‘পাকিস্তান, বাংলাদেশে ঘরের মতো লাগে’! স্যাম পিত্রোদার মন্তব্যে ঝড়

নয়াদিল্লি: বিতর্ক যেন তাঁর নিত্যসঙ্গী। কংগ্রেসের বিদেশ শাখার প্রধান স্যাম পিত্রোদা আবারও রাজনৈতিক ঝড় তুললেন প্রতিবেশী নীতি নিয়ে মন্তব্য করে। এক সাক্ষাৎকারে ভারতের বিদেশনীতির সমালোচনা…

নয়াদিল্লি: বিতর্ক যেন তাঁর নিত্যসঙ্গী। কংগ্রেসের বিদেশ শাখার প্রধান স্যাম পিত্রোদা আবারও রাজনৈতিক ঝড় তুললেন প্রতিবেশী নীতি নিয়ে মন্তব্য করে। এক সাক্ষাৎকারে ভারতের বিদেশনীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আগে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার দিকে নজর দেওয়া উচিত। আর সেই প্রসঙ্গেই পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপাল সফরের অভিজ্ঞতা টেনে আনেন তিনি৷ বলেন, সেখানে গেলে ‘‘ঘরের মতো’’ অনুভব করেন।

পাকিস্তান ঘরের মতো লাগে

পিত্রোদার ভাষায়, “আমি পাকিস্তানে গিয়েছি, সেখানেও ঘরের মতো মনে হয়েছে। বাংলাদেশ, নেপালেও একই অনুভূতি। ওরা আমার মতো দেখতে, আমার ভাষায় কথা বলে, আমার গান শোনে, আমার খাবার খায়। তাই আমাদের শান্তি আর সৌহার্দ্যে বাঁচতে শিখতে হবে।”

   

এই মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। কারণ, সাম্প্রতিক অতীতে নেপাল ও বাংলাদেশে যুব-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের পর সরকার পরিবর্তন হয়েছে। পাকিস্তানও ইমরান খানের আকস্মিক পতনের পর হিংসা আর অস্থিরতার সাক্ষী হয়েছে। আর এদিকে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৫ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পরই পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে। হামলার পরই ভারত শুরু করে অপারেশন ‘সিঁদুর’, পাকিস্তানের মাটিতে একাধিক সন্ত্রাস ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে পিত্রোদার ‘প্রতিবেশীপ্রেমী’ মন্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

Advertisements

কংগ্রেস আমলের ইতিহাস Sam Pitroda Pakistan Comments

বিজেপি এই মন্তব্যের সঙ্গে টেনে এনেছে কংগ্রেস আমলের ইতিহাসও। দলের মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারী সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “রাহুল গান্ধীর নীলচোখের পাত্র স্যাম পিত্রোদা বলছেন পাকিস্তানে তিনি ঘরের মতো অনুভব করেন। তাই তো ইউপিএ সরকার ২৬/১১-এর পরও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নেয়নি। পাকিস্তানের প্রিয়, কংগ্রেসের প্রিয়জন!”

তবে এটাই প্রথম নয়। বরাবরই হঠাৎ করে করা মন্তব্যে বিতর্কে জড়িয়েছেন স্যাম পিত্রোদা। গত বছরও লোকসভা ভোটের আগে তাঁর এক মন্তব্য নিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলের মানুষ দেখতে চীনা, দক্ষিণের মানুষ আবার আফ্রিকানদের মতো! সেই মন্তব্যকে ঘিরে কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল।

ফলে প্রশ্ন উঠছে, ২৬/১১-এর স্মৃতি থেকে পহেলগাঁও হামলার রক্তচিহ্ন—সব কিছু যখন ভারত-পাক সম্পর্ককে বিষিয়ে তুলেছে, তখন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান এই নেতা কোন রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাইছেন? আর তাঁর এই মন্তব্য আদৌ কংগ্রেসকে রাজনৈতিকভাবে সুবিধে দেবে, নাকি অস্বস্তিতেই ফেলবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।