Tripura Municipal election
নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়েই বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় পুরভোটের (municipal election)৷ ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এদিন ভোট শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে একের পর এক হিংসা ও অশান্তির অভিযোগ। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে পড়ে যে ভোটচলাকাকীন হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় দেশের শীর্ষ আদালত।
এদিন শীর্ষ আদালত (Supreme court)ভোট চলাকালীন ত্রিপুরায় (tripura) আরও দুই কোম্পানি সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী (crpf) পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেয়। ভোটচলাকালীন এভাবে নিরাপত্তা বাহিনী পাঠাতে বলার নির্দেশ এককথায় নজিরবিহীন বলা যেতে পারে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ একদিকে যেমন বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা তেমনই এতদিন ধরে রাজ্যের অন্যতম বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস সন্ত্রাসের যে অভিযোগ করছিল তা যে একেবারেই সঠিক সেটা প্রমাণ হল।
ত্রিপুরার প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএম শীর্ষ আদালতের কাছে অভিযোগ করে যে, রাজ্যে ব্যাপক সন্ত্রাস চালাচ্ছে বিজেপি। সাধারণ মানুষকে বিজেপির পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য ভয় দেখানোর পাশাপাশি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপরেও আক্রমণ চালাচ্ছে। এধরনের হিংসা ও সন্ত্রাসের পরিবেশে কখনওই অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। বিরোধীদের এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই সক্রিয় হয়ে ওঠে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার দেশের শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নির্দেশ দেন, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য অবিলম্বে ত্রিপুরায় আরও দুই কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী পাঠাতে হবে। শুধু তাই নয়, পুরভোট যাতে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হতে পারে তার জন্য কেন্দ্র ও ত্রিপুরা সরকারকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
ত্রিপুরার পরিস্থিতি নিয়ে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের এই পর্যবেক্ষণ ছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, পুর নির্বাচনে প্রতিটি বুথে যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে তার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও ত্রিপুরা পুলিশ আধিকারিকদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিটি বুথে সাংবাদিকদের প্রবেশ করার অনুমতি দিতে হবে। পাশাপাশি ব্যালট পেপারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। ২৮ নভেম্বর ভোট গণনার দিন যাতে কোথাও কোনও অশান্তি ও ঝামেলা না হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের এই নির্দেশ নিশ্চিতভাবেই বিজেপির কাছে একটি ধাক্কা। পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের নির্দেশে উজ্জীবিত বিরোধী শিবির।
রাজ্যের অন্যতম বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম থেকেই ত্রিপুরায় বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে আসছে। গত কয়েক দিনে এখানে তৃণমূল নেতা কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। এমনকী, তৃণমূল প্রার্থীদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছোড়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব নিজেই বিজেপির হার্মাদ বাহিনীকে উস্কানি দিয়ে চলেছেন। ঘটনার জেরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, আগরতলার প্রতি বুথে কমপক্ষে পাঁচজন সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানকে রাখতে হবে। এদিন ২০টি পুর অঞ্চলের ৩৩৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২২২টিতে আজ ভোটগ্রহণ চলছে। বিজেপি ইতিমধ্যেই ১১২ টি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে। এদিন যে সব বুথে ভোট নেওয়া হচ্ছে সেখানেই বিজেপি নতুন করে সন্ত্রাস চালিয়েছে বলে অভিযোগ।