১৯৮৮-র পর এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি পাঞ্জাব। ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ জন! বন্যার জেরে বিধ্বস্ত প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের ২৩ টি জেলাই। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, সুতলেজ, বিপাশা, রাভী নদীর জলোচ্ছ্বাসে এবং হিমাচল-কাশ্মীরে প্রবল বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত পাঞ্জাবের প্রায় ১৬৫৫ টি গ্রাম। প্রায় ১.৪৮ লক্ষ হেক্টর ফসল ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেইসঙ্গে খোয়া গেছে গবাদি পশুও।
জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বহু বাড়ি। চাষের জমিতে ৮-১০ ফিট উঁচু জমা জল। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নৌকো করে যাচ্ছেন মানুষজন। আগামীকাল পাঞ্জাবের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তিনি বলেন, “পাঞ্জাবের বন্যা পরিস্থিতির উপর নজরভ্রাখছে কেন্দ্র সরকার। আমি কৃষক ভাইবোনদের বলতে চাই, রাজ্যসরকারের পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারও মানুষের পাশে রয়েছে। আমি নিজে পাঞ্জাব গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব”।
তিনি আরও বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেছি। রাজ্যের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিট্টুজির সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে।” উল্লেখ্য, ভয়াবহ বন্যায় সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর, পাঠানকোট, ফাজিলকা, কাপুরথলা, ত্রাণ তারান, ফিরোজপুর, হোশিয়ারপুর এবং অমৃতসর। বন্যা কবলিত মানুষদের সাহায্যে একাধিক রিলিফ ক্যাম্প তৈরি করেছে প্রশাসন।
অনেক গ্রামবাসী নিজেদের বাড়ির ছাদ অথবা উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। ফিরোজপুরের বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার ক্ষয়ক্ষতি জরিপ করেছে এবং সরকার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে। তিনি বলেন, “যখনই দেশে কোনও সমস্যা দেখা দিয়েছে, সাহায্যে এগিয়ে গেছে পাঞ্জাব। এখন পাঞ্জাবের দুর্দিনে সমগ্র দেশ পাশে দাঁড়াবে”।
বৃহস্পতিবার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পাঞ্জাব যাবেন আপ-এর জাতীয় কনভেনর অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দলীয় সূত্রে খবর, রিলিফ ক্যাম্পের অবস্থা খতিয়ে দেখে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন তিনি। সরকারি সংস্থা, NGO এবং শিখ অর্গানাইজেশনের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।