পাঞ্জাবে বন্যা, ধাক্কা খেল বাসমতী চালের রফতানি

গত মাসে পাঞ্জাবে আছড়ে পড়া বিধ্বংসী বন্যা এক অভূতপূর্ব ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন রেখে গেছে। ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে, আর উর্বর কৃষিজমি জলের…

Punjab Flood Crisis Puts India’s Basmati Export Market in Jeopardy

গত মাসে পাঞ্জাবে আছড়ে পড়া বিধ্বংসী বন্যা এক অভূতপূর্ব ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন রেখে গেছে। ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে, আর উর্বর কৃষিজমি জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে। অস্বাভাবিক মৌসুমি বর্ষণে সৃষ্ট এই বন্যা পাঞ্জাবের কৃষি ও অর্থনীতিকে এক গভীর সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

ভারতের অন্যতম প্রধান কৃষি রাজ্য হিসেবে পরিচিত পাঞ্জাব দেশের খাদ্যশস্য উৎপাদনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ধান, গম, ডাল ও বিশেষত বাসমতী চালের জন্য এই রাজ্য সুপরিচিত। পাঞ্জাব স্টেট ওয়্যারহাউজিং কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের প্রায় ৪.২ মিলিয়ন হেক্টর (৪২ লক্ষ হেক্টর) আবাদযোগ্য জমি রয়েছে এবং প্রায় অর্ধেক মানুষ সরাসরি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এই পরিস্থিতিতে বন্যার প্রভাব শুধুমাত্র তাত্ক্ষণিক নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করছে।

   

পাঞ্জাবের অর্থনীতির অন্যতম ভরকেন্দ্র কৃষি। রাজ্যটি শুধুমাত্র ভারতের অন্নভাণ্ডার নয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যশস্য রফতানির ক্ষেত্রেও শীর্ষে। বিশেষত বাসমতী চালের (basmati Rice) রফতানি রাজ্যের আয়ের বড় উৎস। এবারের বন্যা সেই খাতেও বড় ধাক্কা দিতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ী মহলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে আন্তর্জাতিক বাজারে বাসমতী চালের সরবরাহ কমে গেলে দাম বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ভারতীয় রফতানিকারকদের সুনাম ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের বন্যায় যে পরিমাণ কৃষিজমি জলমগ্ন হয়েছে, তার আয়তন লন্ডন এবং নিউ ইয়র্ক শহরের সম্মিলিত আয়তনের সমান। এত বিশাল পরিসরে জমি প্লাবিত হওয়া রাজ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। শুধুমাত্র ধান নয়, অন্যান্য ফসল যেমন ভুট্টা, ডাল এবং শাকসবজি চাষের জমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisements

রাজ্যের কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্যার জেরে শুধু ফসল নষ্ট নয়, জমির উর্বরতা কমে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এত দীর্ঘ সময় জলাবদ্ধতার ফলে মাটির গুণগত মান নষ্ট হতে পারে, যার প্রভাব আগামী বছরের ফসল উৎপাদনেও পড়বে। এ কারণে কৃষকদের পুনর্বাসন এবং জমি পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি।