নয়াদিল্লি: আশরাফ গনি সরকারের পতনের প্রায় চার বছর পর ভারত সফরে এলেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তালিবান সরকারের সিনিয়র নেতার ভারত সফরকে নয়া কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মুত্তাকি, যিনি সম্প্রতি রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত মস্কো ফরম্যাট বৈঠকে তালিবানের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, বৃহস্পতিবার ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে পৌঁছাবেন। এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন উপ-শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী আহমদুল্লাহ জাহিদ, দক্ষিণ এশিয়ার বিষয় দেখভালকারী বিদেশ মন্ত্রকের প্রথম রাজনৈতিক বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল নূর আহমদ নূর এবং মন্ত্রকের মুখপাত্র জিয়া আহমদ তাকাল।
প্রতিনিধি দলে কারা
ভারত সফরের মূল লক্ষ্য নিরাপত্তা, বাণিজ্য, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসা ভিসাসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করা। সফরের প্রধান দিন হবে ১০ অক্টোবর, মুত্তাকি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। এটি হবে তাঁদের মধ্যে প্রথম সরাসরি বৈঠক, যদিও তাঁরা পূর্বে ফোনে যোগাযোগ করেছেন। বৈঠকে নিরাপত্তা বিষয়, সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে।
ভারত সফর Taliban Minister India Visit
১১ অক্টোবর মুত্তাকি দারুল উলূম দেওবন্দ পরিদর্শন করবেন, যা অনেক তালিবান নেতার কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। পাকিস্তানের দারুল উলূম হাকানিয়ার বহু উচ্চপদস্থ তালিবান কমান্ডারও দেওবন্দ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। ১২ অক্টোবর তাজমহল পরিদর্শনে যাবেন৷ ১৩ অক্টোবর দিল্লিতে আফগান সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এছাড়াও তিনি ব্যবসা ও শিল্প নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সহযোগিতার প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন।
আফগান নাগরিকদের সঙ্গে মোলাকাত
মুত্তাকির সফর বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ আফগানিস্তানের পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বর্তমানে জটিল, বিশেষ করে ইসলামাবাদের অভিযোগ যে তালিবান তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানকে সমর্থন দিচ্ছে। আগের পরিকল্পিত সফর স্থগিত হয়েছিল, কারণ তিনি UN নিরাপত্তা পরিষদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার জন্য ছাড় পাননি। তবে ভারত সরকারের উদ্যোগে ৩০ সেপ্টেম্বর এই ছাড় মঞ্জুর হয়।
মুত্তাকি ১৫ অক্টোবর কাবুল ফেরার কথা রয়েছে। এই সফর ভারত–আফগান সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং কূটনৈতিক, নিরাপত্তা ও বাণিজ্যিক সংলাপের পথ সুগম করবে।