কড়া নিরাপত্তা তাজমহলে,মোতায়েন ড্রোনবিরোধী সিস্টেম

আগ্রার বিস্ময়কর স্মৃতিসৌধ তাজমহলের (taj-mahal) নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করতে একটি অত্যাধুনিক ড্রোনবিরোধী সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে বলে পুলিশ শুক্রবার জানিয়েছে। তাজমহলের (taj-mahal) নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা…

taj-mahal anti drone system

আগ্রার বিস্ময়কর স্মৃতিসৌধ তাজমহলের (taj-mahal) নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করতে একটি অত্যাধুনিক ড্রোনবিরোধী সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে বলে পুলিশ শুক্রবার জানিয়েছে। তাজমহলের (taj-mahal) নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী পুলিশ কমিশনার (তাজ সিকিউরিটি) সৈয়দ আরিব আহমেদ জানান, এই সিস্টেমটি তাজমহলের প্রাঙ্গণের মধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে এবং এটি নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশকারী যেকোনো ড্রোনকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম।

তিনি আরও বলেন, তাজমহলের (taj-mahal) চারপাশে ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কঠোর নজরদারি বজায় রাখা হবে। এই পরিসরের মধ্যে কোনো ড্রোন শনাক্ত হলে তা তৎক্ষণাৎ নিষ্ক্রিয় করা হবে। এই পদক্ষেপ বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী এই স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সম্ভাব্য হুমকি থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

   

তাজমহলের নিরাপত্তার গুরুত্ব (taj-mahal)

তাজমহল, (taj-mahal) সম্রাট শাহজাহানের নির্মিত এই স্থাপত্যশৈলী বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের কাছে একটি প্রধান আকর্ষণ। প্রতি বছর লাখ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক এই স্মৃতিসৌধ দেখতে আগ্রায় আসেন। এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের কারণে তাজমহল সবসময়ই সম্ভাব্য জঙ্গি হামলা বা অন্যান্য নিরাপত্তা ঝুঁকির টার্গেট হতে পারে। এই কারণে, স্মৃতিসৌধটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আধুনিক ও কঠোর করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ড্রোন প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এর অপব্যবহারের ঝুঁকিও বেড়েছে। ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি, অবৈধ ফটোগ্রাফি, এমনকি বিস্ফোরক পরিবহনের মতো ঘটনা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে। তাজমহলের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এই ধরনের ঝুঁকি এড়াতে ড্রোনবিরোধী সিস্টেম স্থাপন একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

ড্রোনবিরোধী সিস্টেমের কার্যকারিতা

সৈয়দ আরিব আহমেদ জানান, এই ড্রোনবিরোধী সিস্টেম অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি। এটি রাডার এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আকাশসীমায় ড্রোন শনাক্ত করতে পারে। সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রোনের সংকেত ব্যাহত করে এবং এটিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। এর ফলে ড্রোনটি নিরাপদে অবতরণ করে বা সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

এই সিস্টেমের মাধ্যমে তাজমহলের ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কোনো ড্রোনের অনুপ্রবেশ রোধ করা সম্ভব হবে। এটি শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদী হুমকি নয়, বরং অবৈধভাবে ড্রোনের মাধ্যমে ছবি তোলা বা ভিডিও ধারণের মতো কার্যকলাপও প্রতিরোধ করবে। তাজমহলের আকাশসীমা একটি নো-ফ্লাই জোন হিসেবে চিহ্নিত, এবং এই সিস্টেম এই নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে

তাজমহলের (taj-mahal) নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহুমুখী এবং বহুস্তরীয়। ইতিমধ্যেই এখানে সিসিটিভি ক্যামেরা, ধাতু সনাক্তকারী যন্ত্র এবং কঠোর নিরাপত্তা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। ড্রোনবিরোধী সিস্টেম এই ব্যবস্থায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি বিশেষ করে আধুনিক প্রযুক্তির হুমকি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Advertisements

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সিস্টেমটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে এবং এর কার্যকারিতা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও উন্নত প্রযুক্তি সংযোজন করা হবে। এছাড়া, সিস্টেমটি পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে, যারা ২৪ ঘণ্টা নজরদারি বজায় রাখবেন।

পর্যটকদের জন্য প্রভাব

তাজমহল (taj-mahal) পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য, এবং এই নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাদের অভিজ্ঞতার উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে পুলিশ জানিয়েছে। বরং, এটি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং তাজমহলের সৌন্দর্য উপভোগ করার সময় তাদের মনে শান্তি আনবে। তবে, পর্যটকদের নো-ফ্লাই জোনের নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং তাজমহলের আশপাশে ড্রোন উড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

অপারেশন সিঁদুরে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আইন-ছাত্রীকে গ্রেফতার কলকাতা পুলিশের

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

তাজমহলের (taj-mahal) নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আধুনিক করতে সরকার এবং প্রশাসন ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছে। ড্রোনবিরোধী সিস্টেম স্থাপন এই প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভবিষ্যতে অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায়ও এই ধরনের প্রযুক্তি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

এই সিস্টেমটি শুধুমাত্র তাজমহলের নিরাপত্তাই নিশ্চিত করবে না, বরং ভারতের অন্যান্য সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পদ রক্ষায় একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে। এটি প্রমাণ করে যে ভারত তার ঐতিহ্য রক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জনসাধারণের প্রতি আহ্বান

পুলিশ জনসাধারণকে তাজমহলের আশপাশে ড্রোন ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করেছে। এটি শুধুমাত্র নিরাপত্তার জন্যই নয়, বরং আইনি জটিলতা এড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে তৎক্ষণাৎ নিরাপত্তা কর্মীদের জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তাজমহলের (taj-mahal) এই নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশ্ব ঐতিহ্যের এই অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি ভারতের ঐতিহাসিক স্থানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতার প্রতিফলন।