পাটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে অবশেষে নীরবতা ভাঙল রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। শুক্রবার এক সংযত বার্তায় দল জানাল, পরাজয়ই শেষ কথা নয়, রাজনৈতিক সংগ্রাম চলবে আগের মতোই। এক্স-এ পোস্ট করা বার্তায় আরজেডি লিখেছে, “জনসেবা এক অবিরাম যাত্রা। এই পথে ওঠানামা অনিবার্য। পরাজয়ে শোক নেই, জয়ে অহংকার নেই। আরজেডি গরিবদের দল, গরিবের কণ্ঠস্বর তুলে ধরবেই।”
৭৫ থেকে ২৫-এ
কিন্তু দলের রাজনৈতিক বাস্তবতা বলছে অন্য কথা। গতবারের ৭৫ আসন থেকে আরজেডির সংখ্যা নেমে এসেছে ২৫-এ। কংগ্রেস, যাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ অবস্থায় মহাগঠবন্ধন লড়াই করেছে, ৬১টি আসনে লড়েও জিতেছে মাত্র ৬টিতে— আগেরবারের ১৯ থেকে তীব্র পতন।
এদিকে, এনডিএ-র ঝড়ো সাফল্যে কোনও সংশয়ই রইল না। বিজেপি ২০২০ সালের ৭৪ আসন থেকে এবার বেড়ে ৮৯-এ পৌঁছেছে। নীতীশ কুমারের জেডিইউও ৪৩ থেকে ৮৫-এ উঠেছে। দুই সঙ্গী দল মিলে ১০১টি করে আসনে লড়াই করে প্রায় ৮৫ শতাংশ স্ট্রাইক রেটে জিতেছে। ২৪৩ সদস্যের বিধানসভায় এনডিএ স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছে।
রাঘোপুরে আসন ধরে রেখেছেন তেজস্বী RJD Bihar Election Loss Analysis
এই ভরাডুবির মধ্যেও মহাগঠবন্ধন শিবিরে সামান্য স্বস্তি এনে দিয়েছেন তেজস্বী যাদব। রাঘোপুরে নিজের গড়ে তিনি ধরে রেখেছেন আসনটি— বিজেপির সতীশ কুমারকে ১৪,৫৩২ ভোটে পরাজিত করে। ভোটের শতাংশেও আরজেডি এই নির্বাচনে নজর কেড়েছে— দলের ভোটশেয়ার বেড়ে হয়েছে ২২.৭৬ শতাংশ, যা চূড়ান্ত হিসেবে বিজেপি (২০.৯০%) ও জেডিইউ (১৮.৯২%)-র চেয়েও বেশি।
সংগ্রাম জারি থাকবে, বার্তা রাহুলের
নির্বাচনী ফল ঘোষণার পর তেজস্বী যাদবের গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী রাহুল গান্ধী ফের পুরনো অভিযোগ তোলেন— নির্বাচন শুরু থেকেই ন্যায্য ছিল না। এক্স-এ পোস্টে তিনি লেখেন, “বিহারের লক্ষ লক্ষ ভোটারকে ধন্যবাদ, যারা মহাগঠবন্ধনের প্রতি আস্থা রেখেছেন। এই ফল হতবাক করার মতো। শুরু থেকেই ন্যায্য না থাকা নির্বাচনে আমরা জিততে পারিনি।” তিনি আরও জানান, ফলাফল পর্যালোচনায় গভীর বিশ্লেষণ করা হবে এবং সংগ্রাম জারি থাকবে।
এই পরাজয়ের পর কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, জয়ারাম রমেশ, অজয় মাকেন এবং বিহার প্রভারী কৃষ্ণ আল্লাভারু উপস্থিত ছিলেন।
এটি বিহারে কংগ্রেসের ২০১০ সালের পর দ্বিতীয় সর্বনিকৃষ্ট ফল— সেই বছর দল পেয়েছিল মাত্র চারটি আসন।


