যে জনতা একজোট হয়ে ভোট রিগিং রুখে নজির গড়েছিলেন। তারাই এখন পালিয়ে বাঁচছেন। নির্বাচন ও গণনা পরবর্তী সময়ে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় (Tripura) ভয়াবহ সন্ত্রাস চলেছে। কেউ সুরক্ষিত নন। পরিস্থিতি এমনই যে সশস্ত্র টিএসআর বাহিনীর জওয়ানও আক্রান্ত। তাঁর স্ত্রীর উপরেই ঝাঁপিয়ে পড়ে কয়েকজন। অভিযোগ বিজেপি আশ্রিত বাইক বাহিনী এই কাজ করেছে।
একের পর এক বিধানসভা জুড়ে ভাঙা ঘর, আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যাচ্ছে। দিনে পোড়া ধোঁয়া আর রাত নামলেই জ্বলতে থাকা বাড়ি দেখে বহু জন জঙ্গলে নিয়েছেন আশ্রয়। দূর থেকে সবকিছু পুড়ে যাওয়া দেখে জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে কান্না।
আগামী ৮ মার্চ ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের দ্বিতীয় দফার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। আগরতলার আস্তাবল ময়দানে এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থাকবেন বলে জানান বিদায়ী সরকারের কেয়ারটেকার মু়খ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা। বিজেপি সূত্রে খবর, মানিক সাহাকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। তবে মোদী আসার আগে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে মরিয়া প্রশাসন।
রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে কংগ্রেস, সিপি়আইএম, এমনকি শাসক বিজেপির একাধিক অফিসেও আগুন ধরানো হচ্ছে। শাসক দলের তরফে উপজাতি দল তিপ্রা মথার বিরুদ্ধে লাগাতার লাগাতার অভিযোগ উঠছে। এদিকে হামলার বিষয়ে মথার প্রধান রাজা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ নীরব। তিনি আগেই সরকারে আসা দল বিজেপিকে বার্তা দিয়েছেন, উপজাতি ভূমিপূত্রদের সাংবিধানিক অধিকার না দিলে এ রাজ্যে শাসক দলকে ভবিষ্যতে কষ্ট করে শাসন চালাতে হবে। সূত্রের খবর, বিজেপির তরফে তিপ্রা মথার সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা চলছে। তাদের সরকারে শরিক করার প্রস্তাব পাঠানো হয়। তবে রাজার দাবি মতো গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড মানা হবে না। এমন জানিয়েছে বিজেপি।
ভোটের ফল ঘোষণার দিন থেকেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে রক্তাক্ত ত্রিপুরা। বারে বারে প্রশ্ন এত রক্ত কেন? বিরোধী দল হিসেবে উপজাতি দল তিপ্রা মথা উঠে আসার পর থেকে উপজাতি এলাকা সংলগ্ন বিধানসভাগুলিতে ভয়াবহ হামলা শুরু হয়। বহু বিজেপি সমর্থক ঘর ছাড়া।
অন্যদিকে সিপিআইএমের অভিযোগ, শাসক দল বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতিদের হামলায় একের পর এক এলাকা সন্ত্রস্ত। বাম সমর্থকদের উপর হামলা চলছে। রাজ্য সিপিআইএম সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন, প্রশাসন বলে কিছুই নেই ত্রিপুরা রাজ্যে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহা বলেন পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে কংগ্রেস সমর্থকরা এবার নিজেদের বাঁচাতে প্রত্যাঘাত করবেন।