রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) প্রধান (rjd-chief) এবং প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) দ্বারা তদন্তাধীন ‘নৌকরির বিনিময়ে জমি’ কেলেঙ্কারি মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্নীতির মামলায় দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। তাঁর পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিব্বল আদালতে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
এফআইআর বাতিলের জন্য আবেদন
লালু যাদব (rjd-chief) এই মামলায় সিবিআই-এর দায়ের করা এফআইআর বাতিলের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। সিব্বল আদালতকে জানান, ট্রায়াল কোর্টে এই মামলায় চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া আগামী ২ জুন থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। লালু যাদবের আইনজীবী দাবি করেছেন যে, সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় অনুযায়ী, পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো তদন্ত চালানো যায় না, যা একটি বাধ্যতামূলক শর্ত।
লালু যাদবের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেওয়া হয়নি (rjd-chief)
তিনি উল্লেখ করেন, অন্যদের ক্ষেত্রে এই ধরনের অনুমতি নেওয়া হলেও, লালু যাদবের (rjd-chief) ক্ষেত্রে এই প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেওয়া হয়নি। তিনি আরও যুক্তি দেন যে, সিবিআই প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে, যা আইনের লঙ্ঘন। এই মামলায় চার্জ গঠনের যুক্তি শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে, এবং লালু পক্ষ থেকে আদালতের কাছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের জন্য আবেদন করা হয়েছে, যাতে হাইকোর্টে এই পিটিশনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ট্রায়াল কোর্টের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।
সিবিআই এই পিটিশনের বিরোধিতা করে বলেছে
সিবিআই এই পিটিশনের বিরোধিতা করে বলেছে যে, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারা ১৭এ-র অধীনে কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই। তারা আরও জানায়, ধারা ১৯-এর অধীনে প্রয়োজনীয় অনুমতি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। সিবিআই আদালতকে জানায় যে, এই বিষয়টি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে এবং তিন বিচারপতির বেঞ্চে এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। বিচারপতি রবিন্দর দুদেজা এই মামলার বিস্তারিত শুনানি করেন এবং জানান, তিনি দিনের শেষে আদেশ জারি করবেন।
লালুর বিরুদ্ধে অভিযোগ
সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) প্রাক্তন বিহার মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব(rjd-chief), তাঁর পরিবার এবং বেশ কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে এই নৌকরির বিনিময়ে জমি মামলায় তদন্ত করছে। অভিযোগ রয়েছে যে, লালু যাদব (rjd-chief) ২০০৪ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেলওয়েতে গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের বিনিময়ে চাকরিপ্রার্থী বা তাঁদের আত্মীয়দের কাছ থেকে জমির পার্সেল উপহার হিসেবে বা অত্যন্ত কম মূল্যে গ্রহণ করেছিলেন। সিবিআই-এর এফআইআর-এ বলা হয়েছে, এই নিয়োগগুলো ভারতীয় রেলের মান এবং নির্দেশিকা অনুসারে হয়নি।
২০২২ সালের ১৮ মে সিবিআই এই মামলায় লালু যাদব(rjd-chief), তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী, কন্যা মিসা ভারতী, হেমা যাদব এবং অন্যান্য অজ্ঞাত সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। সিবিআই ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। এছাড়া, ইডি ২০২৪ সালের জানুয়ারি ও আগস্টে লালু যাদব, তাঁর স্ত্রী, কন্যা মিসা ভারতী, হেমা যাদব, পুত্র তেজস্বী যাদব এবং সহযোগী অমিত কাত্যালের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলায় চার্জশিট দাখিল করে।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু গত ৮ মে, ২০২৫-এ এই মামলায় লালু যাদবের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং তদন্তের জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। ইডি দাবি করেছে যে, এই মামলায় লালু যাদবের পরিবারের সদস্যদের নামে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জমির পার্সেল হস্তান্তরিত হয়েছিল।
ভারতীয় ক্রিকেটের ব্যস্ত হোম সিজনের সূচি ঘোষণা বিসিসিআইয়ের
কপিল সিব্বল যুক্তি দেন
লালু যাদবের (rjd-chief) পক্ষ থেকে কপিল সিব্বল যুক্তি দেন যে, সিবিআই-এর তদন্তে প্রয়োজনীয় অনুমোদনের অভাব রয়েছে, যা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করে। তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো তদন্ত শুরু করার আগে অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। এই ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।” তবে, সিবিআই দাবি করেছে যে, ধারা ১৯-এর অধীনে প্রয়োজনীয় অনুমোদন ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে এবং ধারা ১৭এ-র অধীনে কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই।
এই মামলায় লালু যাদব (rjd-chief) এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিকবার আদালতে সমন জারি করা হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত লালু, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী, পুত্র তেজস্বী যাদব, তেজ প্রতাপ যাদব এবং কন্যা হেমা যাদবকে সমন জারি করে ১১ মার্চ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। এছাড়া, গত ১১ মার্চ তেজ প্রতাপ এবং হেমা যাদবকে এই মামলায় জামিন দেওয়া হয়।
এই মামলা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তেজস্বী যাদব দাবি করেছেন, এই মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। তিনি বলেন, “আমরা যদি রাজনীতিতে না থাকতাম, তাহলে এই মামলাগুলো হত না। এটি বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।” তবে, সিবিআই এবং ইডি দাবি করছে যে, তাদের হাতে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে।
লালু যাদবের (rjd-chief) এই আবেদনের ফলাফল এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আদালতের সিদ্ধান্ত এই মামলার তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়ার উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।