় গোলাগুলির ঝড় তুলতে প্রস্তুত ছিল। অভিযানের সময় পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অপারেশন চালিয়ে তাদের ট্র্যাক করে এবং গ্রেফতার করে।
দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের এই অভিযান রাজধানীতে গ্যাং যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান হুমকির বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সানি সাই গ্যাং, যা সোনার লুটপাট এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য কুখ্যাত, সম্প্রতি জেল থেকে মুক্ত সদস্যদের মাধ্যমে সক্রিয় হয়েছে। পুলিশের তথ্যমতে, এই গ্যাং প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের শত্রুতা চালিয়ে যাচ্ছে, যা রাজধানীতে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে।
গত মাসে বওয়ানা এলাকায় নবীন বালি গ্যাং-এর তিন শার্পশুটার গ্রেফতার হয়েছে, যা একই ধরনের ষড়যন্ত্র নাকাম করেছিল। এছাড়া, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রোহিণীতে টিল্লু তাজপুরিয়া গ্যাং-এর দুই শার্পশুটার ধরা পড়ে, যারা গোগি গ্যাং-এর উপর হামলার পরিকল্পনা করছিল।দিল্লি পুলিশের এই অভিযানগুলো দেখিয়েছে যে, তারা গোপন সংবাদ ব্যবস্থা এবং টেকনিক্যাল সার্ভেইল্যান্সের মাধ্যমে দুষ্কৃতীদের উপর নজরদারি বজায় রেখেছে।
একজন অফিসার বলেন, “আমরা রাজধানীকে অপরাধমুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই গ্রেফতার গুলো সম্ভাব্য গ্যাং সংঘর্ষ প্রতিরোধ করেছে এবং নিরাপত্তা বাড়িয়েছে।” তবে, পুলিশ আরও তদন্ত করে গ্যাং-এর অন্যান্য সদস্যদের খোঁজ করছে, যারা লন্ডন বা অন্যান্য দেশ থেকে নির্দেশ দিচ্ছে।এই ঘটনা দিল্লির অপরাধ জগতের জটিলতা তুলে ধরেছে।
টস জিতে সহজ সিদ্ধান্ত নিলেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার
যুবকরা যেভাবে অপরাধের দলে যোগ দিচ্ছে, তা সমাজের জন্য উদ্বেগজনক। পুলিশের সাফল্য সত্ত্বেও, রাজধানীতে গ্যাং সংঘর্ষের ছায়া লেগে রয়েছে। সরকার এবং পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় এই সমস্যা মোকাবিলা করা দরকার, যাতে দিল্লির নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। এই গ্রেফতার গুলো নাগরিকদের মধ্যে আশার আলো জ্বালিয়েছে, কিন্তু অপরাধের মূলোৎপাটনের জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
