পাটনা: বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে আরেকটি নাটকীয় ঘটনা ঘটে গেল। সাসারাম বিধানসভা আসন থেকে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) প্রার্থী সতেন্দ্র সাহ মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরপরই গ্রেফতার হয়েছেন। ঝাড়খণ্ড পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করেছে, কারণ তার বিরুদ্ধে একটি অ-জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা (এনবিডব্লিউ) জারি ছিল।
এই ঘটনায় সতেন্দ্র সাহের সমর্থকরা হতবাক, কারণ তারা এই ঘটনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত ছিলেন। রোহতাস জেলার একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “সোমবার সতেন্দ্র সাহ সাসারাম আসন থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসারের কার্যালয়ে পৌঁছান। তখনই ঝাড়খণ্ড পুলিশের একটি দল সেখানে উপস্থিত হয় এবং তার বিরুদ্ধে জারি থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করে।
ফের অতর্কিতে বালুচ হামলায় নিহত ৫ পাক সেনাকর্মী
তাকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।”ঝাড়খণ্ড পুলিশের দাবি, সতেন্দ্র সাহ ২০০৪ সালে গড়ওয়া জেলার চিরৌঞ্জিয়া মোড়ে একটি ব্যাঙ্ক ডাকাতির মামলায় অভিযুক্ত। গড়ওয়ার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুনীল তিওয়ারি জানান, “২০১৮ সালে ওই মামলায় সতেন্দ্র সাহের বিরুদ্ধে একটি স্থায়ী গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, লুণ্ঠন এবং অস্ত্র আইন লঙ্ঘনের সাথে জড়িত ২০টিরও বেশি মামলা বিভিন্ন থানায় বিচারাধীন রয়েছে।” এই ঘটনা বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থীদের গ্রেফতারের তৃতীয় ঘটনা। এর আগেও জোটের দুই প্রার্থী মনোনয়ন দাখিলের পর গ্রেফতার হয়েছেন, যা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় তুলেছে।
এই গ্রেপ্তারের ঘটনা বিহারের নির্বাচনী উত্তাপকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, “এটি বিজেপি-জেডি(ইউ) জোটের ষড়যন্ত্র। আমাদের প্রার্থীদের টার্গেট করা হচ্ছে যাতে আমরা নির্বাচনে দুর্বল হই। কিন্তু জনগণ এর জবাব দেবে।”
তবে রোহতাস পুলিশ জানিয়েছে, এটি কোনো রাজনৈতিক ঘটনা নয়, বরং আইনের নিয়মিত প্রক্রিয়া। স্থানীয় বিজেপি নেতা রাজেশ সিং বলেন, “আইন সবার জন্য সমান। যদি কারও বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকে, তাহলে পুলিশ তার কাজ করবে। এতে রাজনীতির কিছু নেই।” বিহারের নির্বাচনী পরিস্থিতি এমনিতেই উত্তপ্ত। ইন্ডিয়া জোট এবং এনডিএ-র মধ্যে কড়া লড়াই চলছে।
সাসারামে আরজেডির প্রার্থী গ্রেফতারের ঘটনা জোটের সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। আরজেডি নেতৃত্ব এখন দ্রুত বিকল্প প্রার্থী খোঁজার চেষ্টা করছে, কারণ নির্বাচনের সময়সীমা ঘনিয়ে আসছে। তবে সতেন্দ্র সাহের গ্রেফতার তাদের প্রচারণার কৌশলকে জটিল করে তুলেছে। স্থানীয় নেতা মনোজ কুমার বলেন, “আমরা এখনও সতেন্দ্রজীর সঙ্গে আছি। তিনি জেলে থাকলেও আমাদের প্রচার চলবে। জনগণ জানে এটা ষড়যন্ত্র।”