বিজেপির রাজনৈতিক মুখ নয় সোফিয়া-ভ্যোমিকা, ভুয়ো খবর দাবি মালব্যর

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য রবিবার (malviya) স্পষ্ট করেছেন যে, দলের কোনো পরিকল্পনা নেই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বা উইং কমান্ডার ভ্যোমিকা…

malviya claimes fake news

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য রবিবার (malviya) স্পষ্ট করেছেন যে, দলের কোনো পরিকল্পনা নেই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বা উইং কমান্ডার ভ্যোমিকা সিংকে প্রচারের মুখ হিসেবে ব্যবহার করার। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনকে ‘ভুয়ো খবর’ বলে আখ্যা দিয়ে তিনি জানান, বিজেপি মাইনরিটি মোর্চার সভাপতি জামাল সিদ্দিকীর মন্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

মালব্য (malviya) এক্স-এ লিখেছেন, “এটি #ফেকনিউজ। বিজেপির কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বা উইং কমান্ডার ভ্যোমিকা সিংকে প্রচারের মুখ হিসেবে ব্যবহার করার কোনো পরিকল্পনা নেই। জামাল সিদ্দিকীর মন্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি কেবলমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষমতায়িত মহিলা হিসেবে কর্নেল কুরেশিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।”

   

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, (malviya) “কর্নেল কুরেশি, উইং কমান্ডার ভ্যোমিকা বিজেপি প্রচারের মুখ হতে চলেছেন।” প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, অপারেশন সিন্দুরের সংবাদ সম্মেলন পরিচালনাকারী দুই সেনা কর্মকর্তা—কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ভ্যোমিকা সিং—নরেন্দ্র মোদী সরকারের ১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১৯ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া বিজেপির একটি “মহিলা-কেন্দ্রিক উচ্চাভিলাষী প্রচার” অভিযানের মুখ হবেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, এই প্রচারে নারী ক্ষমতায়ন এবং সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের অবদান তুলে ধরা হবে।

জামাল সিদ্দিকীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে, বিজেপি মাইনরিটি মোর্চা কর্নেল কুরেশিকে একজন ক্ষমতায়িত মুসলিম মহিলা হিসেবে প্রচারে উপস্থাপন করতে চায়। এছাড়া, উইং কমান্ডার ভ্যোমিকা সিংকে সশস্ত্র বাহিনীতে নারীদের সাফল্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রচারে বিজেপি মোদী সরকারের নারী ক্ষমতায়নের উদ্যোগ, যেমন ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ এবং সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের জন্য নতুন সুযোগ, তুলে ধরবে।

অমিত মালব্যের স্পষ্টীকরণ (malviya) 

অমিত মালব্য (malviya) এই প্রতিবেদনকে ‘ভুয়ো’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, জামাল সিদ্দিকীর মন্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সিদ্দিকী কেবলমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে কর্নেল কুরেশির ক্ষমতায়িত ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছিলেন, প্রচারে তাঁকে মুখ হিসেবে ব্যবহার করার কোনো পরিকল্পনার কথা বলেননি।

মালব্য (malviya) জোর দিয়ে বলেন, বিজেপির এমন কোনো পরিকল্পনা নেই যেখানে কর্নেল কুরেশি বা উইং কমান্ডার সিংকে প্রচারের মুখ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। তিনি গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার আহ্বান জানান এবং এই ধরনের ‘ভুল তথ্য’ ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলেন।

সাংসদ প্রিয়ার সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন রিঙ্কু! কবে বাজবে বিয়ের সানাই?

অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপট

কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ভ্যোমিকা সিং অপারেশন সিঁদুরের সময় সংবাদ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিদের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর ভারত ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত অপারেশন সিঁদুর পরিচালনা করে।

Advertisements

এই অপারেশনে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের ১১টি বায়ু ঘাঁটিতে নির্ভুল আঘাত হানে। কর্নেল কুরেশি এবং উইং কমান্ডার সিং সংবাদ সম্মেলনে এই অপারেশনের বিস্তারিত তথ্য জনসাধারণের সামনে তুলে ধরেন, যা তাঁদের জাতীয় পর্যায়ে আলোচনায় এনেছে।

কর্নেল কুরেশি, একজন মুসলিম মহিলা সেনা কর্মকর্তা হিসেবে, এবং উইং কমান্ডার সিং, বিমান বাহিনীর একজন শীর্ষস্থানীয় নারী কর্মকর্তা হিসেবে, সশস্ত্র বাহিনীতে নারীদের ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁদের পেশাদারিত্ব এবং নেতৃত্ব অপারেশন সিন্দুরের সময় ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনা শুরু হয়। অনেকে বিজেপির এই কথিত পরিকল্পনাকে নারী ক্ষমতায়নের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখেছিলেন। তবে, মালব্যের স্পষ্টীকরণের পর এই আলোচনা নতুন মোড় নিয়েছে।

বিরোধী দল কংগ্রেস এই ঘটনায় সরকারের স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, “বিজেপি প্রায়ই গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ায়। যদি এটি ভুয়ো খবর হয়, তবে সরকারের উচিত স্পষ্টভাবে তাদের পরিকল্পনা জানানো।”

অন্যদিকে, বিজেপি (malviya)মাইনরিটি মোর্চার সভাপতি জামাল সিদ্দিকী বলেন, “আমার মন্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি কেবল বলেছিলাম যে কর্নেল কুরেশির মতো মহিলারা আমাদের সম্প্রদায়ের জন্য গর্বের বিষয়। এটিকে প্রচারের সঙ্গে জড়ানো হয়েছে, যা আমার উদ্দেশ্য ছিল না।”

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

এক্স-এ #BJPCampaign এবং #FakeNews হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করছে। (malviya)একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “কর্নেল কুরেশি এবং উইং কমান্ডার সিং আমাদের দেশের গর্ব। তাঁদের রাজনীতির সঙ্গে জড়ানো উচিত নয়।” আরেকজন লিখেছেন, “বিজেপি যদি নারী ক্ষমতায়নের প্রচার করতে চায়, তবে এটি স্বচ্ছভাবে করা উচিত।” এই বিতর্ক সামাজিক মাধ্যমে গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা এবং রাজনৈতিক দলগুলির স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেছে।

বিজেপির নারী ক্ষমতায়নের উদ্যোগ

বিজেপি (malviya) দীর্ঘদিন ধরে নারী ক্ষমতায়নের উপর জোর দিয়ে আসছে। মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’, উজ্জ্বলা যোজনা এবং মুদ্রা ঋণ প্রকল্প, নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের জন্য গৃহীত হয়েছে। তবে, টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন এবং মালব্যের স্পষ্টীকরণের পর এই ধরনের প্রচারের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

অমিত মালব্যের (malviya) স্পষ্টীকরণ এই বিতর্ককে কিছুটা শান্ত করলেও, গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা এবং রাজনৈতিক প্রচারে সেনা কর্মকর্তাদের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। কর্নেল কুরেশি এবং উইং কমান্ডার সিং-এর মতো ব্যক্তিরা সশস্ত্র বাহিনীতে নারীদের সাফল্যের প্রতীক হলেও, তাঁদের রাজনৈতিক প্রচারে জড়ানোর বিষয়টি সংবেদনশীল। এই ঘটনা গণমাধ্যম এবং রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে তথ্যের স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরেছে।