বৈষ্ণদেবী মেডিক্যালে মুসলিম তোষণ! অগ্নিগর্ভ জম্মু-কাশ্মীর

vaishno-devi-medical-college-seat-allocation-controversy

জম্মু: জম্মু ও কাশ্মীরের নতুন শ্রী মাতা বৈষ্ণোদেবী শ্রাইন বোর্ড মেডিকেল কলেজে আসন বণ্টন নিয়ে বড় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্রীয় বজরং দল-এর সভাপতি প্রকাশ শর্মা অভিযোগ তুলেছেন যে, কলেজটির সাম্প্রতিক ভর্তি তালিকায় মুসলিম প্রার্থীদের জন্য ৪২টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছে, যেখানে হিন্দু প্রার্থীদের জন্য মাত্র ৭টি এবং শিখ প্রার্থীদের জন্য ১টি আসন রাখা হয়েছে।

Advertisements

এই বৈষম্যমূলক বণ্টনের প্রতিবাদে বজরং দলের সভাপতি বলেন, “এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত। বৈষ্ণোদেবী শ্রাইন বোর্ড একটি হিন্দু ধর্মীয় ট্রাস্ট, অথচ সেখানে হিন্দু ছাত্রদের জন্য প্রায় কোনো সুযোগই রাখা হয়নি। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।” তিনি লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে (LG) অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানান, এবং সতর্ক করে দেন যে, যদি প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আগামী সপ্তাহে সারা রাজ্যে বৃহত্তর গণআন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

   

‘ভোট চুরি’ আছিলা মাত্র! রাহুলের অভিসন্ধি ‘অন্য’: বিস্ফোরক দাবী মালব্যর

প্রকাশ শর্মা বলেন, “আমরা কারও ধর্মের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু যদি একটি হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকা মেডিকেল কলেজে হিন্দুদেরই সুযোগ না থাকে, তাহলে সেটা প্রশ্ন তোলে প্রশাসনিক ন্যায্যতার ওপর।” জম্মু অঞ্চলের বহু হিন্দু সংগঠনও এই অভিযোগকে সমর্থন করে বলেছে যে, বৈষ্ণোদেবী বোর্ড সর্বদা ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রেখেছে, কিন্তু এই ধরনের অনুপাতহীন বণ্টন ‘অযৌক্তিক ও পক্ষপাতদুষ্ট’।

অন্যদিকে, শ্রাইন বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে যে, ভর্তি প্রক্রিয়াটি জাতি বা ধর্মের ভিত্তিতে নয়, বরং মেধার ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের দাবি, আবেদনকারীদের নাম এবং ধর্ম ভর্তি প্রক্রিয়ার সময় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। তবে প্রকাশ শর্মা প্রশ্ন তুলেছেন, “যদি ভর্তি সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে হয়, তাহলে এমন অসম অনুপাত কেন?”

Advertisements

রাজনৈতিক মহলেও এই ঘটনাকে ঘিরে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিজেপির স্থানীয় নেতারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন বলে জানা গেছে। এক বিজেপি মুখপাত্র বলেন, “আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। যদি আসলেই কোনো ধরনের বৈষম্য হয়ে থাকে, তাহলে তা সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্স এই ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে বজরং দলের বিরুদ্ধে। তাদের মতে, “ভর্তি প্রক্রিয়ায় ধর্ম টেনে আনা অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধর্ম নয়, মেধার মাপকাঠিতেই বিচার করা উচিত।”

তবে স্থানীয় মানুষের একাংশ বলছেন, বৈষ্ণোদেবী বোর্ডের নামেই যদি কলেজটি চলে, তবে হিন্দু সম্প্রদায়েরও সমান সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত। এখন চোখ সবাই রেখেছে রাজ্য প্রশাসনের দিকে LG অফিস এই অভিযোগে কী পদক্ষেপ নেয়, তাই দেখার বিষয়। এই ঘটনা জম্মু-কাশ্মীরের সামাজিক ও ধর্মীয় ভারসাম্যের প্রশ্নকে আবার সামনে নিয়ে এসেছে। প্রশাসন যদি দ্রুত স্বচ্ছ ব্যাখ্যা না দেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।