ফের ভারত-পাক যুদ্ধ? সতর্ক করলেন রাজনাথ

/rajnath-singh-war-warning-india-pakistan-tension

নয়াদিল্লি: ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাম্প্রতিক বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক ও কৌশলগত মহলে তৈরী করেছে চাঞ্চল্য। তিনি বলেন “ভারতকে যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে সীমান্তে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে, যেকোনো জায়গায়।” এই কথা বলে তিনি আবারও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার স্মৃতি জাগিয়ে তুলেছেন।

Advertisements

২৭ অক্টোবর, ২০২৫-এ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারার্স (SIDM)-এর বার্ষিক অধিবেশনে এই বক্তব্য দিয়ে রাজনাথ সিংয়ের কথায় যেন সীমান্তের অশান্তির ইঙ্গিত। মে মাসের সেই চার দিনের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এটি একটি কেস স্টাডি হিসেবে কাজ করবে, যাতে আমরা ভবিষ্যতের পথ চিহ্নিত করতে পারি।

   

শুভেন্দু অধিকারীর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে উত্তপ্ত চণ্ডীপুর, অভিযোগ তৃণমূলের দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে

এই সতর্কবাণী কি ফেরও এক ভারত-পাক যুদ্ধের পূর্বাভাস? নাকি আত্মনির্ভরশীল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়ার কৌশল? দেশের মানুষের মনে এই প্রশ্ন জাগছে।এই বক্তব্যের পটভূমি ফিরে যদি দেখি, তাহলে মে মাসের ঘটনা মনে পড়ে। ৭ থেকে ১০ মে, ২০২৫-এ পাকিস্তানের সাথে সীমান্তে চার দিনের সামরিক সংঘর্ষে ভারতের সেনাবাহিনী দাঁড়িয়ে ছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

‘অপারেশন সিঁদুর’-এ দেশীয় অস্ত্র যেমন আকাশ মিসাইল সিস্টেম, ব্রহ্মোস, আকাশতীর এয়ার ডিফেন্স কন্ট্রোল সিস্টেমের কার্যকারিতা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে। রাজনাথ সিং বলেছেন, “এই অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে যে যুদ্ধের দরজায় কপাট আছড়ানোর মতো পরিস্থিতি যেকোনো মুহূর্তে আসতে পারে। আমরা দৃঢ় সংকল্পে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি, কিন্তু সীমান্ত রক্ষায় আমাদের সেনা সর্বদা সজ্জিত।

Advertisements

তবু, আমাদের নিজস্ব ভিত্তিতে প্রস্তুতি নিতে হবে।” এই কথায় যেন লাইন অফ কন্ট্রোল (LoC) এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তের অস্থিরতার ছায়া পড়েছে। পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক তো সবসময়ই উত্তপ্ত কাশ্মীর ইস্যু থেকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ, সবই এর মূলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সতর্কতা শুধু পাকিস্তানের জন্য নয়, চীনের সাথেও লাদাখের মতো এলাকায় উত্তেজনা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

রাজনাথের বক্তব্যে সবচেয়ে বড় জোর পড়েছে আত্মনির্ভরতার উপর। তিনি বলেছেন, “আমাদের প্রস্তুতি নিজস্ব ভিত্তিতে হতে হবে।” এর মানে হলো, আমদানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় প্রযুক্তি ও উৎপাদন বাড়ানো। ২০১৪ সালে যখন প্রতিরক্ষা উৎপাদন ছিল ৪৬ হাজার কোটি টাকা, আজ তা ১.৫১ লক্ষ কোটি ছাড়িয়েছে। বেসরকারি খাতের অবদান ৩৩ হাজার কোটি, এবং রফতানি ১০ বছর আগে ১ হাজার কোটি থেকে উঠে এসেছে ২৪ হাজার কোটিতে।

২০২৬-এর মার্চের মধ্যে এটা ৩০ হাজার কোটি হবে বলে আশা। এই অগ্রগতির পিছনে ‘অ্যাটম্যানির্ভর ভারত’ এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। রাজনাথ সিং প্রাইভেট সেক্টরকে আহ্বান জানিয়েছেন, “উদ্ভাবন, গবেষণা ও উন্নয়ন, উপাদান উৎপাদন এবং সাপ্লাই চেইন দখল করুন।”

এই লক্ষ্যে সরকার সমান সুযোগ সৃষ্টি করছে, যাতে দেশীয় শিল্প প্রতিরক্ষা খাতকে শক্তিশালী করে। অপারেশন সিঁদুরে দেশীয় অস্ত্রের সাফল্যে ভারতের আন্তর্জাতিক খ্যাতি বেড়েছে, এবং এটাই ভবিষ্যতের মূলমন্ত্র।