ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ধর্মীয় স্থান তিরুপতি মন্দির (Tirupati Temple)।এখানকার ভক্তির পরিমাণ এবং দানে প্রতি বছর ব্যাপক পরিসরে বৃদ্ধি দেখা যায়। তবে ২০২৪ সালে তিরুপতি মন্দিরে (Tirupati Temple) প্রণামীর পরিমাণ কিছুটা কমেছে, যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অস্বাভাবিক নয়। ২০২৩ সালে যেখানে হুণ্ডি বা প্রণামী বাক্সে প্রায় ১৩৯১ কোটি টাকা জমা হয়েছিল, ২০২৪ সালে সেই অঙ্ক কমে দাঁড়িয়েছে ১৩৬৫ কোটি টাকায়। এর মধ্যে নগদ টাকা, সোনা, রূপো সহ বিভিন্ন দান সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রণামী হুণ্ডি সিস্টেমের মাধ্যমে ভক্তরা তিরুপতি মন্দিরে দান করেন, যা পরবর্তীতে মন্দির (Tirupati Temple) কর্তৃপক্ষ দ্বারা গণনা করা হয়। এটি একটি অত্যন্ত নিয়মিত প্রক্রিয়া যেখানে নগদ টাকার পাশাপাশি সোনা, রুপো, বিদেশি মুদ্রাও গ্রহণ করা হয়। এই দান সামগ্রী তিরুমালার (Tirupati Temple) নতুন পরাকামণি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে গণনা করা হয় এবং সোনা ও রূপো আলাদা করে সুরক্ষিত লকারে রাখা হয়। প্রতি মাসে এই সোনা, রূপো মন্দিরের কোষাগারে জমা করা হয়।
২০২৪ সালে তিরুপতি মন্দিরে(Tirupati Temple) দর্শন করতে আসেন প্রায় ২ কোটি ৫৫ লক্ষ ভক্ত। এর মধ্যে প্রায় ৯৯ লক্ষ ভক্ত তাদের চুল দান করেছেন, যা মন্দিরের অন্যতম একটি ধর্মীয় রীতি। এছাড়া, ১২ কোটি ১৪ লক্ষ লাড্ডু বিক্রি হয়েছে, এবং ৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ অন্ন প্রসাদ গ্রহণ করেছেন। এই পরিসংখ্যান থেকে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়, তিরুপতি মন্দিরে(Tirupati Temple) ভক্তের সংখ্যা ও তাদের ধর্মীয় কার্যকলাপের পরিমাণ এখনও ব্যাপক।
মন্দিরের (Tirupati Temple) অর্থনৈতিক অবস্থা এবং কার্যক্রমের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে টিটিডি (তীরুমালা তিরুপতি দেবাস্তানাম) মন্দিরের বাজেট ছিল ৫১৪১.৭৪ কোটি টাকা। এই বাজেটের একটি বড় অংশ বরাদ্দ করা হয়েছে কর্মীদের বেতন এবং ভাতার জন্য, যা ছিল ১,৭৭৩ কোটি টাকা। এছাড়া, মন্দিরের পরিকাঠামো উন্নয়ন, হিন্দু ধর্ম প্রচার, এবং বিভিন্ন প্রকল্পের জন্যও ব্যাপক অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তিরুপতি মন্দিরের (Tirupati Temple) দান সংগ্রহের অর্থে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগেও সহায়তা প্রদান করা হয়। ৫০ কোটি টাকা মন্দিরের (Tirupati Temple) তরফ থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের তহবিলে প্রদান করা হয়েছে, যা রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ব্যবহৃত হবে।
মন্দিরের(Tirupati Temple) সোনা সংক্রান্ত তথ্যও আশ্চর্যজনক। বর্তমানে টিটিডি ব্যাঙ্কে প্রায় ১১ হাজার ৩২৯ কেজি সোনা জমা রেখেছে। শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে মন্দির কর্তৃপক্ষ ১,০৩১ কেজি সোনা জমা করেছে। গত তিন বছরে মোট ৪ হাজার কেজি সোনা জমা করা হয়েছে, যা মন্দিরের (Tirupati Temple) অর্থনৈতিক শক্তির প্রমাণ।
তবে, তিরুপতির (Tirupati Temple) প্রণামী হ্রাস পাওয়ার কারণের মধ্যে একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে ভক্তদের দানের মানসিকতা বা অর্থনৈতিক চাপ, যা সামগ্রিক দানের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তাতে কোনোভাবে মন্দিরের ধর্মীয় কাজের পরিমাণ বা দর্শন প্রক্রিয়া কোনো রকমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বরং, মন্দিরের (Tirupati Temple) সেবা এবং তীর্থযাত্রা আরও অনেক মানুষের জীবনে এক অমূল্য আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা হিসেবে বেঁচে থাকবে।
মন্দির(Tirupati Temple) কর্তৃপক্ষ এখনও প্রতি বছর লাখ লাখ ভক্তের প্রতি নিষ্ঠার সাথে সেবা প্রদান করে চলেছে, যা তিরুপতির মন্দিরের উজ্জ্বল ইতিহাসকে আরও অনেক বছর ধরে সংরক্ষিত রাখবে।