ন্যাশনাল হেরাল্ড কেস একবার আবার সংবাদ শিরোনামে এসেছে, কারণ দিল্লি পুলিশ সম্প্রতি কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নতুন FIR দায়ের করেছে, যা এফআইআর ইস্যু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। ED দাবি করেছে যে, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের লাভের জন্য কাজ করেছে।
এই মামলার মূল অভিযোগ হল যে, “ইয়ং ইন্ডিয়ান” (YI) নামে একটি কোম্পানি, যেখানে গান্ধী পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকেই ৩৮ শতাংশ শেয়ারধারী, তারা এসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (AJL), যেটি ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার প্রকাশক, তার দেনা মাত্র ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে অধিগ্রহণ করেছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে ইয়ং ইন্ডিয়ান AJL-এর দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা রিয়েল এস্টেট সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ লাভ করেছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ২,০০০ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই মামলার গোড়া ২০০৮ সাল থেকে, যখন ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায় এবং AJL প্রায় ৯০ কোটি টাকার দেনা রেখে যায়। গত ১৭ বছরে এটি ভারতের অন্যতম রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর আইনি লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। এজেএল তার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং কোম্পানির দেনা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৯০ কোটি টাকায়। কংগ্রেস পার্টি এই দেনার কিছু অংশ পরিশোধে সহায়তা করতে সুদবিহীন ঋণ দেয় বলে জানা যায়।
ইয়ং ইন্ডিয়ান (YI) নামক একটি নতুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়, যার মালিকানা শেয়ারধারী হিসেবে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, এবং কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারা—মোতিলাল ভোরা ও অস্কার ফার্নান্দেস—রয়েছিলেন। কংগ্রেস তার ৯০ কোটি টাকার ঋণের পুনরুদ্ধারের অধিকার ইয়ং ইন্ডিয়ানের কাছে হস্তান্তর করে মাত্র ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে। এর ফলে ইয়ং ইন্ডিয়ান AJL-এর অধিকাংশ শেয়ার অধিকার করে নেয়। এই মামলার আইনি লড়াই শুধু আর্থিক দিক থেকেই নয়, বরং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কংগ্রেস এবং গান্ধী পরিবারের বিরোধীরা দাবি করে আসছেন যে, সোনিয়া এবং রাহুল গান্ধী এই লেনদেনের মাধ্যমে নিজেদের আখের গোছানোর জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এর ফলে মামলাটি রাজনৈতিক এক সংকটে পরিণত হয়েছে এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বিষয়টি পৌঁছেছে।
ন্যাশনাল হেরাল্ড কেসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এটি দেশের অন্যতম পুরনো পত্রিকা, যার পেছনে দীর্ঘ রাজনৈতিক ঐতিহ্য রয়েছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) এই মামলার তদন্তে কিছু নথিপত্র ও আর্থিক লেনদেনের অনিয়ম দেখতে পেয়েছে, যার ভিত্তিতে নতুন FIR দায়ের করা হয়। ED দাবি করেছে, গান্ধী পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন এবং এই লেনদেনের মাধ্যমে নিজেদের ব্যক্তিগত লাভের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তদন্তকারীরা আরো দাবি করেছেন যে, ইয়ং ইন্ডিয়ান AJL-এর বিপুল পরিমাণ রিয়েল এস্টেট সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ লাভ করেছে, যার মূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা হতে পারে। এসব সম্পত্তি দেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে, এবং এর মধ্যে রয়েছে কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা।
