মহাভারতের উদাহরণ দিয়ে তেজস্বীর পশে থাকার বার্তা পরিবারচ্যুত তেজপ্রতাপের

রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার এবং পিতা লালু প্রসাদ যাদবের দ্বারা ত্যাজ্য হওয়ার এক সপ্তাহ পর (tejpratap), তেজ প্রতাপ যাদব রবিবার (১ জুন,…

tejpratap supports tejaswai

রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার এবং পিতা লালু প্রসাদ যাদবের দ্বারা ত্যাজ্য হওয়ার এক সপ্তাহ পর (tejpratap), তেজ প্রতাপ যাদব রবিবার (১ জুন, ২০২৫) বলেছেন যে, তাঁর আশীর্বাদ সবসময় তাঁর ভাই তেজস্বী যাদবের উপর থাকবে এবং কেউ তাঁদের আলাদা করতে পারবে না।

মহাভারতের চরিত্র কৃষ্ণ ও অর্জুনের উল্লেখ করে তেজ প্রতাপ এক্স-এ লিখেছেন, “যারা আমাকে আমার অর্জুন থেকে আলাদা করার স্বপ্ন দেখে, তোমাদের ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না। তোমরা কৃষ্ণের সেনা নিতে পারো, কিন্তু কৃষ্ণকে নয়। আমি শীঘ্রই প্রতিটি ষড়যন্ত্র প্রকাশ করব।”

   

তিনি (tejpratap)আরও লিখেছেন, “ভাই, শুধু ভরসা রাখো, আমি প্রতিটি পরিস্থিতিতে তোমার সঙ্গে আছি। এখন আমি দূরে আছি, কিন্তু আমার আশীরবাদ সবসময় তোমার সঙ্গে ছিল এবং থাকবে। মা-বাবার যত্ন নিও, জয়চাঁদ সর্বত্র আছে, ভিতরে এবং বাইরে।”

পারিবারিক ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

এর আগে একই দিনে, তেজ প্রতাপ (tejpratap) তাঁর বাবা-মা লালু প্রসাদ যাদব এবং রাবড়ি দেবীকে উদ্দেশ্য করে একটি আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেন। তিনি লিখেছেন, “আমার প্রিয় মা-বাবা… আমার পুরো পৃথিবী শুধু তোমরা দুজন। তোমরা এবং তোমাদের দেওয়া যেকোনো আদেশ আমার কাছে ঈশ্বরের চেয়েও বড়।

তোমরা থাকলে আমার সব আছে। আমার শুধু তোমাদের ভরসা আর ভালোবাসা চাই, আর কিছু নয়।” তিনি আরও বলেন, “বাবা, তুমি না থাকলে এই দল থাকত না, আর না থাকত জয়চাঁদের মতো লোভী মানুষ, যারা আমার সঙ্গে রাজনীতি করে। মা-বাবা, তোমরা সবসময় সুস্থ ও খুশি থাকো।” তিনি দাবি করেন, তাঁর বহিষ্কারের পিছনে দলের এবং পরিবারের মধ্যে থেকে ষড়যন্ত্র হয়েছে।

তেজ প্রতাপের বহিষ্কার (tejpratap)

গত সপ্তাহে, আরজেডি সভাপতি লালু প্রসাদ যাদব তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র তেজ প্রতাপকে (tejpratap) ছয় বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেন। লালু এক্স-এ একটি বিবৃতিতে বলেন, “আমার জ্যেষ্ঠ পুত্রের কার্যকলাপ, জনসমক্ষে আচরণ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ব্যক্তিগত জীবনে নৈতিক মূল্যবোধ উপেক্ষা করা আমাদের সামাজিক ন্যায়ের জন্য সম্মিলিত সংগ্রামকে দুর্বল করে।” তিনি আরও বলেন, (tejpratap)“এই পরিস্থিতির কারণে আমি তাকে দল এবং পরিবার থেকে বহিষ্কার করছি। এখন থেকে তিনি দল এবং পরিবারে কোনো ভূমিকা পালন করবেন না। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ভালো-মন্দ এবং গুণ-দোষ দেখতে সক্ষম।”

বহিষ্কারের কারণ হিসেবে তেজ প্রতাপের একটি বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের কথা উল্লেখ করা হয়। তিনি পোস্টে দাবি করেন যে, তিনি ১২ বছর ধরে অনুষ্কা নামে একজন মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন। পরে তিনি বলেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট “হ্যাক” হয়েছিল। এই পোস্ট নেটিজেনদের মনে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের বিতর্ককে নতুন করে তুলে আনে।

তেজ প্রতাপ (tejpratap) ২০১৮ সালে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দারোগা রায়ের নাতনি ঐশ্বর্য রায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে ঐশ্বর্য তাঁর শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান, অভিযোগ করে যে তাঁকে তেজ প্রতাপ এবং তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের মামলা এখনও পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন।

Advertisements

তেজস্বীর সমর্থন

বিহার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব তাঁর বড় ভাইয়ের বহিষ্কারকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, “আমরাও এই ধরনের বিষয় পছন্দ করি না। লালু যাদব, যিনি দলের প্রধান এবং আমার বাবা, তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমরা তার সঙ্গে আছি। রাজনীতি এবং ব্যক্তিগত জীবন আলাদা।

তেজ প্রতাপ (tejpratap) আমার বড় ভাই, তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে কী সিদ্ধান্ত নেন, তা তাঁর ব্যাপার। আমার সঙ্গে এর কী সম্পর্ক? তিনি তাঁর সিদ্ধান্তের লাভ-ক্ষতি সম্পর্কে অবগত।” তেজস্বীর এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে তিনি বাবার সিদ্ধান্তের পক্ষে থাকলেও ভাইয়ের ব্যক্তিগত জীবনের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চান না।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

এই উন্নয়ন বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এসেছে, যা এই বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আরজেডি, যা গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে, এই ঘটনার পর আরও অভ্যন্তরীণ সংকটে পড়তে পারে। তেজ প্রতাপের বহিষ্কার এবং তাঁর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে। তেজ প্রতাপ দীর্ঘদিন ধরে দলে তাঁর অবস্থান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন। ২০২৪ সালে তিনি একটি পৃথক রাজনৈতিক সংগঠন গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, যদিও তা পরে বাস্তবায়িত হয়নি।

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

তেজপ্রতাপের (tejpratap) সমাজ মাধ্যমে পোস্ট ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। #TejPratapExpelled এবং #LaluFamily হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “তেজ প্রতাপের ব্যক্তিগত জীবন দলের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লালু যাদবের সিদ্ধান্ত সঠিক।” আরেকজন লিখেছেন, “ভাইয়ের প্রতি তেজ প্রতাপের সমর্থন আবেগঘন। কিন্তু জয়চাঁদ কে, তা স্পষ্ট করা উচিত।” এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে যাদব পরিবারের অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা এবং রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে।

Sheikh Hasina: ভারতে ‘আশ্রিত’ শেখ হাসিনা, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

মহাভারতের উল্লেখ

তেজ প্রতাপের(tejpratap) মহাভারতের কৃষ্ণ ও অর্জুনের উল্লেখ তাঁর এবং তেজস্বীর মধ্যে গভীর ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ককে তুলে ধরে। তিনি নিজেকে কৃষ্ণ এবং তেজস্বীকে অর্জুন হিসেবে উপস্থাপন করে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তাঁদের সম্পর্ক অটুট থাকবে, যদিও বাহ্যিক শক্তি তাদের আলাদা করার চেষ্টা করে। এই প্রতীকী উল্লেখ তাঁর সমর্থকদের মধ্যে আবেগ জাগিয়েছে।

তেজ প্রতাপের বহিষ্কার এবং তাঁর ভাইয়ের প্রতি সমর্থন আরজেডি এবং যাদব পরিবারের অভ্যন্তরীণ গতিশীলতাকে নতুনভাবে আলোচনায় এনেছে। তেজ প্রতাপের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এবং তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের বিতর্ক দলের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিহারের আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা আরজেডির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং দলের ঐক্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।