পুলিশের অভিযানে বড় সাফল্য, তিন শীর্ষ মাওবাদী নেতার আত্মসমর্পণ

হায়দরাবাদ: তেলেঙ্গানা রাজ্যে মাওবাদী আন্দোলনের ইতিহাসে এক নতুন মোড়। শুক্রবার তিনজন শীর্ষস্থানীয় সিপিআই (মাওবাদী) (Maoist) নেতা অস্ত্র ত্যাগ করে মূল স্রোতে যোগ দিলেন। রাজ্যের পুলিশ…

Chhattisgarh Maoists Encounter

হায়দরাবাদ: তেলেঙ্গানা রাজ্যে মাওবাদী আন্দোলনের ইতিহাসে এক নতুন মোড়। শুক্রবার তিনজন শীর্ষস্থানীয় সিপিআই (মাওবাদী) (Maoist) নেতা অস্ত্র ত্যাগ করে মূল স্রোতে যোগ দিলেন। রাজ্যের পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, আত্মসমর্পণটি হয় তেলেঙ্গানার ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (ডিজিপি)-এর উপস্থিতিতে।

Advertisements

আত্মসমর্পণকারী তিন নেতা হলেন— কুঙ্কাটি ভেঙ্কটাইয়া (৫২), মোগিলিচারলা ভেঙ্কটরাজু (৪৫) এবং থোদেম গঙ্গা (৪২)। কুঙ্কাটি ভেঙ্কটাইয়া, যিনি রমেশ, রঘু ও বিকাশ নামে পরিচিত ছিলেন, ছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য এবং দক্ষিণ বস্তার ডিভিসি-র সেক্রেটারি/ইন-চার্জ। তিনি টানা ৩৬ বছর ধরে আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

মোগিলিচারলা ভেঙ্কটরাজু ওরফে রাজু, এর্রা রাজু, চাঁদু, চন্দর এবং পুন্নম চন্দর সাটলা বলারাজু ছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য এবং ৩৫ বছর আত্মগোপনে ছিলেন। থোদেম গঙ্গা, যিনি গঙ্গাভ্বা বা সনি নামেও পরিচিত, তিনিও রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন এবং ২১ বছর ধরে আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিলেন।

তেলেঙ্গানা সরকারের পুনর্বাসন নীতির আওতায় প্রত্যেককে ২০ লক্ষ টাকা করে ডিমান্ড ড্রাফটের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তাঁদেরকে সরকারের সবধরনের সুবিধা দেওয়া হবে যাতে তাঁরা সমাজে ফিরে গিয়ে সম্মানের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন।

তেলেঙ্গানা পুলিশের বক্তব্য, “এই আত্মসমর্পণ রাজ্যে শান্তি ও উন্নয়নের পথে এক বড় পদক্ষেপ। আমরা চাই, যারা এখনও জঙ্গলে রয়েছে, তারা সমাজে ফিরে আসুক, পরিবারে ফিরুক।”

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ইতিমধ্যেই ৪১২ জন মাওবাদী নেতা ও কর্মী আত্মসমর্পণ করেছেন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন একজন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, চারজন রাজ্য কমিটির সদস্য, দুজন ডিভিশনাল কমিটি সেক্রেটারি, আটজন ডিভিশনাল কমিটি সদস্য এবং ৩৫ জন এরিয়া কমিটি সদস্য।

বর্তমানে তেলেঙ্গানায় এখনও সক্রিয় ৭২ জন আন্ডারগ্রাউন্ড মাওবাদী রয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, সিপিআই (মাওবাদী)-র ১২ জন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের মধ্যে আটজনই তেলেঙ্গানার বাসিন্দা। ডিজিপি-র বার্তা, “রাজ্যের উন্নয়নে সকলে অংশ নিন, সহিংসতার পথ ছেড়ে শান্তির পথে আসুন। সরকার ও পুলিশ আপনাদের পাশে আছে।”

এই আত্মসমর্পণকে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন মাওবাদী সংগঠনের ভিতরে আদর্শগত ভাঙনের ফল হিসেবে। ক্রমে তেলেঙ্গানায় মাওবাদী আন্দোলনের প্রভাব হ্রাস পাচ্ছে, আর পুলিশের প্রচেষ্টায় রাজ্য এগিয়ে চলেছে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে।