সংঘর্ষের ক্ষত সারাতে মণিপুরে মোহন ভাগবতের বিশেষ উদ্যোগ

RSS Chief Mohan Bhagwat Makes First Visit to Manipur Since 2023 Ethnic Clashes

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS) প্রধান মোহন ভাগবত আগামী ২০ নভেম্বর থেকে মণিপুরে তিন দিনের সফরে যাচ্ছেন। এটি ২০২৩ সালের নৃগোষ্ঠী সহিংসতার পর মণিপুরে তাঁর প্রথম সফর। এই সফরকে সংগঠনটির শতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং এটি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ আউটরিচ বা যোগাযোগ প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত।

Advertisements

মণিপুরে মোহন ভাগবতের সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো স্থানীয় নাগরিক, উদ্যোক্তা এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। তিনি মূলত শান্তি, সংহতি এবং সামাজিক পুনর্গঠনের বার্তা পৌঁছে দিতে চান। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সফর রাজনৈতিক ও সামাজিক উভয় দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ RSS ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দলের—ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)—আইডিয়োলজিক্যাল পিতৃসংস্থা হিসেবে পরিচিত। ফলে, এই সফরের প্রতীকী গুরুত্ব অনেক বেশি।

   

প্রসঙ্গত, মোহন ভাগবত পূর্বে একাধিকবার বলেছেন, “RSS কাউকে বিরোধিতা করতে বা ক্ষতি করতে তৈরি হয়নি। এটি মূলত চরিত্র গঠনের দিকে মনোনিবেশ করে এবং ভারতের বৈশ্বিক নেতৃত্বের দিকে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চায়।” এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, সংগঠনটি সামাজিক ও নৈতিক উন্নয়নের দিকে গুরুত্বারোপ করছে এবং রাজনৈতিক প্রভাবকে সরাসরি প্রাধান্য দিচ্ছে না।

মণিপুরে ২০২৩ সালে সংঘটিত নৃগোষ্ঠী সহিংসতা রাজ্যটিতে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, ব্যবসায়িক ও সামাজিক কার্যক্রম প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে মোহন ভাগবতের সফরকে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং তাঁদের সমস্যার সমাধানে সংগঠনটি কীভাবে সাহায্য করতে পারে তা নিয়ে মতবিনিময় করবেন। মোহন ভাগবতের সফরের সময়, তিনি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে মিলিত হবেন, যা অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও স্থানীয় অর্থনীতির শক্তিশালীকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়াও, তিনি উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, যাতে সংঘাত-প্রভাবিত অঞ্চলে সামাজিক সংহতি ও সহমর্মিতা বাড়ানো যায়।

Advertisements

এই সফরের মাধ্যমে RSS-এর লক্ষ্য শুধু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার নয়; বরং এটি সামাজিক উন্নয়ন, সংহতি এবং স্থানীয় জনগণের সাথে সংযোগ স্থাপনের উপরও গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের সফর সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বিশ্বাস ও সহযোগিতা তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।