পুরী(Puri),ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্বসম্পন্ন শহর, বর্তমানে এক নবরূপে বদলে যাচ্ছে। পুরী(Puri),শহরের আধুনিকীকরণের কাজ এবং পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশের জন্য একাধিক প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রধান লক্ষ্য হল বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করা এবং স্থানীয় অর্থনীতির উন্নতি ঘটানো। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পুরীতে নির্মিত হতে যাচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যা পুরো অঞ্চলের পর্যটন ব্যবসা এবং অর্থনৈতিক উন্নতির পথ প্রশস্ত করবে।
ওড়িশা সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই বিমানবন্দর নির্মাণের লক্ষ্য বিদেশি পর্যটকদের আরও বেশি আকৃষ্ট করা। পুরী(Puri),সমুদ্র সৈকত, ঐতিহ্যবাহী শ্রীজগন্নাথ মন্দির এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক দিকগুলি বিদেশি পর্যটকদের কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এমনকি পুরী শহরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের হোটেলগুলিও খোলার পরিকল্পনা রয়েছে, যা স্থানীয় অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পর্যটন খাতের উন্নয়ন এবং বিদেশি পর্যটকদের বৃদ্ধি ওড়িশা সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য।
২০২১-২২ অর্থবর্ষে, পুরী(Puri) থেকে পর্যটন ব্যবসার মাধ্যমে ৩,৭৩৫ কোটি টাকার আয় হয়েছে, যার মধ্যে ৯.৪৬ কোটি টাকা এসেছে বিদেশি পর্যটকদের থেকে। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করতে চায় ওড়িশা সরকার, এবং সেই জন্য ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পুরী শহরের হোটেলগুলির অধিকাংশই বছরের বেশিরভাগ সময় বুকড থাকে, যা এই অঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। বহরমপুরের ব্যবসায়ী হিমাদ্রি দাসের মতেও, পুরীতে বর্তমানে সারা বছর ধরে পর্যটক সমাগম হয়, যা পর্যটন ব্যবসার জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।
শ্রীজগন্নাথ মন্দিরের চারপাশে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও পুরী শহরের পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করছে। মন্দির চত্বরে নতুন অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে এবং পুরানো, অজানা রাস্তা ও দোকানপাট সরানো হয়েছে। প্রায় ৬০০ বেআইনি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এই নির্মাণ কাজের জন্য ১৫.৬৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, যা কেন্দ্রীয় সরকারের জমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী করা হয়েছে। জমির মালিকদের জন্য ক্ষতিপূরণও প্রদান করা হয়েছে, এবং পুরনো জমির মালিকদের জন্য অতিরিক্ত ৩৩ লক্ষ টাকা সহায়তাও দেওয়া হয়েছে।
পুরী(Puri) শহরের এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলি স্থানীয় জনগণের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে এবং এটি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া, নতুন বিমানবন্দর ও অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে, পুরী শুধু একটি ধর্মীয় কেন্দ্রই নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন গন্তব্যে পরিণত হতে চলেছে।