Tripura: দরজা খোলা আছে চলে আসুন মমতার ‘নেমতন্ন ‘ পেলেন সুদীপ

কোন পথে ত্রিপুরার (Tripura) পরিবর্তনের কান্ডারি বলে পরিচিত সুদীপ রায় বর্মন? তীব্র আলোড়িত বাংলাভাষী প্রধান এই রাজ্যের রাজনীতি। যদিও সুদীপবাবু নীরব। তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। সদ্য…

Sudip Barman

কোন পথে ত্রিপুরার (Tripura) পরিবর্তনের কান্ডারি বলে পরিচিত সুদীপ রায় বর্মন? তীব্র আলোড়িত বাংলাভাষী প্রধান এই রাজ্যের রাজনীতি। যদিও সুদীপবাবু নীরব। তিনি দিল্লি যাচ্ছেন।

সদ্য বিজেপি ত্যাগ করা সুদীপ রায়বর্মণকে খোলাখুলিভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে আহ্বান জানালেন টিএমসির ত্রিপুরা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করা হচ্ছে, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সুদীপবাবু যদি বিজেপি মুক্ত ত্রিপুরা দেখতে চান তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসে আসতে পারেন। তবে তিনি কী করবেন তা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।

পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য সে রাজ্যের বিধানসভা ভোটে নিজে মমতার পক্ষ ছেড়ে চাটার্ড বিমানে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ভোটে হারেন। তারপর ত্রিপুরার পুরভোটের আগে এ রাজ্যে এসে দলটির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ফের টিএমসিতে সামিল হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে তিনি নিজ এলাকা হাওড়ার ডোমজুড়ে দলীয় সমর্থকদের কাছে ‘গদ্দার’ বলে ধিকৃত হন।

তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরা রাজ্য আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক জানিয়েছেন, সুদীপবাবু দীর্ঘদিন আমার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তাঁকে টিএমসিতে আসতে আহ্বান জানাচ্ছি। সুবলবাবু আগেই বিজেপি ছেড়ে টিএমসিতে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি বিধায়ক হিসেবে পদত্যাগ করে টিএমসিতে এসেছেন আশিস সাহা।

বিজেপি এবং বিধায়ক পদ ত্যাগ করে সুদীপ রায়বর্মণ বলেছেন, ত্রিপুরার সরকার একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে। জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। কত আর রাখ ঢাক করব, তাই দলত্যাগ ও পদত্যাগ করেছি। মানুষকে সাথে নিয়েই পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচি চলবে। তিনি জানান, অতি দ্রুত আরও বিধায়ক দলত্যাগ করতে চলেছেন। সম্ভবত রাজ্যে বিজেপি জোটের সংখ্যালঘু সরকার চলবে আগামী বিধানসভা ভোট পর্যন্ত।

সূত্রের খবর ঘনিষ্ঠ মহলে সুদীপ রায়বর্মণ ইঙ্গিত দিয়েছেন পুরনো ঘরে ফিরতে পারেন। এখানেই প্রশ্ন সুদীপবাবু কি কংগ্রেসে ফিরছেন? সূত্রের খবর, তাঁকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া রাহল গান্ধী। প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে সেরকমই বার্তা চলে এসেছে।

তবে গত বিধানসভা ও সাম্প্রতিক পুরভোটে কংগ্রেসের হাঁড়ির হাল। সেক্ষেত্রে সুদীপ রায় বর্মণ কি তৃণমূল কংগ্রেসকে বেছে নেবেন? এমনও প্রশ্ন উঠছে কারণ, কংগ্রেস ছেড়ে প্রথমে টিএমসিতে তৎকালীন বিরোধী বিধায়কদের নিয়ে গেছিলেন তিনি। রাজ্যে বিগত বামফ্রন্ট জমানায় সুদীপবাবু ও অনুগামীদের পরপর দল বদলে ছড়িয়েছিল চাঞ্চল্য। টিএমসি থেকে তারা সবাই বিজেপিতে যোগ দেন।

গত বিধানসভা ভোটে রাজ্যে বামফ্রন্টের টানা ২৫ বছরের শাসন শেষ হয়। বিজেপি জোট সরকার গড়ে। এই রাজনৈতিক পরিবর্তনের অন্যতম কান্ডারি ছিলেন সুদীপবাবু। তবে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সঙ্গে সুদীপ রায়বর্মণের তিক্ততা চরমে ওঠে। সেই রেশ ঘরে তিনিও আরও এক বিধায়ক মঙ্গলবার বিজেপি ও বিধায়ক পদ একসঙ্গে ত্যাগ করেন।

ফেসবুকে সুদীপ রায়বর্মণ লিখেছেন, “আমি সুদীপ রায় বর্মন এবং মাননীয় আশিস কুমার সাহা আজ ত্রিপুরা বিধানসভার সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। আমাদের পদত্যাগ পত্র আমরা বিধানসভার অধ্যক্ষ সম্মানীয় রতন চক্রবর্তীর হাতে তুলে দিয়েছি।”

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব আগেই জানিয়েছেন, সুদীপবাবুর পদত্যাগ বা দলত্যাগে বিজেপির কিছু যাবে আসবে না। রাজ্যবাসী উন্নয়নের রাজনীতিতে সামিল হয়েছেন।

এদিকে উন্নয়নের প্রশ্নে সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্ট বলছে, উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরার বেকারত্ব হার সর্বাধিক। এতে বিজেপির অস্বস্তি আরও বেড়েছে। প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএমের দাবি, বিজেপির আমলে ত্রিপুরা জুড়ে হাহাকার চলছে। ভোট লুঠ করে নিজেদের জমি হারানোর বার্তা দিয়েছে বিজেপি।

বিজেপি বিধায়ক থাকাকালীন সুদীপ রায় বর্মণ বারবার ভোট সন্ত্রাস ও প্রশাসনিক দূর্বলতা নিয়ে সরকারের প্রবল সমালোচনা করেন। তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। শরিক আইপিএফটির সঙ্গে চরম সংঘাত চলছে বিজেপির।