ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলায় কয়লা খনিতে ধসের ঘটনায় কমপক্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং বেশ কয়েকজনের আটকা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে (Babulal Marandi)। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝাড়খণ্ড বিজেপি রাজ্য সভাপতি এবং বিরোধী দলনেতা বাবুলাল মারাণ্ডি রাজ্যের হেমন্ত সোরেন সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
তিনি (Babulal Marandi) অভিযোগ করেছেন যে, অবৈধ কয়লা খনন এবং মাফিয়া কার্যকলাপ চলছে প্রশাসন ও পুলিশের মিলিত সহযোগিতায়। মারাণ্ডি বলেন, “মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে অবৈধ খননের জন্য। খনি ধসে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এসব প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটছে। অবৈধ কয়লা খননের সঙ্গে অনেক মাফিয়া জড়িত, যারা অত্যন্ত সংগঠিতভাবে কাজ করছে। এর পাশাপাশি কয়লা চুরির একটি সিন্ডিকেটও কাজ করছে। সরকার সব জানে। পুলিশের সহযোগিতা ছাড়া এসব সম্ভব নয়।”
রামগড় জেলার কর্মা এলাকায় শনিবার ভোরে একটি পরিত্যক্ত কয়লা খনিতে ধসের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, (Babulal Marandi) এই খনিতে অবৈধভাবে কয়লা উত্তোলন চলছিল। রামগড়ের উপায়ুক্ত (ডিসি) ফয়েজ আক আহমেদ মুমতাজ সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, “আমরা সকালে এই ঘটনার খবর পেয়েছি।
তদন্তের জন্য একটি প্রশাসনিক দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।” কুজু পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আশুতোষ কুমার সিং জানিয়েছেন, “এখনও পর্যন্ত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধার অভিযান চলছে, কারণ আরও কয়েকজনের আটকা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
বিজেপি নেতা বাবুলাল মারাণ্ডি (Babulal Marandi) এই ঘটনাকে অবৈধ কয়লা খননের ফলাফল হিসেবে চিহ্নিত করে রাজ্য সরকারের উপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “ঝাড়খণ্ডে অবৈধ কয়লা খনন একটি সংগঠিত অপরাধে পরিণত হয়েছে। ধানবাদ, বোকারো, রামগড়, হাজারিবাগ এবং চাতরায় প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক কয়লা চুরি হচ্ছে, যা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সম্ভব হচ্ছে।”
তিনি অভিযোগ করেছেন যে, পুলিশ এবং খনি কোম্পানির নিরাপত্তা কর্মীরা নির্দিষ্ট মাশুলের বিনিময়ে এই অবৈধ কার্যকলাপে সহযোগিতা করছে। মারাণ্ডি বলেন, “যারা ব্যবস্থার রক্ষক, তারাই এটি শোষণ করছে। এই অবস্থায় অপরাধ এবং কয়লা চুরি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে?”
তিনি আরও দাবি করেছেন যে, (Babulal Marandi) এই ধরনের ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) পক্ষপাতমূলক হবে, কারণ পুলিশ এই মাফিয়াদের সঙ্গে জড়িত। তিনি এই ঘটনার তদন্ত কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই)-এর হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। মারাণ্ডি বলেন, “শুধু অপরাধীদের ধরার জন্য এসআইটি গঠন যথেষ্ট নয়। কয়লা চুরি বন্ধ করতে সৎ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি শক্তিশালী এসআইটি গঠন করা উচিত।”
অবৈধ কয়লা খননের ইতিহাসঝাড়খণ্ডে (Babulal Marandi) অবৈধ কয়লা খনন দীর্ঘদিন ধরে একটি গুরুতর সমস্যা। ২০২২ সালে ধানবাদের গোপীনাথপুর, কাপাসারা এবং দহিবাড়ি খনিতে ধসের ঘটনায় অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল, যদিও স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছিল মৃতের সংখ্যা ১৬-এর বেশি।
মারাণ্ডি (Babulal Marandi) তখনও অভিযোগ করেছিলেন যে, প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে মৃতের সংখ্যা কম দেখিয়ে দায় এড়াতে চেষ্টা করছে। তিনি বলেছিলেন, “ধানবাদে অবৈধ খনন একটি প্রকাশ্য গোপনীয়তা। স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন এবং খনি কোম্পানির কর্মকর্তারা এতে জড়িত।”
২০১৩ সালের একটি রিপোর্টে রয়টার্স জানিয়েছিল, ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে কয়লা মাফিয়ারা ইউনিয়নের মাধ্যমে কয়লা নিলাম, পরিবহন এবং চুরি নিয়ন্ত্রণ করে। এই মাফিয়ারা কয়লার সঙ্গে পাথর মিশিয়ে গুণমান নষ্ট করে এবং কালোবাজারে বিক্রি করে।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়ারামগড় পুলিশ উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে(Babulal Marandi)। তবে, মারাণ্ডির অভিযোগের প্রেক্ষাপটে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পরিত্যক্ত খনিতে প্রায়ই অবৈধ খনন হয়, এবং পুলিশ ও খনি কোম্পানির নিরাপত্তা কর্মীরা এটি জেনেও ব্যবস্থা নেয় না।
অবৈধ কয়লা খনন (Babulal Marandi) ঝাড়খণ্ডের অর্থনীতিতে বিরাট ক্ষতি করছে। ২০২২ সালে প্রভাত খবরের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, ধানবাদে প্রতিদিন ১০-১৫ কোটি টাকার কয়লা মাফিয়ার হাতে চলে যায়। এছাড়া, এই অবৈধ কার্যকলাপ দরিদ্র শ্রমিকদের জীবন বিপন্ন করছে, যারা মাফিয়াদের হয়ে কাজ করে।
উল্টো রথে দিঘায় কড়া নিরাপত্তা, সরাসরি ভিডিওতে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী
রামগড়ের খনি ধসের ঘটনা ঝাড়খণ্ডে অবৈধ কয়লা খননের গভীর সমস্যাকে পুনরায় উন্মোচিত করেছে। বাবুলাল মারাণ্ডির (Babulal Marandi) অভিযোগ প্রশাসন ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ এবং স্বচ্ছ তদন্তের প্রয়োজন। সরকার এবং খনি কোম্পানিগুলিকে অবৈধ খনন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।