“ভোট চুরি না হলে মোদী প্রধানমন্ত্রীই হতেন না”, বিস্ফোরক দাবি রাহুলের

নয়াদিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন পরিকল্পিতভাবে ‘রিগ’ করা হয়েছে৷ বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। শনিবার কংগ্রেসের আইনজীবী সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন,…

Rahul Gandhi claims election rigging

নয়াদিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন পরিকল্পিতভাবে ‘রিগ’ করা হয়েছে৷ বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। শনিবার কংগ্রেসের আইনজীবী সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “লোকসভা নির্বাচন রিগড হতে পারে, এখন বলছি, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন রিগিং হয়েছে (Rahul Gandhi claims election rigging)। আমাদের কাছে এখন তথ্যপ্রমাণ আছে।”

রাহুলের দাবি, একাধিক কেন্দ্রের ভোটার তালিকা বিশ্লেষণ করে ‘ভুয়ো ভোটার’-এর প্রমাণ মিলেছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “শুধু একটি লোকসভা কেন্দ্রে ৬.৫ লক্ষ ভোটারের মধ্যে ১.৫ লক্ষই ভুয়ো। সেই ভোটারদের নামে ভোট পড়েছে।” রাহুল আরও দাবি করেন, এই ভুয়ো ভোটার এবং বেআইনি নির্বাচনী কৌশলের উপর নির্ভর করেই বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তাঁর কথায়, “ওরা যদি ১৫–২০টা আসন কম পেত, মোদীজি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না।”

   

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলে রাহুল বলেন, “দেশে নির্বাচন কমিশন মৃত। এটা একটা মৃত প্রতিষ্ঠান। এটা আর স্বাধীন প্রতিষ্ঠান নয়।”

‘২০১৪ থেকেই সন্দেহ, মোহভঙ্গ শুরু মহারাষ্ট্র থেকে’

রাহুল জানান, তাঁর সন্দেহের শুরু ২০১৪ সাল থেকেই। বিশেষ করে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে প্রথম প্রশ্ন উঠেছিল। “রাজস্থানে, মধ্যপ্রদেশে, গুজরাটে কংগ্রেস একটি আসনও পেল না—এটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য লাগছিল। তখনই সন্দেহ জেগেছিল, কিছু একটা ভুল হচ্ছে।”

তবে বাস্তব ঘনিয়ে আসে মহারাষ্ট্রে, বলে জানান রাহুল। “লোকসভা নির্বাচনে আমরা জিতেছিলাম। কিন্তু চার মাস পর বিধানসভায় আমাদের কার্যত নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়। তখন থেকেই আমরা ভোটার তালিকা ও ফলাফল খতিয়ে দেখা শুরু করি।”

তিনি আরও বলেন, “লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের মাঝের সময়ে শুধু মহারাষ্ট্রেই ১ কোটির বেশি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন। সেই ভোটগুলোর বড় অংশই বিজেপির ঝুলিতে গেছে। এখন আর কোনও সন্দেহ নেই—আমাদের কাছে প্রমাণ আছে।”

Advertisements

নির্বাচন কমিশনের পাল্টা প্রতিক্রিয়া: ‘বেসলেস, দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ’

রাহুল গান্ধীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার নির্বাচন কমিশন কড়া বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, এই ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন। কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই ধরনের অভিযোগকে নির্বাচন কমিশন প্রত্যেক দিনই উপেক্ষা করে, এবং সততার সঙ্গে কাজ করা অফিসারদের বলছে এই ধরনের হুমকিকে গুরুত্ব না দিতে।”

কমিশন আরও জানিয়েছে, “যে অফিসাররা স্বচ্ছভাবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁরা এই ধরনের রাজনৈতিক চাপের মধ্যে না পড়ে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে চলুন—এটাই আমাদের বার্তা।”

রাজনৈতিকভাবে সংঘাতময় সময়ে বিতর্ক তুঙ্গে

২০২৪-র লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই বিরোধীদের একাংশ নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তবে রাহুল গান্ধীর এই সর্বসমক্ষে আক্রমণ এবং “ডেটা ও ডকুমেন্ট প্রমাণ”-এর দাবি নতুন করে রাজনৈতিক মেরুকরণ তৈরি করবে বলেই মত বিশ্লেষকদের।

এখন দেখার, এই অভিযোগের ভিত্তিতে কংগ্রেস কী আইনি পদক্ষেপ করে এবং দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা কতটা নাড়া খায়।