বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান অত্যাচার এবং হিংসার ঘটনায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা (PIL) দাখিল করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন বন্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নির্দেশনার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া নাগরিকত্ব সংশোধন আইন, ২০১৯ এর অধীনে নাগরিকত্বের আবেদন করার সময়সীমা বাড়ানোরও দাবি জানানো হয়েছে, যাতে সাম্প্রতিক হিংসার কারণে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দুদেরও নাগরিকত্বের সুবিধা দেওয়া যায়।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবেদন, যা ২৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সামনে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আবেদনটি দাখিল করেছেন লুধিয়ানার ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক রাজেশ ধান্ডা, যিনি ভগবান জগন্নাথ রথযাত্রা মহোৎসব সমিতির সভাপতি এবং ইসকন স্টিয়ারিং কমিটির সহ-সভাপতি। তিনি এও দাবী করেছেন যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতা, নিপীড়ন ও অন্যান্য অপরাধের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
আবেদনে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, নির্যাতন ও অত্যাচার বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভারত সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হোক।” আবেদনকারীর মতে, বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন, যা ভারতকে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাধ্য করবে। এছাড়া, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (CAA) এর অধীনে যেহেতু অনেক হিন্দু ও সংখ্যালঘু বাংলাদেশি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য আবেদনকারী সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। মূখ্যতঃ, নির্যাতিত সম্প্রদায়কে সমর্থন দেওয়ার জন্য নাগরিকত্বের আবেদন প্রক্রিয়াটি দীর্ঘায়িত করার অনুরোধও করা হয়েছে।
রাজেশ ধান্ডা আরও দাবি করেছেন, “ভারত সরকারকে এমন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে হিংসার শিকার বাংলাদেশি হিন্দুদের জন্য আইনগতভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। তাদের নাগরিকত্ব অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে, বিশেষত যারা সম্প্রতি বাংলাদেশে হিংসার কারণে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।” এই আবেদনটি জমা দেওয়ার পর, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের দিকে নজর রয়েছে, যেখানে আইনগত, মানবিক ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় বহু লোক নিহত হয়েছে এবং শতাধিক বাড়ি, মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। অত্যাচারের শিকার লোকজনকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে, এবং এটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি অগ্রাধিকার সমস্যা হিসেবে এসেছে।