ওড়িশা: ওড়িশার বিশ্ববিখ্যাত চিলিকা হ্রদে রবিবার এক অভূতপূর্ব প্রাকৃতিক ঘটনা স্থানীয়দের ও পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে (Jagannath Dham)। হ্রদের উপর আকাশচুম্বী একটি বিশাল জলস্তম্ভ বা টর্নেডোর আবির্ভাব ঘটে, যা দেখে উপস্থিত সকলে হতবাক ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ওড়িশা, একটি উপকূলীয় রাজ্য হওয়ায় এই সময়ে ঘূর্ণিঝড় বা টাইফুনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকলেও, এই প্রথম রাজ্যে কোথাও টর্নেডোর মতো ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গেল।
এই বিরল দৃশ্য পর্যটকদের কাছে একইসঙ্গে বিস্ময় ও ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে।চিলিকা হ্রদের প্রধান দেবী কালিজাই মন্দিরের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এই জলস্তম্ভটি দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, শত শত পর্যটক যখন নৌকায় চড়ে হ্রদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছিলেন, তখনই হঠাৎ এই ঘটনা ঘটে।
নন্দীগ্রামে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল: মাইক চালকের নাবালক ছেলেকে মারধরের অভিযোগ
বায়ুমণ্ডলের চাপের আকস্মিক পরিবর্তনের ফলে বাতাস ও জলের এক বিশাল সর্পিল স্তম্ভ তৈরি হয়, যা দেখতে অনেকটা হাতির শুঁড়ের মতো। স্থানীয়রা এই ঘটনাকে ‘হাতিয়াসুন্ধা’ নামে অভিহিত করেছেন, এর অনন্য আকৃতির কারণে।এই বিরল প্রাকৃতিক দৃশ্য কয়েক মিনিটের জন্য স্থায়ী হয়েছিল এবং তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়।
তবে এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই পর্যটকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে চিৎকার করতে করতে নিরাপদ স্থানের দিকে দৌড়ান। কেউ কেউ ভয়ে হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন, আবার অনেকে এই অসাধারণ দৃশ্য মুঠোফোনে ধরে রাখার চেষ্টা করেন। পর্যটকদের তোলা এই ঘটনার ভিডিওগুলি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা এই বিরল প্রাকৃতিক ঘটনার প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
চিলিকা হ্রদ ওড়িশার একটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন শত শত পর্যটক এখানে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। হ্রদের শান্ত জল, দূরে পাহাড়ের সারি এবং কালিজাই মন্দিরের আধ্যাত্মিক পরিবেশ পর্যটকদের মন জয় করে। কিন্তু এই ঘটনা সেই শান্ত পরিবেশে এক অপ্রত্যাশিত উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় নৌকার মাঝিরা জানিয়েছেন, তারা এর আগে কখনও এমন কিছু দেখেননি। তাদের মতে, এই ধরনের জলস্তম্ভ অত্যন্ত বিরল এবং এটি সাধারণত সমুদ্রের মতো বড় জলাশয়ে বেশি দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা একটি ‘ওয়াটারস্পাউট’ বা জলস্তম্ভ, যা উষ্ণ জলাশয় ও ঠান্ডা বাতাসের মিলনে সৃষ্টি হয়। বায়ুমণ্ডলের চাপের দ্রুত পরিবর্তন এবং বাতাসের গতিপথ এই ধরনের ঘটনার জন্য দায়ী। যদিও এই ঘটনা স্বল্পস্থায়ী ছিল এবং কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবুও এটি পর্যটক ও স্থানীয়দের মনে একটি অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা রেখে গেছে।