“সময় লাগবে, কিন্তু ধরবই”, ভোট চুরি নিয়ে বিজেপি ও কমিশনকে হুঁশিয়ারি রাহুলের

লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘চুরির’ অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শুক্রবার বেঙ্গালুরুর এক জনসভা থেকে রাহুল সরাসরি…

rahul gandhi accuses ec

লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘চুরির’ অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শুক্রবার বেঙ্গালুরুর এক জনসভা থেকে রাহুল সরাসরি অভিযোগ করেন, “নির্বাচন কমিশন একটি বড় অপরাধ লুকোচ্ছে। (rahul gandhi accuses ec)” তাঁর দাবি, কমিশন ইলেকট্রনিক ভোটার তালিকা ও বুথে তোলা ভিডিও প্রকাশ না করে কার্যত বিজেপির ভোট কারচুপি আড়াল করছে।

রাহুল গান্ধীর কথায়, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ‘এক ব্যক্তি, এক ভোট’-এর সাংবিধানিক নীতিই লঙ্ঘন হয়েছে। তিনি জানান, ভোটের আগে কংগ্রেসের নিজস্ব সমীক্ষায় কর্ণাটকের অন্তত ১৬টি আসনে এগিয়ে ছিল দল। কিন্তু ফল হয়েছে সম্পূর্ণ বিপরীত, মাত্র ৯টি আসনে জয়। তখনই সন্দেহ জাগে, এবং কংগ্রেস তদন্তে নামে।

   

ছয় মাসের তদন্ত, বিস্ফোরক দাবি

রাহুল জানান, বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের মহাদেবপুরা বিধানসভা এলাকায় ছয় মাস ধরে কংগ্রেসের তদন্ত চালায়। সেই তদন্তেই ‘১০০ শতাংশ ভোট কারচুপির প্রমাণ’ মিলেছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, অন্তত এক লক্ষ ভোট “চুরি” হয়েছে। কীভাবে?

  • একাধিক ভোটার তালিকায় একই ব্যক্তি
  • ভুয়ো বা অপ্রামাণিক ঠিকানা
  • এক ঠিকানায় শতাধিক ভোটারের bulk রেজিস্ট্রেশন
  • ফার্স্ট-টাইম ভোটারদের জন্য বরাদ্দ ফর্ম-৬-এর অপব্যবহার
  • অস্পষ্ট ছবি বা ভুয়ো পরিচয়
  • এমনকি, কিছু ভোটার একাধিক রাজ্যে ভোট দিয়েছেন— এমন অভিযোগও তোলেন রাহুল।

নির্বাচন কমিশনকে ঘিরে বিস্ফোরক অভিযোগ

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধী। বলেন, কংগ্রেস ভোটের পর ভিডিও ফুটেজ ও ইলেকট্রনিক ভোটার তালিকা চেয়েছিল। কিন্তু তা নাকচ করা হয়। পরে আইন বদলে ৪৫ দিনের মধ্যে ভোটের ভিডিও মুছে ফেলার বিধান আনা হয়, এই অভিযোগও করেন তিনি।

Advertisements

তিনি আরও দাবি করেন, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান-সহ একাধিক রাজ্যের ভোটার তালিকার ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে কমিশন, যাতে মানুষের চোখে না পড়ে কীভাবে তালিকা বদলানো হয়েছে।

রাহুলের আক্রমণ, “নির্বাচন কমিশন আর বিজেপি মিলে কর্নাটকের লোকসভা ভোট চুরি করেছে। এটা কর্নাটকবাসীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধ।” তিনি রাজ্য সরকারকে আহ্বান জানান, ভুয়ো নাম তোলার জন্য যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি, “আপনারা লুকিয়ে থাকতে পারবেন না, আপনাদের জবাব দিতে হবেই।”

মোদী সরকারের দিকেও সুর চড়ান কংগ্রেস নেতা

ভোট কারচুপির প্রসঙ্গ টেনে মোদী সরকারের উদ্দেশে রাহুল বলেন, “যদি দেশের সংবিধানে আঘাত করেন, আমরাও আপনাদের আঘাত করব। এটা দেশের গলা।” তিনি বলেন, এই লড়াই শুধু কংগ্রেসের নয়, দেশের গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই। এবং কংগ্রেসের প্রতিটি কর্মী শেষ পর্যন্ত লড়বে। “সময় লাগবে, কিন্তু আমরা আপনাদের ধরবই,” — এই বার্তাই ছুড়ে দেন রাহুল গান্ধী।