বিশেষ অনুরোধ নিয়ে খাড়গের দ্বারস্থ রাজনাথ

দেশের রাজনৈতিক মহলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ (Rajnath Singh) কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়গের (Mallikarjun Kharge) সঙ্গে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে…

Rajnath Singh Seeks Mallikarjun Kharge’s Support for NDA’s Vice Presidential Candidate C.P. Radhakrishnan

দেশের রাজনৈতিক মহলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ (Rajnath Singh) কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়গের (Mallikarjun Kharge) সঙ্গে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে এনডিএ-এর উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী সি.পি. রাধাকৃষ্ণনের প্রতি সমর্থনের জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন। এই সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে এআই-এর একটি প্রতিবেদনে, যা দ্রুত বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্মতির একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে, তবে এটি কতটা সফল হবে, তা এখনো নির্দিষ্ট নয়।

উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পটভূমি
পূর্বে জানা গিয়েছিল যে, গত জুলাই মাসে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধঙ্কড় স্বাস্থ্যকারণে পদত্যাগ করেন। তিনি ২০২২ সালে পদে নিযুক্ত হওয়ার পর মাত্র তিন বছর পরে এই সিদ্ধান্ত নেন, যা রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। ধঙ্কড়ের পদত্যাগের পর এনডিএ-এর পক্ষ থেকে মহারাষ্ট্রের গভর্নর সি.পি. রাধাকৃষ্ণনকে উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যিনি তামিলনাড়ুর একজন সংঘ-পরিচালিত নেতা এবং দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক জীবনে সক্রিয়। এই নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ৯ সেপ্টেম্বর, এবং এর আগে এনডিএ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্মতি গড়ে তুলতে চায়।

   

রাজনাথ সিংহের এই কলটি এই প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি এনডিএ-এর পক্ষে সমর্থন জোগাড়ের একটি চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অনুরোধের প্রতিক্রিয়া এখনো স্পষ্ট হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে কংগ্রেস সমর্থকরা এই ঘটনাকে বিজেপি-এর দুর্বলতার চিহ্ন হিসেবে বর্ণনা করছেন, যেখানে বিজেপি সমর্থকরা এটিকে রাজনৈতিক সৌজন্যের প্রকাশ বলে মনে করছেন।

রাজনৈতিক সম্মতির চ্যালেঞ্জ
ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলীয় সম্মতি গড়ে তোলা সবসময়ই কঠিন হয়ে ওঠে। ১৯৫২ থেকে এ পর্যন্ত মাত্র দু’বারই এই পদে দ্বিপক্ষীয় সমর্থন দেখা গেছে। ২০১৭ সালে এবং ২০২২ সালে এনডিএ-এর প্রার্থীদের বিপক্ষে বিজেপি-বিরোধী দলগুলো নিজেদের প্রার্থী প্রকাশ করেছিল। এই প্রেক্ষাপটে রাজনাথ সিংহের কলটি কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক সংশোধনের একটি চেষ্টা হতে পারে, তবে এটি কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নির্ভর করবে খাড়গের রাজনৈতিক কৌশলের ওপর।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পূর্বে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ-এর প্রার্থীদের বিরোধিতা করার ইতিহাস রয়েছে। ২০২২ সালে মার্গারেট আলভাকে তাদের প্রার্থী হিসেবে প্রকাশ করে জগদীপ ধঙ্কড়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা হয়েছিল, যেখানে ধঙ্কড় ৫২৮ ভোটে বিজয়ী হন। এবারও ইন্ডিয়া জোটের অংশ হিসেবে কংগ্রেস নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে, যা এই সম্মতির চেষ্টাকে জটিল করে তুলবে।

Advertisements

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু ব্যবহারকারী রাজনাথ সিংহের এই পদক্ষেপকে বিজেপি-এর দুর্বলতার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন, যেমন একজন লিখেছেন, “রাজনাথ জি কল করছেন মানে তাদের নিজেদের কাছে আত্মবিশ্বাস নেই।” অন্যদিকে, বিজেপি সমর্থকরা এটিকে রাজনৈতিক সংযোগের একটি ধাপ বলে গ্রহণ করছেন। একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, “সরকার সম্মতি গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, এতে কিছু অস্বাভাবিক নেই।”

রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক প্রভাব
যদি কংগ্রেস এই অনুরোধে সমর্থন প্রদান করে, তবে এটি ভবিষ্যতে দুই বড় দলের মধ্যে সহযোগিতার একটি নতুন দরজা খুলতে পারে। তবে যদি খাড়গ অস্বীকার করেন, তবে এটি নতুন রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সূচনা হতে পারে। সি.পি. রধাকৃষ্ণনের নামটি এখনো বিতর্কের মাঝে রয়েছে, কারণ তিনি এনডিএ-এর মধ্যে কয়েকটি দলের সমর্থন পাননি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নির্বাচনে এনডিএ-এর সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও, সম্মতি না থাকলে রাজনৈতিক ছবি জটিল হয়ে উঠবে।

রাজনাথ সিংহের এই কলটি রাজনৈতিক সম্মতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে, তবে এর ফলাফল নির্ভর করবে কংগ্রেসের রণনীতির ওপর। আজ রাত ১:৪০ ইস্ট-এর সময় পর্যন্ত খাড়গের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভারতের জনগণের জন্য এই নির্বাচন শুধু একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সম্পর্কের দিকনির্দেশক হতে পারে।