প্রধানমন্ত্রীর দাড়ি নিয়ে খোঁচা, সনাতনী পরিচয়ে প্রশ্ন দিগ্বিজয়ের

কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা দিগ্বিজয় সিংহ সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Pm Modi)  উদ্দেশ্য করে যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে…

Sanatani or Selective? Digvijay Singh Attacks PM Over Religious Observance"

কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা দিগ্বিজয় সিংহ সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Pm Modi)  উদ্দেশ্য করে যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদীর সনাতনী হিন্দু হিসেবে পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে গিয়ে তাঁর মায়ের মৃত্যুর পর ধর্মীয় রীতিনীতি পালন না করার বিষয়টি উত্থাপন করেন।

দিগ্বিজয়ের স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়, “আপনার মাতাজির দেহান্ত হল, আপনি মুণ্ডনও করালেন না। আপনি নিজেকে সনাতনী বলেন কীভাবে?” এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নিজের পরিচয়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন, অথচ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে নিজেই অনেকসময় অংশগ্রহণ করেন না।

   

ব্যক্তিগত আক্রমণ না গণতান্ত্রিক প্রশ্ন?

রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও ব্যক্তিগত পরিসরের সীমারেখা নিয়ে এই মন্তব্য নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। অনেকেই মনে করছেন, দিগ্বিজয় সিংহ যে বিষয়টি তুলেছেন, তা একান্তই ব্যক্তিগত এবং কারও ধর্মীয় বিশ্বাস প্রকাশের ধরন নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার কারও নেই। অন্যদিকে, কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, এটা শুধুই একটি উদাহরণ; আসল প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রী মোদীর(Pm Modi)  কথিত ‘সনাতনী’ ভাবমূর্তি এবং তার রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়ে।

দিগ্বিজয় সিংহ আরও বলেন, “আপনারা বারবার আমাদের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কটূক্তি মেনে নিচ্ছেন, কিন্তু কেউ তাঁকে প্রশ্ন করে না। তিনি নিজেই অহরহ অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেন, অথচ গণমাধ্যম চুপ থাকে।”

জাতীয় ইস্যু থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর অভিযোগ

Advertisements

এই প্রসঙ্গে দিগ্বিজয় সিংহ অভিযোগ করেন, এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য বা ইস্যু তুলে আসল জাতীয় সমস্যাগুলি থেকে সাধারণ মানুষের মনোযোগ সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “যখন সংবিধান বিপন্ন, মূল্যবৃদ্ধি অসহনীয়, বেকারত্ব চরমে, এবং ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বাড়ছে— তখন এইসব আড়ম্বরপূর্ণ কথাবার্তা আসল সমস্যাগুলোকে আড়াল করার চেষ্টা মাত্র।”

প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা

বিজেপির পক্ষ থেকে দিগ্বিজয় সিংহের এই মন্তব্যকে ‘নিন্দনীয়’ এবং ‘অমানবিক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বিজেপি নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, ব্যক্তিগত শোক ও ধর্মীয় রীতি পালন কি এখন রাজনৈতিক বিতর্কের হাতিয়ার হয়ে উঠবে? অনেকে আবার বলছেন, শোকপ্রকাশ এবং ধর্মীয় আচারের পদ্ধতি একান্ত ব্যক্তিগত, এবং সেটি নিয়ে জনসমক্ষে প্রশ্ন তোলা অশোভন।

অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন পর্যন্ত এই মন্তব্যকে দলীয় অবস্থান বলেই মানতে নারাজ। যদিও তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কথাবার্তার ধরণ নিয়ে বরাবরই আপত্তি জানিয়ে আসছেন, এই ব্যক্তিগত স্তরের মন্তব্য থেকে অনেকেই দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছেন।