ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সোমবার শুরু করেছেন ইউনিয়ন বাজেট ২০২৬–২৭-এর প্রথম ধাপের প্রাক-বাজেট পরামর্শ বৈঠক। বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছেন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা এবং কৃষি খাতের প্রতিনিধিরা। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, বিনিয়োগ, এবং রাজস্ব ও ব্যয় সংক্রান্ত নীতি নিয়ে মতামত সংগ্রহ করা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ বিভাগের সচিব, প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা (CEA) ভি. অনন্ত নাগেশ্বরণ এবং অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তারা। প্রথম ধাপের বৈঠকে শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা অংশগ্রহণ করেন, যাদের মধ্যে ছিলেন নীলকণ্ঠ মিশ্রা (অ্যাক্সিস ব্যাংক), সাজিদ চিনয় (জে.পি. মর্গান), রিধম দেশাই (মর্গান স্ট্যানলি), ধর্মকীর্তি জোশী (CRISIL), সোনাল ভার্মা (নোমুরা), প্রাঞ্জুল ভাণ্ডারি (HSBC), তানভী গুপ্ত জাইন (UBS) এবং নিখিল গুপ্ত (CLSA)।
আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল বিনিয়োগ-নির্ভর অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব শৃঙ্খলা বজায় রাখা। বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে বেসরকারি মূলধন ব্যয়ের (private capex) পুনরুদ্ধার এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ পরিকল্পনা কার্যকর করার কৌশল নিয়ে। এছাড়া, বৈঠকে বৈদেশিক বিনিয়োগ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিভিন্ন শিল্প খাতে সম্ভাব্য নীতি পরিবর্তনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
এরপরের সময়ে অর্থমন্ত্রী কৃষি খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি আলাদা বৈঠক করেন। বৈঠকে মূলত গ্রামীণ আয়ের বৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন, কৃষি অবকাঠামো মজবুত করা এবং কৃষকদের জন্য সঠিক দাম নিশ্চিত করার বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া জলবায়ু সহনশীলতা, কৃষি ব্যবসায় ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি, এবং ফার্ম ভ্যালু চেইনে প্রযুক্তি ব্যবহার করার বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব ও মতামত শোনা হয়।
বৈঠকে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা বিভিন্ন কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ফসলের মূল্য স্থিতিশীলতা, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, কৃষি বিপণন কাঠামো উন্নয়ন, এবং সরকারী নীতি ও ঋণ সুবিধার কার্যকর প্রয়োগ। অর্থমন্ত্রী এই বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় করার নির্দেশ দেন।
এই প্রাক-বাজেট বৈঠকের মাধ্যমে সীতারমন সরকারকে বাজেট প্রস্তুতিতে বাস্তব তথ্য ও বিভিন্ন খাতের মতামত অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ তৈরি করছেন। অর্থনীতি ও কৃষি খাতের পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরবর্তী রাউন্ডের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকগুলি বাজেটের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যাতে দেশের সমৃদ্ধি ও সব স্তরের জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।


