লাল চন্দন পাচার করতে গিয়ে পুলিশের জালে ৯ ‘পুষ্পা’

tirupati-red-sanders-smuggling-operation-9-arrested

তিরুপতি: সিনেমার পর্দায় দেখা গিয়েছিল এক সাহসী পাচারচক্রের কাহিনি, যেখানে লাল চন্দন কাঠের অবৈধ বাণিজ্য নিয়ে রক্তচক্ষু দেখিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু বাস্তবেও সেই গল্প যেন ফিরল! বুধবার ভোরে তিরুপতি জেলার শ্রীকালহস্তি বনাঞ্চলে ‘রেড স্যান্ডার্স অ্যান্টি-স্মাগলিং টাস্ক ফোর্স’ (RSASTF) এক অভিযানে ২০টি লাল চন্দন কাঠ বাজেয়াপ্ত করে এবং নয়জন সন্দেহভাজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করে।

Advertisements

এই অভিযান পরিচালিত হয় টাস্ক ফোর্স প্রধান এল সুব্বারায়ডুর নির্দেশে। গোটা অপারেশনটির নেতৃত্বে ছিলেন আরআই সাই গিরিধর এবং এআরএসআই এন ঈশ্বরা রেড্ডি। তাঁদের দল ভোরবেলা শ্রীকালহস্তি বনের গভীরে ‘রাগিগুঞ্জা’ বিভাগের তীর্থলাপালাম কোণা অঞ্চলে ব্যাপক তল্লাশি চালায়।

   

হিন্দু হওয়ায় গুরু নানক জয়ন্তীতে পাকিস্তানে প্রবেশে বাধা ১৪ যাত্রীকে!

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকায় একটি সন্দেহজনক দলকে জড়ো হতে দেখা যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা পিছু ধাওয়া করে নয়জনকে ধরতে সক্ষম হন।

অভিযানের পর তাঁদের কাছ থেকে ২০টি অবৈধভাবে কাটা লাল চন্দন কাঠ উদ্ধার করা হয়। এই কাঠগুলির বাজারমূল্য কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, এই পাচারচক্র শুধুমাত্র স্থানীয় নয় এটি একটি আন্তঃরাজ্য চক্র। গ্রেফতারদের মধ্যে দু’জন স্থানীয় তিরুপতি জেলার বাসিন্দা, বাকি সাতজন এসেছে প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ু থেকে।

Advertisements

তদন্তকারীদের অনুমান, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্ত পেরিয়ে পাচারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জব্দ করা কাঠ এবং আটক হওয়া পাচারকারীদের তিরুপতি টাস্ক ফোর্স থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে একটি মামলা রুজু করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। পুলিশের দাবি, এই জিজ্ঞাসাবাদেই উঠে আসবে আসল মাথাদের নাম, যারা ছায়ার আড়াল থেকে এই পুরো চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে।

লাল চন্দন বা রেড স্যান্ডার্স কাঠ বিশ্ববাজারে অত্যন্ত মূল্যবান। এটি মূলত অন্ধ্রপ্রদেশের শেশাচলম পাহাড়ে পাওয়া যায়, এবং এর অনন্য রং ও ঘ্রাণের কারণে আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের নজর এটির উপর সবসময়ই থাকে। ভারতের বাইরে বিশেষ করে চীন ও জাপানে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

তবে বারবার অভিযান চালিয়েও পাচারচক্র পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, “এই বনাঞ্চলে এখনও সক্রিয় একাধিক চক্র রয়েছে। তবে এই সফল অভিযানের পর পাচারকারীদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি হয়েছে।”

অন্যদিকে টাস্ক ফোর্স প্রধান সুব্বারায়ডু জানিয়েছেন, “আমরা শেশাচলম বনে অবৈধ লাল চন্দন কাটার বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীল নীতি নিচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত শেষ পাচারকারী ধরা না পড়বে, অভিযান চলবে।” এই অভিযান প্রমাণ করল যে, সিনেমার গল্পের বাইরেও লাল চন্দনের লালসা এখনো বাস্তবের মাটিতে তীব্রভাবে উপস্থিত আর সেই লড়াইয়ে প্রশাসনও লড়ছে দৃঢ় হাতে।