নয়াদিল্লি: তিয়ানজিনে মোদী-পুতিন সাক্ষাতের পর রাশিয়ার তরফ থেকে ভারতের জন্য আসছে একের পর এক সুখবর! সস্তায় অপরিশোধিত তেলের পর এবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাতেও রাশিয়ার “বন্ধুত্বের” প্রমাণ দেখতে চলেছে ভারত বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বছর ঘুরলেই ভারতে অপারেশন সিঁদুরের অন্যতম নায়ক ‘S-400’ পাঠাতে পারে রাশিয়া। উন্নতমানের সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল গুলি পাঠানো নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বার্তালাপ এগিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
২০২৬ এবং ২০২৭ সালের মধ্যে দুটি ইউনিট ভারতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে ২০১৮ সালে সর্বমোট ৫ টি S-400 ইউনিটের অর্ডার দিয়েছিল ভারত। সম্প্রতি ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। গত বছর রাশিয়া সফরে ডেলিভারিতে বিলম্বের বিষয়টি তুলে ধরেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তবে এবার সম্ভবত অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে! “সুদর্শন চক্র প্রোজেক্ট”-এর আওতায় ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে আগামী দিনে আরও বেশ কয়েকটি S-400 মিসাইল কেনার পরিকল্পনা করছে ভারত।
সমগ্র দেশকে এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হবে বলে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে উল্লেখ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। উন্নতমানের নজরদারি ব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তার মাধ্যমে ইজরায়েলের মত ভারতকেও ‘লৌহ কবচ’-এ মুড়ে ফেলতে উদ্যোগী কেন্দ্র সরকার। রুশ সংবাদসংস্থাকে রাশিয়ার ফেডারেল সার্ভিসের প্রধান দিমিত্রি শুগায়েভ জানিয়েছেন, ভারতের কাছে আগে থেকেই আমাদের এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম আছে। তবে আগামী দিনে এক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনাও দৃশ্যমান।
অর্থাৎ, নতুন ইউনিটের ডেলিভারি। বিষয়টি আপাতত দুই দেশের আলোচনা-স্তরে রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ৫.৪ বিলিয়ন ডলারে রাশিয়ার থেকে পাঁচটি সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল এস-৪০০ এর অর্ডার দিয়েছিল ভারত। যার মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩ টি মিসাইল ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে মস্কো। বাকি দুটি ২০২৬ এবং ২৭ সালে ভারতে ঢোকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এস-৪০০ মিসাইল কি?
রাশিয়ার আলমাজ সেন্ট্রাল ডিজাইন ব্যুরো দ্বারা নির্মিত এস-৪০০ হল একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে বহু দূরের মাটি থেকে আকাশে প্রক্ষেপণ করা যায়। বিশ্বের অন্যতম উন্নতমানের এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ড্রোন, স্টিলথ বিমান, ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে ট্র্যাক করে আকাশেই খতম করা যায়। মোট দুটি ব্যাটারি যুক্ত S-400 স্কোয়াড্রনে ছয়টি লঞ্চার, একটি কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম, নজরদারি রাডার এবং এনগেজমেন্ট র্যাডার থাকে। স্কোয়াড্রনের প্রতিটি ব্যাটারি ১২৮ টি পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে। অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করতে এই মিসাইল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল।