হেরে যাওয়া মুকুটকে এখনই মাথা থেকে নামাতে নারাজ মমতা! আরও গুরুত্ব বাড়ছে মুকুটমণির?

লোকসভা নির্বাচনের আগেই (Mukut Mani Adhikari) রানাঘাটের বিজেপি শিবিরকে বিড়ম্বনায় ফেলে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে রানাঘাটের ঘাসফুল শিবিরের…

লোকসভা নির্বাচনের আগেই (Mukut Mani Adhikari) রানাঘাটের বিজেপি শিবিরকে বিড়ম্বনায় ফেলে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে রানাঘাটের ঘাসফুল শিবিরের চোখের মণি হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী (Mukut Mani Adhikari)। পেয়েছিলেন লোকসভায় লড়বার টিকিটও।

কিন্তু রানাঘাটের আমজনতার নয়নের মণি (Mukut Mani Adhikari) হওয়াটা এবারের মত সম্ভব হল না তাঁর পক্ষে। যে মতুয়া ভোট ব্যাংকের অঙ্কে তাঁকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল থিঙ্কট্যাঙ্ক, সেই অঙ্ক অনেকটাই মেলেনি। রানাঘাট লোকসভার প্রায় প্রতিটি বিধানসভায় চোখে পড়ার মতো লিড পেয়েছে বিজেপি! ফলে স্বভাবতই মুকুটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তৃণমূলের অন্দরমহলে।

   

কিন্তু সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে কালীঘাটের নিজের বাসভবনে বিভিন্ন জেলা নেতৃত্বদের সঙ্গে বৈঠকে রানাঘাট নিয়ে কার্যত উল্টো সুরে কথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের! যেখানে খারাপ ফলাফল হওয়া জেলার নেতারা রীতিমতন বকা খেয়েছেন মমতার কাছে, সেখানে হেরে গিয়েও লড়াকু মানসিকতার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন মুকুটমণি। সেই সঙ্গে তাঁর গুরুত্বও বাড়াবার ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা।

দল বদলেও ‘মুকুট’ পরা হল না মুকুটমণির

কিন্তু কেন এই উল্টো সুর মমতার? তৃণমূল সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, হেরে গেলেও মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে মুকুটমণির। সেই প্রভাবকে আসন্ন উপনির্বাচন এবং ২০২৬-এর বিধানসভায় কাজে লাগাতে মরিয়া তৃণমূল শিবির। কিন্তু শুধুই কি মতুয়া অঙ্কতে এই সিদ্ধান্ত? নাকি এর পিছনে রয়েছে আরও বড় কোনও বিষয়?

তৃণমূল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মুকুটমণির যোগদানের পর রানাঘাট সহ বিস্তীর্ণ অংশে বিজেপির বিরুদ্ধে একজন তরুণ, দাপিয়ে কাজ করার মানসিকতাসম্পন্ন নেতার যে অভাব তৃণমূলকে দীর্ঘদিন ধরে ভোগাচ্ছিল, সেই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে বলে মনে করছে উচ্চ নেতৃত্ব। লোকসভাতে হার-জিত দিয়ে যার তুলনা করাটা নিতান্তই বোকামি হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

অপরদিকে সারাবছর একাধিক জনসেবামূলক কাজের সঙ্গে নাম জড়িয়ে থাকে মুকুটমণি অধিকারীর, যা আদতে তৃণমূলকেই বাড়তি সুবিধা দেবে বলে মনে করছে উচ্চ নেতৃত্ব। জনসংযোগ এবং নেতৃত্বের দিক থেকেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার রানাঘাটের জন্য মোক্ষম ওষুধ হতে পারেন খোদ ডাক্তারবাবু মুকুটমণি অধিকারী।

মিলতে চলেছে মমতার ভবিষ্যতবাণী? সরকার গঠন করলেও NDA-তে অসন্তোষ বাড়ছে

এছাড়া বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘদিন ঘর করার সুবাদে বিজেপির স্থানীয় সংগঠন এবং তার শক্তি থেকে দুর্বলতা সবই হাতের তালুর মতো চেনেন তিনি। ফলে অদূর ভবিষ্যতে সুযোগ এবং সময় পেলে পদ্মশিবিরেও ঘাসফুল ফোটানো যাবে তাকে দিয়ে, এমনটাই তৃণমূলের উপরমহলের অভিমত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ২১-এর বিধানসভায় সবুজ ঝড়ের মধ্যেও জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন, ফলে সেই অভিজ্ঞতাও আগামী দিনে তৃণমূলকেই লাভ দেবে বলে মনে করছে জোড়াফুল শিবির।

যদিও কালীঘাটের এই রুদ্ধদ্বার সাংগঠনিক বৈঠক নিয়ে মুখ খোলেননি তৃণমূলের ছোট-বড় কোনও নেতাই। কিন্তু যেটা মনে করা হচ্ছে হেরে যাওয়া মুকুটকে মাথা থেকে এখনই নামাতে নারাজ মমতা। সাম্প্রতিক সময়ে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার নয়া গেম প্ল্যান দেখা যাচ্ছে বঙ্গ রাজনীতিতে, তাতে তৃণমূলের নতুন বাজি হতে চলেছেন কি মুকুটমণি?

দিল্লি সামলে এবার অন্ধ্র-অস্বস্তি চন্দ্রবাবুর! বড় দাবি টিডিপি-সঙ্গী পবন কল্যাণের

সেই প্রশ্ন যেমন দেখা দিচ্ছে, সেই সঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অদৃশ্য হাত মাথার ওপর থাকায় হেরে গিয়েও সেফ জোনে থেকে গুরুত্ব বাড়ছে কিনা মুকুটমণির তাই নিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে খোদ তৃণমূলের অন্দরমহলেই!