পাটনা: বিহারের রাজনীতিতে বড় ধাক্কার পর প্রতীকী নীরবতার পথ বেছে নিলেন জনসুরাজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত কিশোর। বিধানসভা নির্বাচনে একটিও আসন না পাওয়ার দায় কাঁধে নিয়ে বৃহস্পতিবার তিনি দিনের পর দিন যেখান থেকে নতুন রাজনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন—সেই ভিটিহারওয়া গান্ধী আশ্রমেই পালন করলেন মৌনব্রত। তাঁর ভাষায়, এটি “প্রায়শ্চিত্ত”, এবং একই সঙ্গে “আত্মসমালোচনার মুহূর্ত”—কেন তিনি ভোটারদের কাছে নিজের ‘ব্যবস্থাপরিবর্তনের’ কথা যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে পারেননি, সেই প্রশ্নের নীরব প্রতিফলন।
নীতিশের শপথ
এই মৌনব্রতের দিনই পাটনার ঐতিহাসিক গান্ধী ময়দানে দশমবারের জন্য শপথ নিলেন নীতীশ কুমার—বিহারের রাজনীতিতে এক নজিরবিহীন অধ্যায়ের সূচনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ-সহ এনডিএর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন সেই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে। রাজনৈতিক উত্তাপের সেই মঞ্চের পাশেই যেন বিপরীত মেরুর এক দৃশ্য—আলো, শপথ, শ্লোগানের বাইরে নীরব আত্মপর্যালোচনায় নিমগ্ন প্রশান্ত কিশোর।
পি’কে-র খেদ Prashant Kishor Silent Fast
সপ্তাহের শুরুতে সাংবাদিকদের সামনে পিকে স্বীকার করেছিলেন, “বিহারের মানুষকে বোঝাতে পারিনি কোন ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সুযোগ দেওয়া উচিত। ভুল হতে পারে, অপরাধ করিনি।” তাঁর কথায়, এখন সংকল্প একটাই—দু’গুণ পরিশ্রম করে উদ্যোগকে আরও মজবুত করা, এবং “বিহার বদলের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত পিছিয়ে না আসা।”
দলের প্রথম নির্বাচনী যাত্রায় জনসুরাজের শূন্য ফলাফলের বিপরীতে এনডিএর জয়ের জোয়ার—বিজেপি ৮৯ আসন নিয়ে বৃহত্তম দল, জেডিইউও খুব কাছেই ৮৫-এ। ফলে ভোটদৃশ্যপটে এনডিএ আবারও শক্তিশালী অবস্থান দখল করেছে।
১৯৭৪-এ ক্রান্তির ডাক
এদিনের শপথস্থল গান্ধী ময়দানও তার ঐতিহাসিক আবহে যেন আরও প্রাসঙ্গিক—যেখান থেকে ১৯৭৪-এ জয়প্রকাশ নারায়ণের ‘সম্পূর্ণ ক্রান্তির ডাক বদলে দিয়েছিল ভারতের রাজনীতির গতিপথ। আর একই দিনে, অন্য এক প্রান্তে আশ্রমের নিস্তব্ধতায় প্রশান্ত কিশোরের নীরবতা যেন রাজনৈতিক শঙ্খধ্বনির বদলে দিল ভিন্ন সুর—ব্যর্থতায় বিরতি, কিন্তু লড়াইয়ে নয়; সংঘর্ষের আগে এক শান্ত, গভীর শ্বাস।


