ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে আসন্ন জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি (Congress) জোটের প্রতিশ্রুতিতে রাজ্যের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক গুলাম আহমেদ মির সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, ঝাড়খণ্ডে তাদের জোট সরকার গঠন করলে রাজ্যে বসবাসকারী সব পরিবারকে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকি দেওয়া হবে। তার এই ঘোষণার পরই রাজনীতিতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে, বিশেষত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে।
মিরের মন্তব্যের পর থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য স্তরের নেতারা আক্রমণ করতে শুরু করেছেন বিরোধী জোটকে। মির চন্দ্রপুরার একটি জনসভায় ঘোষণা করেছেন যে, “নতুন সরকার গঠনের পরেই ঝাড়খণ্ডে গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ৪৫০ টাকা কমিয়ে দেওয়া হবে। এই সুবিধা হবে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলের জন্য। অনুপ্রবেশকারী বা অন্য যে কারও জন্য।”
মহারাষ্ট্রে অমিত শাহের হেলিকপ্টার-ব্যাগ তল্লাশি কমিশনের
বিজেপি বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, এই ঘোষণার পর সরাসরি কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। মোদী শুক্রবার এক সভায় বলেছেন, “কংগ্রেস দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিলি খেলতে চাইছে।” তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন যে, কংগ্রেসের এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়টি ঝাড়খণ্ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে।
বিজেপির পক্ষ থেকে বারবার এই অভিযোগ আনা হয়েছে যে, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের কারণে রাজ্যের জনসংখ্যা বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হচ্ছে এবং এতে বিশেষ করে জনজাতি জনগণের সংখ্যা কমছে। বিজেপির নেতারা বলেছেন, “ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ফলে রাজ্যের জনবিন্যাসের চরিত্র বদলে যাচ্ছে।” বিরোধী মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’ তথা কংগ্রেস, জেএমএম ও আরজেডি অবশ্য এই সমস্ত আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে।
ট্যাব-কাণ্ডে প্রশাসন ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’, ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী!
গুলাম আহমেদ মিরের মন্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করার অভিযোগ তুলে কংগ্রেস বলেছে, “কোনো দেশের নাগরিককে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয় এবং সব নাগরিককে সমানভাবে সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।” ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকেই এই বিতর্কটি তুঙ্গে পৌঁছেছে। বিজেপির নেতারা বলেন, “এটি শুধু রাজনীতির বিষয় নয়, বরং দেশের সার্বভৌমত্বের বিষয়ও।” তারা এই বিষয়কে সামনে এনে ঝাড়খণ্ডে তাদের নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে।
ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোট ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ৪৩টি বিধানসভা আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছে। ২০ নভেম্বর বাকি ৩৮টি আসনে ভোট হবে এবং গণনা হবে ২৩ নভেম্বর। এদিকে সেই রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এখন সেখানে গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তুকির ঘোষণা এবং বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলেছে। এবারের নির্বাচনে সেই রাজ্যের ভবিষ্যত নিয়ে দুটি শিবিরের মধ্যে তুমুল রাজনৈতিক লড়াই চলছে।
দিল্লি কংগ্রেসে বড় ধাক্কা, তিনবারের বিধায়ক বীর সিং ধিংগান যোগ দিলেন কেজরিওয়ালের দলে
সেখানে একদিকে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোটের প্রতিশ্রুতি, অন্যদিকে বিজেপির আগ্রাসী অবস্থান এবং বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের অভিযোগ ঘিরে ভোটের মাঠে উত্তেজনা বিরাজ করছে।