কর্ণাটক, ২২ অক্টোবর: কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার (Siddaramaiah) রাজনৈতিক জীবনের অন্তিম পর্বে পৌঁছানোর ইঙ্গিত দিলেন তাঁর পুত্র ও কংগ্রেসের বিধান পরিষদের সদস্য (MLC) যতীন্দ্র সিদ্ধারামাইয়া। তাঁর কথায়, এখন সময় এসেছে এমন নেতাদের তুলে আনার, যাঁদের সিদ্ধারামাইয়ার অভিজ্ঞতা থেকে শিখিয়ে নেওয়া সম্ভব।
এই প্রসঙ্গে তিনি কর্ণাটকের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সতীশ জারকিহোলির নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘‘তিনি একজন আদর্শ নেতা, যিনি প্রগতিশীল আদর্শ এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মানানসই।’’ যতীন্দ্রর এই মন্তব্য ঘিরেই রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে নেতৃত্ব পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে। ২০২৩ সালের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেস কর্ণাটকে ক্ষমতায় ফেরে। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার পাঁচ বছরের মেয়াদের অর্ধেকের কাছাকাছি পৌঁছেছে এই নভেম্বর মাসেই। এই প্রেক্ষিতে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—তিনি কি সত্যিই অবসর নিতে চলেছেন? আর যদি নেন, তবে কে হবেন তাঁর উত্তরসূরি?
এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয় যখন অক্টোবরের শুরুতে সিদ্ধারামাইয়া নিজে বলেন, নেতৃত্ব পরিবর্তনের বিষয়টি নির্ভর করে বিধায়কদের সমর্থন এবং কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সম্মতির উপর।তাঁর এই বক্তব্য ছিল উপমুখ্যমন্ত্রী ডি.কে. শিবকুমারের আগের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া, যেখানে শিবকুমার বলেছিলেন—‘‘নেতৃত্ব বদলের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্তই যথেষ্ট।’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কংগ্রেস বিধায়করা এখনও সিদ্ধারামাইয়ার প্রতি আস্থাশীল। তাঁর অনুগামী বহু বিধায়ক এর আগেও বলেছেন, কংগ্রেস হাইকম্যান্ড যদি নেতৃত্ব পরিবর্তনের কথা ভাবেও, তবে আগে বিধায়কদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিধায়কদের এই সমর্থনই এখনও সিদ্ধারামাইয়াকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে রেখেছে বলে অনেকের মত।
যদিও রাজ্য রাজনীতিতে নেতৃত্ব নিয়ে বিতর্ক প্রবল, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত নেতৃত্ব বদলের বিষয়ে কোনও স্পষ্ট বার্তা দেয়নি। উপরন্তু, তাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে জনসমক্ষে জল্পনা-বিতর্ক বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়ে এসেছে। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা এবং মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, কর্ণাটক কংগ্রেস ইউনিটে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। তিনি মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ‘পাওয়ার-শেয়ারিং অ্যাগ্রিমেন্ট’ বা ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে কথাবার্তাকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন।