কলকাতা: শনিবার ৪০ হাজার লোক জড়ো করে বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করলেন সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Taslima Nasreen advice to Humayun Kabir)। এই ইস্যুতেই আবারও সরব লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে হুমায়ূনকে মসজিদের জায়গায় গোলাপ বাগান বানানোর উপদেশ দিয়েছেন।
তসলিমা তার পোস্টে বলেছেন ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পরে মুসলিমদের ৫ একর জমি দেওয়া হয়েছিল। কথা ছিল সেখানে মসজিদ হবে। তসলিমা তখন বলেছিলেন সেই জমিতে আধুনিক একটি হাসপাতাল হোক। কিন্তু সময় বয়ে গিয়েছে নদীর স্রোতের মত, তবুও হাসপাতাল বা মসজিদ কিছুই তৈরী হয়নি সেই জমিতে।
বিপদে সাহায্য না পেয়ে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে প্রার্থী সনিয়া গান্ধী
তসলিমা আরও বলেছেন যে হুমায়ুন ৪০ হাজার লোক ডেকে বিরিয়ানী খাইয়ে মসজিদের শিলান্যাস করলেন। কিন্তু মুর্শিদাবাদে কি মসজিদ কম আছে। তসলিমা বলেছেন যে কোনও জায়গাতে মসজিদ বানিয়ে ফেললেও তা কখনোই বাবরি মসজিদ হতে পারে না। তসলিমার মতে এই উপমহাদেশে মন্দির মসজিদ বা অন্য ধর্মীয় স্থাপনা অনেক আছে। কিন্তু যা নেই তা হল আধুনিক স্কুল, কলেজ কিংবা হাসপাতাল।
তসলিমা বলেছেন যে এই উপমহাদেশে এতো জায়গা নিয়ে মসজিদ করার চেয়ে বিজ্ঞান একাডেমি, মিউজিয়াম, পাঠাগার, থিয়েটার বানানো ভাল। কিছু না হলেও গোলাপের একটি বাগান তো অন্তত বানানো যায়! অর্থাৎ তসলিমা বলতে চেয়েছেন যে আমাদের এই উপমহাদেশে আমরা ধর্ম নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করছি তার থেকে প্রকৃত শিক্ষা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে পারলে তা হতে পারে কালজয়ী। কিন্তু ধর্মের এই খেলা এবং তা থেকে তৈরী হয়ে রাজনীতিই যেন এখন বাংলার রোজনামচা।
তসলিমা নাসরিন বরাবরই বাঁধ ভাঙা এবং তিনি ধর্মীয় বিধি নিষেধের উর্ধে উঠে মানুষের কথা বলেছেন। তাই তিনি বার বার ব্রাত্য হয়েছেন বাংলাদেশে এবং সমানভাবে পশ্চিমবঙ্গে। তবে তসলিমার এই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সিংহভাগ মানুষই তাকে সমর্থন জানিয়েছেন। তাদের মতে ধর্মীয় উপাসনার জন্য এত বাড়াবাড়ি না করে ইতিবাচক কাজকর্মে লিপ্ত হোক মানুষ। সেই সঙ্গে অনেকেই বলেছেন যে যেখানে যত বেশি উপাসনালয় সেখানে তত বেশি জিহাদিদের বসবাস।
তবে তসলিমার মত এবং তার পোস্টকে যারা সমর্থন করেছেন তারা প্রত্যেকেই একই কথা বলেছেন যে বিশেষ করে বাংলায় ধর্মের নাম উস্কানি দেওয়ার কাজ চলছে। এবং তার থেকে তৈরী হচ্ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। এর থেকে মানুষের বিরত থাকা উচিত এবং রাজনৈতিক প্রহসনে পা না দিয়ে যেন প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষা লাভ করে মানুষ।
