পুলওয়ামা থেকে গ্রেফতার উমরের মা-ভাই

pulwama-arrest-red-fort-metro-blast

নয়াদিল্লি: দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে ১০ নভেম্বরের সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর থেকে তদন্তের গতি যেন হঠাৎ ত্বরান্বিত হয়েছে। যে গাড়িটি আগুনের গোলা হয়ে উড়ে গিয়েছিল, তার চালককে এখন জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ডা. মোহাম্মদ উমর, পুলওয়ামার একজন চিকিৎসক। পুলিশের ধারণা, এটি ছিল একটি সেলফ-ডিটোনেশন, অর্থাৎ আত্মাহুতি দিয়ে হামলা। আর আজ, ১১ নভেম্বর সকালে, তদন্তের নতুন মোড় এসেছে।

Advertisements

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ উমরের মা শাহীমা বানো এবং তার দুই ভাই আশিক আহমেদ এবং জহুর আহমেদকে গ্রেফতার করেছে। পুলওয়ামায় তাদের বাড়িতে হানা দিয়ে এই অভিযান চালানো হয়েছে। এই গ্রেফতার নিশ্চিত করেছে যে, জঙ্গি নেটওয়ার্কের সূত্রগুলো এখনও পুরোপুরি ছিন্ন হয়নি।উমরের পরিবারের এই সদস্যরা কী জানতেন, কী জড়িত ছিলেন এই প্রশ্নগুলো এখন তদন্তকারীদের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ।

   

লালকেল্লা মসজিদের পাশে ৩ ঘণ্টা পার্কিং-এ i20, রহস্যজনক ভাবে সরতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণলালকেল্লা মসজিদের পাশে ৩ ঘণ্টা পার্কিং-এ i20, রহস্যজনক ভাবে সরতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ

সূত্রমতে, পুলিশ তাদের থেকে ১২টি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে, যা নেটওয়ার্কের যোগাযোগের ক্লু দিতে পারে। উমরের মা শাহীমা বানোকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল, কিন্তু তথ্যপ্রাপ্তির পর গ্রেফতারের পথে এগিয়েছে তদন্ত।

ভাইদেরও একই অবস্থা তারা উমরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন কি না, সেই বিস্ফোরক সামগ্রী সংগ্রহে কোনো সাহায্য করেছিলেন কি না, এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “পরিবারের সদস্যরা অনেক সময় অজান্তে বা জেনে-বুঝে নেটওয়ার্কের অংশ হয়ে ওঠে।

Advertisements

আমরা কোনো কিছুকে ছাড়ব না।” এই গ্রেফতারের খবর ছড়াতেই পুলওয়ামা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা তাদের জীবনকে আরও অন্ধকার করে তুলছে।এই ঘটনার পটভূমি ফিরে তাকালে মনে পড়ে সেই রক্তাক্ত সন্ধ্যা। ১০ নভেম্বর, বিকেল ৬টা ৫২ মিনিট। লালকেল্লা মেট্রোর গেট নম্বর ১-এর কাছে একটি হুন্ডাই আই-টোয়েন্টি গাড়ি হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়।

চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আগুন, ধোঁয়া আর ধ্বংসাবশেষ। পাশের তিনটি গাড়ি পুড়ে ছাই। রাস্তায় মানুষের চিৎকার, দেহাংশ আর ভাঙা কাচের টুকরো। প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা ৯-১৩ বলা হচ্ছে, আহত ২০-এর বেশি। এলএনজেপি হাসপাতালে এখনও চিকিৎসা চলছে। ফরেনসিক রিপোর্ট বলছে, গাড়ির ভিতরে ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, জ্বালানি তেল এবং ডেটোনেটরের মিশ্রণ—একটি শক্তিশালী আইইডি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, উমর মুখোশ পরা অবস্থায় গাড়িটি তিন ঘণ্টা আগে পার্ক করে রেখে চলে যান।

পরে ফিরে এসে ডেটোনেট করেন।উমরের সঙ্গে যুক্ত ছিল ফরিদাবাদের সেই ‘হোয়াইট কলার’ জঙ্গি মডিউল। বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগেই হরিয়ানা এবং জে-কে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেফতর করে। তাদের মধ্যে ডা. মুজাম্মিল শাকিল এবং ডা. আদিল রাথারের নাম উল্লেখযোগ্য। তাদের কাছ থেকে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক, আইইডি তৈরির সরঞ্জাম, অ্যাসল্ট রাইফেল সহ অনেক কিছু উদ্ধার হয়। উমর ছিলেন এই মডিউলের ক্লোজ অ্যাসোসিয়েট।

তিনি ফরিদাবাদের আল ফালাহ মেডিকেল কলেজে চাকরি করতেন। পুলিশ বলছে, ফরিদাবাদের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে উমর আতঙ্কিত হয়ে তাড়াহুড়ো করে হামলা চালিয়ে দেন। গাড়িটির মালিকানা বারবার বদলেছে মোহাম্মদ সালমান থেকে নাদিম, তারপর রয়্যাল কার জোন, তারিখ এবং শেষে উমরের হাতে। এই চেইনটিও তদন্তের অংশ।