মোদী রাজ্যে মসজিদে গাজার নামে তহবিল! ধৃত সিরিয়ান

গুজরাটের আহমেদাবাদ (Modi State) ক্রাইম ব্রাঞ্চ শনিবার এক সিরিয়ার নাগরিককে গ্রেফতার করেছে, যিনি গাজা যুদ্ধের শিকারদের নামে মসজিদ থেকে তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে বিলাসবহুল জীবনযাত্রার অর্থায়ন…

মোদী রাজ্যে মসজিদে গাজার নামে তহবিল! ধৃত সিরিয়ান

গুজরাটের আহমেদাবাদ (Modi State) ক্রাইম ব্রাঞ্চ শনিবার এক সিরিয়ার নাগরিককে গ্রেফতার করেছে, যিনি গাজা যুদ্ধের শিকারদের নামে মসজিদ থেকে তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে বিলাসবহুল জীবনযাত্রার অর্থায়ন করার অভিযোগে জড়িত ছিলেন। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম আলি মেঘাত আল-আজহার, যিনি পর্যটক ভিসায় ভারতে এসেছিলেন।

আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চের মতে, এই ধরনের কার্যকলাপ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। এই ঘটনায় তিনজন সহযোগী এখনও পলাতক রয়েছেন, এবং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সংস্থাগুলি তাদের উদ্দেশ্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত চালাচ্ছে।

   

পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, আলি মেঘাত আল-আজহার এবং তার সহযোগীরা গুজরাটের বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে নিজেদের গাজা যুদ্ধের শিকার হিসেবে পরিচয় দিয়ে ত্রাণের জন্য অনুদান সংগ্রহ করতেন। তবে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় আলি স্বীকার করেছেন যে এই অর্থ গাজার কোনও ত্রাণ কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয়নি; বরং, তারা এই টাকা ব্যয়বহুল হোটেল, ব্র্যান্ডেড পোশাক এবং উচ্চমানের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী কেনার জন্য ব্যবহার করতেন।

ক্রাইম ব্রাঞ্চের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই গ্যাংটি গাজার শিকারদের নামে অর্থ সংগ্রহ করছিল, কিন্তু এটি তাদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল।”

এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয় একটি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে, যেখানে জানা যায় যে একটি সিরিয়ার গ্যাং গাজার শিকারদের নামে মিথ্যা দাবি করে তহবিল সংগ্রহ করছে। তদন্তে দেখা গেছে, আলি এলিসব্রিজের রিগাল রেসিডেন্সি হোটেলে থাকছিলেন এবং তিনি নিজেকে গবাদি পশু পালনের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছিলেন।

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি শুধুমাত্র আরবি ভাষায় কথা বলার ভান করেন এবং তার বুকে কিছু আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে দাবি করেন যে এগুলো যুদ্ধে আঘাতের চিহ্ন। তবে, পুলিশের সন্দেহ, এই চিহ্নগুলো সহানুভূতি অর্জনের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা হয়েছিল।

আলি মেঘাত আল-আজহারের তিন সহযোগী—জাকারিয়া (দামাস, আল-মালিহা, সিরিয়া), আহমেদ ওহেদ আহবাশ (দামাস, সিরিয়া) এবং ইউসুফ খালিদ আলজাহর (দামাস, সিরিয়া)—এখনও পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, এই ব্যক্তিরা পর্যটক ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করে এই কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। তাদের ধরতে ব্যাপক তল্লাশি চলছে।

Advertisements

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই গ্যাং লেবানন থেকে ভারতে এসেছিল এবং কিছু অর্থ হাওয়ালা চ্যানেলের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়েছে। এই তহবিলের উৎস এবং এর চূড়ান্ত ব্যবহারের বিষয়ে তদন্ত চলছে, এবং সন্দেহ করা হচ্ছে যে এই কার্যকলাপের পিছনে সন্ত্রাসবাদী অর্থায়ন বা অন্য কোনও অবৈধ উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ এই ঘটনাকে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য “গুরুতর উদ্বেগের” বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তারা আলি মেঘাত আল-আজহারকে কালো তালিকাভুক্ত করার এবং তাকে দেশ থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এছাড়া, তার সহযোগীদের পাসপোর্টের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে।

পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই ধরনের কার্যকলাপ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা এই গ্যাং-এর পুরো নেটওয়ার্ক এবং তাদের উদ্দেশ্য উদঘাটনের জন্য কাজ করছি।”

অর্থ পাচার মামলায় ইডি হেফাজতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে

এই ঘটনা গুজরাটে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে এই প্রতারণার তীব্র নিন্দা করেছেন, এবং মানবিক সাহায্যের নামে প্রতারণার বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের সংস্থাগুলি এই ঘটনার পিছনের উদ্দেশ্য এবং তহবিলের প্রকৃত ব্যবহার সম্পর্কে গভীর তদন্ত চালাচ্ছে। এই ঘটনা ভারতে মানবিক ত্রাণের নামে তহবিল সংগ্রহের কার্যক্রমে আরও কঠোর নজরদারির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।