লিঙ্গায়ত নিয়ে সিদ্দারামাইয়া শিবিরে নয়া বিতর্ক, তোলপাড় রাজনীতি

Karnataka Political Showdown: Siddaramaiah Cancels Trip as MLAs Meet Kharge

কর্নাটকের রাজনীতিতে ফের নতুন বিতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বসবরাজ রায়ারেড্ডি এক সভায় বলেন, “লিঙ্গায়ত কোনো জাতি বা ধর্ম নয়। এটি একটি মতাদর্শভিত্তিক আন্দোলন। এমনকি হিন্দুধর্মও একটি সংস্কৃতি।” তাঁর এই মন্তব্য সামনে আসতেই কর্নাটকজুড়ে রাজনৈতিক মহলে তুমুল চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

Advertisements

বর্তমানে কর্নাটক রাজ্যে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়গুলির অর্থসামাজিক ও শিক্ষাগত অবস্থা জানতে রাজ্য পশ্চাৎপদ কমিশন একটি সমীক্ষা চালাচ্ছে। সেই সমীক্ষা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। সমীক্ষার ফর্মে ধর্মের ঘরে “অন্য” (Others) নামে একটি আলাদা কলাম রাখা হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এই কলাম তৈরি করে কংগ্রেস সরকার সচেতনভাবেই লিঙ্গায়তদের আলাদা ভাবে নিজেদের পরিচয় দিতে উৎসাহিত করছে।

   

বিজেপি নেতা বিজয়েন্দ্র অভিযোগ করেন, “সিদ্দারামাইয়া সরকার হিন্দুদের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতি করছে। ভীরশৈব-লিঙ্গায়ত সমাজকে টুকরো করার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। এটি প্রথম নয়, আগেও তারা এই কাজ করেছে।” তিনি আরও জানান, বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতারা এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে ভীরশৈব মহাসভা ও বিভিন্ন স্বামীজি ও জগদগুরুর সঙ্গে বৈঠক করা হবে, যাতে সম্প্রদায়টি একজোট থাকে এবং বিভাজনের রাজনীতির শিকার না হয়।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যদিও এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি, তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্নাটকে লিঙ্গায়ত সম্প্রদায় ভোটব্যাঙ্কের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরি হলে তার প্রভাব রাজ্যের ভোটের সমীকরণে সরাসরি পড়বে। সিদ্দারামাইয়া সরকার আগে থেকেই সামাজিক ন্যায়বিচারের নামে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে লিঙ্গায়তদের নিয়ে নতুন এই মন্তব্যকে বিজেপি হাতিয়ার করেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

Advertisements

লিঙ্গায়ত সম্প্রদায় দক্ষিণ ভারতের একটি প্রাচীন ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক ধারা। ভীরশৈব আন্দোলনের সঙ্গে এর গভীর যোগ রয়েছে। ঐতিহাসিক ভাবে এটি সংস্কারক বাসবেশ্বরের প্রচারিত শৈব ভক্তি আন্দোলন থেকে গড়ে উঠেছে। পরে ধীরে ধীরে এই সম্প্রদায় নিজেদের স্বতন্ত্রতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। ফলে রাজনীতিতে লিঙ্গায়ত ইস্যু নতুন কিছু নয়। তবে শাসকদলের উপদেষ্টার এমন মন্তব্যে বিষয়টি ফের উত্তাল হয়েছে।

বসবরাজ রায়ারেড্ডির মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করছে, আবার কেউ কেউ বলছেন, এটাই আসল সত্যি—লিঙ্গায়ত একটি মতাদর্শিক আন্দোলন, ধর্ম নয়।