Prashant Kishor: ‘ইন্ডি’ জোটের পতনের কারণ কী? ভোটের পাঁচদফার পরই ব্যাখ্যা প্রশান্ত কিশোরের

পাঁচদফা ভোট শেষ। শাহী দাবি, ইতিমধ্যেই ম্যাজিক ফিগারের বেশি আসন পদ্মের দখলে চলে এসেছে। পাল্টা মমতার বলছেন, ‘এবার বিজেপির পগাড়পার’। এসবের মধ্যেই প্রসান্ত কিশোরের ভবিষ্যদ্বাণী…

what Prashant Kishor predicted hours before Lok Sabha election exit poll 2024, ভোট শেষের কয়েকঘন্টা আগেই অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ফের ভবিষ্যদ্বাণী করলেন প্রশান্ত কিশোর

পাঁচদফা ভোট শেষ। শাহী দাবি, ইতিমধ্যেই ম্যাজিক ফিগারের বেশি আসন পদ্মের দখলে চলে এসেছে। পাল্টা মমতার বলছেন, ‘এবার বিজেপির পগাড়পার’। এসবের মধ্যেই প্রসান্ত কিশোরের ভবিষ্যদ্বাণী বিরোধী ‘ইন্ডি’ জোটের ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন ডুবতে বসেছে। এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের যুক্তির স্বপক্ষে তিনটি কারণ বিশ্লেষণ করেছেন কিশোর।

প্রশান্তের মতে প্রথমত, রামমন্দিরের উদ্বোধনের ঘোষণার পরই মনবল হারিয়ে ফেলেছিল ‘ইন্ডি’ জোট। তাীঁর ব্যাখ্যা, ‘রামমন্দিরের সূচনার খবর ঘোষণা হতেই বিরোধীরা কার্যত তাদের হাতের অস্ত্র গুটিয়ে ফেলে। । আবার তারা জেগে উঠল ফেব্রুয়ারিতে, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। বিজেপি তার মধ্যে হারানো জমি পুনরুদ্ধার করে ফেলে।’

   

দ্বিতীয়ত, মোদীর পাল্টা প্রধানমন্ত্রী মুখ তুলে ধরতেও বারে বারে ব্যর্থ হয়েছে ‘ইন্ডি’ জোট। ফলে বিজেপির প্রচারে বলতে সুবিধা হয়েছে যে, বিরোধী জোটের কাছে মোদীর মানের কোনও রাজনীতিক নেই যাঁকে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসানো যায়। তবে ভোটের মাঝামাঝি থেকে তৃণমূল নেত্রীর অবস্য সাফ জানিয়েছেন যে প্রয়োজনে তাঁর দল বিরোধী জোটকে বাইরে তেকে সমর্থন করে সরকার গড়তে সহায়তা করবে।

Abijit Ganguly: বড় ফাঁপড়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রচারে ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি নির্বাচন কমিশনের

তৃতীয়ত, সূচনালগ্নে ‘ইন্ডি’ জোট ঘোষণা করেছিল যে, তাদের উদ্দেশ্য ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন সহ প্রতিটি নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করা, কিন্তু গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে বিরোধী জোট একত্রে লড়াই করতে পারেনি। ছিল না কোনও সাধারণ নূন্যতম কর্মসূচিও। মধ্যপ্রদেশের ৬টি আসন নিয়ে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসে পড়েছিল। এরপরই অখিলেশ ও মমতা উভয়ই হাত শিবিরের সমালোচনায় সরব হন। ফলে বিরোধী জোটের বিশ্বাসযোগ্যতা তলানীতে গিয়ে ঠেকে।

এছাড়াও প্রশান্ত কিশোরের মতে, ‘ইন্ডি’ জোটের শরিক কংগ্রেস, তৃণমূল, বামেরা রাজ্যওয়াড়ি আসন ভাগাভাগির সময় পরস্পর বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। কেরলে বাম-কংগ্রেস পৃথকভাবে লড়াই করেছে এই লোকসভা ভোট। বাংলাতেও কংগ্রেস-বাম আসন সমঝোতা করলেও তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পৃথকভাবে।

Suvendu Adhikari: শুভেন্দুর কনভয় লক্ষ্য করে ‘চোর-চোর’ স্লোগান, কী করলেন বিরোধী দলনেতা?

এপ্রিলে কিশোর বলেছিলেন যে, বিজেপি দক্ষিণ ও পূর্ব ভারতে তার আসন এবং ভোটের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারবে। তিনি আরও বলেছিলেন যে, বিজেপি এবং মোদী অজেয় নয়, তবে বিরোধীরা জোট পদ্ম বাহিনীকে পরাজিত করার তিনটি স্বতন্ত্র এবং বাস্তবসম্মত সুযোগ হারিয়েছে।

যে তিনটি সম্ভাবনার কথা প্রশান্ত কিশোর উল্লেখ করেছিলেন তা হল, ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে বিজেপির কিছুটা উদাসীন মানসিকতা। তখন রাজ্য নির্বাচনগুলোতে বেশিরভাগই হেরেছে গেরুয়া দলটি। তখন বিরোধী দলগুলো একজোট হতে পারেনি। ।

দ্বিতীয় সুযোগটি ছিল নোট বাতিলের পর, যখন বিজেপি ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে এক দশক পর বড় জয়লাভ করে। ১৯৯৫ সাল থেকে একটানা গুজরাট শাসন করছে বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটে সেখানে প্রতিষ্ঠান বিরোদী হাওয়া ছিল, কিন্তু তাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় কংগ্রেস।

অষ্টাদশ লোকসভা বোটে কেমন ফল করবে বিজেপি? আসন সংখ্যা ৪০০ পেরোবে? প্রশান্ত কিশোর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ২০১৯ সালে বিজেপি ৩০৩টি আসনে জিতেছিল। এবারও তাদের প্রাপ্ত আসন তার আশপাশেই থাকবে। এমনকী, ৩০৩ ছাড়িয়েও যেতে পারে।’ পিকের ব্য়াখ্যা, ‘সাধারণত প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া থাকলে সরকার বদল হয়। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে এমন কথা দেশের কোনও প্রান্ত থেকেই শুনিনি।’