MLA Mukul: দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে স্পিকারকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

নিউজ ডেস্ক: মুকুল রায় আদৌ বিধায়ক পদে থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্দেশ দিল দেশের সর্বোচ্চ…

mukul-roy

নিউজ ডেস্ক: মুকুল রায় আদৌ বিধায়ক পদে থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্দেশ দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। উল্লেখ্য, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

কিন্তু বিজেপি বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তবে বিজেপি ছাড়লেও তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি। বরং তৃণমূল সরকার তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে। মুকুল রায়ের এই নিয়োগের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছিল বিজেপি।

সুপ্রিম কোর্টে এদিন এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মুকুল রায়ের বিধায়ক পদের বৈধতা নিয়ে যত শীঘ্র সম্ভব রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগামী বছরের ২২ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির ঘোষণা করেছে আদালত।

উল্লেখ্য, বিজেপির টিকিটে নির্বাচিত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই তৃণমূল ভবনে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল রায়। তৃণমূলে যোগ দিলেও মুকুলকে বিজেপি সদস্য হিসাবে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত নেয় মমতা সরকার। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় বিজেপি। কারণ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির পদটি বিরোধীদের প্রাপ্য। গেরুয়া দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিজেপি বিধায়ক হিসেবে মুকুল রায়কে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করাটা ঠিক নয়।

কারণ তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাই পিএসসির চেয়ারম্যান পদে তাঁর নিয়োগ অবৈধ বলে কলকাতা হাইকোর্টে একটি অভিযোগ দায়ের করেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর সঙ্গেই কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানান। সেই মামলার প্রেক্ষিতে মুকুলের বিষয়ে রাজ্য বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল হাইকোর্ট। কিন্তু বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান। তিনি বলেন, বিধানসভার কোনও বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সেই মামলায় এদিন নতুন এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর বলা যায়, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ আদালতের কাছে বড় ধাক্কা খেলেন।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগেই বলেছেন, মুকুল রায়ের বিষয়টি নিয়ে যতক্ষণ না চূড়ান্ত ফয়সালা হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা পিছু হঠবেন না। প্রয়োজনে তাঁরা আইনের সাহায্য নেবেন। কারণ এর আগে দিপালী বিশ্বাস যখন দলত্যাগ করেছিলেন সে সময়ে দলবিরোধী আইন কার্যকর করার দাবি করেছিল বাম পরিষদীয় দল। কিন্তু ২৩ টি শুনানির পরেও দলবিরোধী আইন কার্যকর করেনি তৃণমূল সরকার। এরই মধ্যে নতুন নির্বাচন চলে আসে। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁরা বামেদের মতো হাতগুটিয়ে বসে থাকবেন না। তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন। এর আগেও শুভেন্দু মমতাকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, তৃণমূল সরকার নিজেদের স্বার্থে দলত্যাগ বিরোধী আইন বাংলায় কার্যকর করেনি। বিরোধী নেতা হিসেবে বলছি, দলবিরোধী আইন কিভাবে কার্যকর করতে হয় সেটা করে দেখাবো।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জানার পর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আদালতের নির্দেশ মেনে তিনি যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন। বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে তাঁর কোন অনীহা নেই। বরং তিনি চান, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিষয়টির সমাধান করতে।