নয়াদিল্লি: ৩৩ বছর মার্কিন মুলুকে বসবাস! আচমকা গ্রেফতারির পর বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন আমেরিকা (America) থেকে বহিষ্কৃত হয়ে দেশে ফেরা বৃদ্ধা। ৭৩ বছর বয়সী পাঞ্জাবী বৃদ্ধা হারজিৎ কৌরের (Harjit Kaur) অভিযোগ, “দেওয়া হয়নি ওষুধ! আমি নিরামিষাশী হওয়া সত্ত্বেও আমাকে খেতে দিয়েছিল গোমাংস”।
বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ৮ সেপ্টেম্বর ফ্রেস্নো থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর আমাকে বাস্কারফিল্ডে স্থানান্তরিত করা হয়। “সেখানে ৮-১০ দিন রেখে ওরা আমাকে অ্যারিজোনায় পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে ১৯ ঘন্টার বিমানে আমি দিল্লি পৌঁছই”। দীর্ঘ এই যাত্রা আর টানাপড়েনের মাঝে শুধুমাত্র চিপস আর বিস্কুট খেয়েই ছিলেন বলে জানান হারজিৎ। আমেরিকা থেকে ‘ডিপোর্ট’ (Deport) হয়ে লম্বা ধকলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন পাঞ্জাবি মহিলা।
তিনি বলেন, “এরপর যা করণীয় আমার সন্তানেরা করবে। আমার আর কোনকিছু করার ক্ষমতা নেই”। কৌর (Harjit Kaur) জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে আরও ১৩২ জনকে গ্রেফতার করে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করা হয়। যার মধ্যে ১৫ জন কলম্বিয়ান নাগরিকও ছিলেন। তাকে বিমানে হাতকড়া পরানো হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে কৌর বলেন, “না। বিমানে দুজন ভালো অফিসার ছিলেন যারা আমাকে হাতকড়া পড়াননি, যদিও অন্য নির্বাসিতদের হাতকড়া পরানো হয়েছিল”। আমেরিকায় কি ফিরতে চান? জিজ্ঞেস করা হলে, বৃদ্ধা বলেন, “অবশ্যই। আমার পুরো পরিবার আমেরিকায় থাকে। আমাকে ফিরতেই হবে”।
ট্রাম্পের ‘অভিবাসী হঠাও’ নীতির কোপের শিকার হারজিৎ
মূলত পাঞ্জাবের বাসিন্দা হারজিৎ কৌর (Harjit Kaur) যখন ৩৩ বছর আগে তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তখন তিনি এই দিনটি কল্পনাও করতে পারেননি। ক্যালিফোর্নিয়ায় একজন ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে জীবনের ৩৩ টি বছর পার করেছিলেন তিনি। প্রবাসে নিজের সংসার সাজিয়ে তুলেছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই তিনি যে শুধু কর্মরত ছিলেন তাই নয়, বরং নিয়মিত কর দিতেন এবং আইন অনুসারে প্রতি ছয় মাস অন্তর কর্তৃপক্ষের কাছে তার উপস্থিতি জানিয়ে আসতেন। সম্প্রতি ট্রাম্পের (Donald Trump) ‘অবৈধ অভিবাসী’-দের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রকোপে ইতিমধ্যেই প্রায় ২৪০০ জন ভারতীয়কে বহিষ্কার করেছে আমেরিকা। তাঁদের মধ্যে বন্দিদের পোশাকে খাবার, ওষুধ না খেয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হন ৭৩ বছরের হারজিৎ কৌর।