গেরুয়া রাজ্যে মসজিদ খুঁড়তে গিয়ে মিলল রাম মূর্তি

sagar-mp-statue-of-lord-ram-sita-found-during-mosque-renovation

সাগর, মধ্যপ্রদেশ: সাগর জেলার বান্দা ব্লকের পাপেট গ্রামের একটি মসজিদের রূপায়ণ কাজ চলাকালীন খননের সময় পাওয়া গেছে রাম সীতার প্রতিকৃতি। এই ঘটনাটি মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের মনযোগ আকৃষ্ট করেছে এবং প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা বাড়িয়েছে।

Advertisements

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মসজিদের ভিত্তি কাজ চলাকালীন মাটির উত্তোলনের সময় দুইটি ভাঙা প্রতিকৃতি উদ্ধার হয়। হিন্দু সংগঠনগুলো দাবি করেছে, “এই স্থানে পূর্বে একটি মন্দির ছিল যা পরে মসজিদে পরিণত হয়েছে।” আবেগাপ্লুত স্থানীয়রা সেই প্রতিকৃতিগুলোকে উপাসনার উপযোগী বলেও মনে করছেন। ঘটনার সংবাদ ছড়ানোর পর মসজিদ ও গ্রামের আশপাশে ভিড় জমতে শুরু করে। এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পুলিশসহ প্রশাসনিক শক্তি দ্রুত পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। এলাকায় নিরাপত্তার দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে।

   

এসআইআরের চাপে বিএলওর মৃত্যু, কমিশনকে আক্রমণ মমতার

পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া প্রতিকৃতিগুলো তাঁদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং মসজিদের নির্মাণ কাজ তাত্ক্ষণিকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। প্রশাসনিক নির্দেশক্রমে Archaeological Survey of India (ASI)-এর নির্দেশনায় এই প্রতিকৃতিগুলোর বয়স, উৎপত্তি ও প্রকৃত ইতিহাস নির্ধারণের জন্য তদন্ত চালানো হবে। এ প্রসঙ্গে জেলার এক প্রশাসক ঘোষণা করেছেন, “মুল ঘটনা হচ্ছে প্রতিকৃতি উদ্ধার। এখনই কোন ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি; সব ধরনের তথ্য ও প্রতিক্রিয়া বিচার করে সামগ্রিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলোর দাবি, “এই মসজিদের আগে এখানে একটি মন্দির ছিল,” এবং এখনও সেই মন্দিরের ভিত্তি বা অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় তারা জোর সুর পাচ্ছেন। একজন গ্রামের বাসিন্দা বলছেন, “আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি এখানে আগেই মন্দির ছিল।

Advertisements

আজ প্রতিকৃতি মিলছে বলেই মনে হচ্ছে ইতিহাসের এক অংশ ফিরে এসেছে।” অন্যদিকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য মন্তব্য করেছেন, “খোদাইয়ের সময় উঠে আসা আভাষপ্রাপ্ত ইঁট বা পাথরকে প্রতিকৃতি বলা হচ্ছে। মসজিদ প্রায় ২০০ বছর আগের হওয়ার কথা। বিষয়টি আইন ও ইতিহাসের আলোচনায় যাবে।”

রাজনৈতিক চিত্রও দ্রুত পরিবর্তনশীল। ঘটনাটি হিন্দু–মুসলিম সংবেদনশীলতায় আবর্তিত হওয়ায় রাজনৈতিক দল-গোষ্ঠীগুলি সক্রিয় হয়েছে। কিছু দল ইতিমধ্যেই অভিযোগ এনে বলেছে, “ইতিহাসের বাষ্প ঘোলা হয়ে উঠছে, সিদ্ধান্ত দ্রুত হোক না হয় পরিস্থিতি সহজে নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে যাবে।”

ভূমি ও ধর্মীয় পরিচয়ের সমস্যায় ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বহু বছরের বিতর্ক রয়েছে। এই ঘটনা আরও একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়াতে পারে যেখানে প্রতীক, ইতিহাস ও ধর্মীয় অনুভূতির মধ্য দিয়ে জনমতের ঢেউ তৈরি হচ্ছে। একদিকে যেমন প্রশাসন দ্রুত তদন্তে নেমেছে, অন্যদিকে সামাজিক সংবেদনশীলতাকে বিবেচনায় নিয়ে রোডম্যাপ আঁকার অপরিহার্যতা বেড়েছে।

জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে শান্তি রক্ষা ও উভয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংলাপের পথে এগুচ্ছে। মুসলিম ও হিন্দু সকলেই দ্রুত পরিস্থিতি শান্তভাবে নিয়ন্ত্রণে যেতে চাইছেন। এই ঘটনাটি ভবিষ্যতে কী রূপ নেয় মঠিকভাবে ইতিহাস চিহ্নিত হয় কি না, প্রতিকৃতিগুলোর যথোপযুক্ত সংরক্ষণ হয় কি না সেগুলো দেখার বিষয়। এখন সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে উত্তেজনায় না জড়িয়ে, ইতিবাচক ও সংলাপমুখী পথে এগিয়ে যাওয়া।