রেখার হাত ধরে বিধানসভা বদলে গেল ই-বিধানে

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা (Rekha) ঘোষণা করেছেন যে, দিল্লি বিধানসভা ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ সৌরশক্তিনির্ভর এবং কাগজবিহীন ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি বলেন, “দিল্লির ইতিহাসে…

Rekha gupta new venture

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা (Rekha) ঘোষণা করেছেন যে, দিল্লি বিধানসভা ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ সৌরশক্তিনির্ভর এবং কাগজবিহীন ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি বলেন, “দিল্লির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হচ্ছে। প্রথমবারের মতো বিধানসভার সমস্ত বিদ্যুৎ খরচ সবুজ শক্তির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া, ই-বিধান ব্যবস্থার মাধ্যমে বিধানসভাকে সম্পূর্ণ কাগজবিহীন করা হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা পূর্ববর্তী সরকারগুলোর সমালোচনা করে বলেন, “আগের সরকারগুলো এই বিষয়ে কখনোই ভাবেনি বা কিছু করেনি। আমাদের সরকার নতুন নীতি ও সংস্কারের মাধ্যমে দিল্লির জনগণের জন্য উন্নত সুবিধা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এই পদক্ষেপকে তিনি পরিবেশবান্ধব এবং ডিজিটাল ভারতের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

   

সৌরশক্তিনির্ভর বিধানসভা

দিল্লি বিধানসভা ভারতের প্রথম বিধানসভা হিসেবে সম্পূর্ণ সৌরশক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। বিধানসভা ভবনে স্থাপিত সৌর প্যানেলগুলো এখন সমস্ত বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করছে। এই উদ্যোগের ফলে বিধানসভার বিদ্যুৎ খরচে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা শূন্যে নেমে এসেছে, যা পরিবেশ সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা জানান, “এই সৌরশক্তি প্রকল্প কেবল বিধানসভার জন্য নয়, দিল্লির অন্যান্য সরকারি ভবন এবং সংস্থাগুলোর জন্যও একটি পথপ্রদর্শক মডেল হয়ে উঠবে। আমরা সবুজ শক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে কাজ করছি।” এই প্রকল্পের মাধ্যমে দিল্লি সরকার ভারতের জাতীয় রাজধানী অঞ্চলকে (এনসিআর) পরিবেশবান্ধব রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

ই-বিধান: কাগজবিহীন বিধানসভার যুগ

দিল্লি বিধানসভায় ই-বিধান ব্যবস্থা চালু হওয়ায় এটি এখন সম্পূর্ণ কাগজবিহীন হয়েছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে বিধানসভার সমস্ত কার্যক্রম, যেমন নোটিস, এজেন্ডা, প্রশ্নোত্তর এবং বিলের খসড়া, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি বিধায়কের জন্য ট্যাবলেট প্রদান করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তারা সংসদীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন।

এই পদক্ষেপ কাগজের ব্যবহার শূন্যে নামিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখছে এবং সংসদীয় কার্যক্রমকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করছে। গুপ্তা বলেন, “ই-বিধান আমাদের বিধানসভাকে ২১শ শতাব্দীর ডিজিটাল যুগের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এটি সময়, খরচ এবং পরিবেশের সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ।”

পূর্ববর্তী সরকারের সমালোচনা

মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা পূর্ববর্তী দিল্লি সরকারগুলোর, বিশেষ করে আম আদমি পার্টি (এএপি) এবং কংগ্রেসের, সমালোচনা করে বলেন, “আগের সরকারগুলো পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ বা ডিজিটাল রূপান্তরের কথা কখনো ভাবেনি। আমরা শুধু পরিকল্পনা করিনি, বরং তা বাস্তবায়নও করেছি।”

তিনি দাবি করেন, দিল্লি সরকার জনগণের জন্য উন্নত সুবিধা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য নতুন নীতি ও সংস্কার চালিয়ে যাবে। এই পদক্ষেপগুলো দিল্লির জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার পাশাপাশি ভারতের অন্যান্য রাজ্যের জন্য একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে।

Advertisements

জনগণ ও পরিবেশের জন্য প্রভাব

সৌরশক্তিনির্ভর এবং কাগজবিহীন বিধানসভার এই উদ্যোগ পরিবেশ সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সৌরশক্তি ব্যবহারের ফলে বিধানসভার কার্বন ফুটপ্রিন্ট উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে, যা দিল্লির ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণ সমস্যার সমাধানে সহায়ক হবে।

ই-বিধান ব্যবস্থা কাগজের ব্যবহার কমিয়ে বন উজাড়ের হার কমাতে সাহায্য করবে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। একজন স্থানীয় নাগরিক, রমেশ কুমার, বলেন, “এই পদক্ষেপ দিল্লিকে পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তুলবে। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।”

নতুন অবতারে আসছে Nissan Magnite Kuro Edition, ব্ল্যাক থিম সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা জানিয়েছেন, দিল্লি সরকার সবুজ শক্তি এবং ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে আরও উদ্যোগ নেবে। তিনি বলেন, “আমরা দিল্লির সরকারি ভবন, স্কুল এবং হাসপাতালগুলোকেও ধীরে ধীরে সৌরশক্তিনির্ভর করার পরিকল্পনা করছি।”

এছাড়া, ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে সরকারি পরিষেবাগুলোকে আরও স্বচ্ছ এবং জনবান্ধব করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। দিল্লি সরকারের এই উদ্যোগ কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

দিল্লি বিধানসভার সম্পূর্ণ সৌরশক্তিনির্ভর এবং কাগজবিহীন ব্যবস্থায় রূপান্তর ভারতের টেকসই উন্নয়ন এবং ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার এই ঘোষণা দিল্লির জনগণের মধ্যে নতুন আশা জাগিয়েছে।

এই উদ্যোগ শুধু পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখবে না, বরং অন্যান্য রাজ্যের জন্যও একটি পথপ্রদর্শক মডেল হিসেবে কাজ করবে। দিল্লি সরকারের এই প্রচেষ্টা ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও আধুনিক এবং পরিবেশবান্ধব করে তুলছে।