মোকামা হত্যাকাণ্ডে নির্বাচন কমিশনের বড় পদক্ষেপ

mokama-murder-election-commission-action-bihar

পটনা, ১ নভেম্বর ২০২৫: বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে মোকামা হত্যাকাণ্ডের পর আজ নতুন চাঞ্চল্য । নির্বাচন কমিশনের (ইসিআই) দ্রুত অ্যাকশন নিয়ে মোকামা এবং বাড় এলাকার তিনজন কর্মকর্তার স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা এই ঘটনাকে নিয়ে সরকারের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। গত ৩০ অক্টোবর মোকামা উপনির্বাচনের প্রচারণার মাঝখানে জন সুরাজ সমর্থক দুলারচাঁদ যাদবের হত্যার ঘটনা যেন বিহারের ‘জঙ্গল রাজ’-এর ছবি আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।

Advertisements

কমিশনের এই বড় অ্যাকশন শুধুমাত্র স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা স্বীকার নয়, বরং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম ফেজে (৬ নভেম্বর) শান্তি নিশ্চিত করার একটি শক্তিশালী বার্তা। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া, যা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।মোকামার এই রক্তাক্ত ঘটনা ঘটেছিল খুশালচক এবং বাসাওয়াচক গ্রামের কাছে।

   

ধর্মীয় উৎসবে রামকৃষ্ণ পরিবারের উত্তরসূরিকে পিটিয়ে খুন

দুই দলের কনভয়ের মুখোমুখি হওয়ার পর ঝগড়া শুরু হয়, এবং গোলাগুলির মধ্যে দুলারচাঁদ যাদব মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে জানা গেছে, তাঁর মৃত্যুর কারণ ফুসফুস ফেটে যাওয়া এবং হার্ট অ্যাটাক গুলিবিদ্ধ নয়, বরং ভারী বস্তুর আঘাতে। তবু, এই হত্যা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফল বলে সকলে মেনে নিয়েছেন। জন সুরাজ প্রার্থী প্রিয়দর্শী পিয়ুশের কনভয়ে ছিলেন দুলারচাঁদ, যিনি দলের অফিসিয়াল কর্মী না হলেও প্রার্থীকে সমর্থন করছিলেন।

পুলিশ তিনটি এফআইআর দায়ের করেছে এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, “এখানে বাহুবলীরা রাজত্ব করে। অ্যান্ট সিং-এর মতো নেতারা এখনও ভয় দেখায়।” মোকামা তো বিহারের ‘বাহুবলী’ রাজনীতির প্রতীক অনন্ত কুমার সিং, দিলিপ সিং এবং সুরজভান সিং-এর মতো নামগুলো এখানকার ইতিহাসে রক্তাক্ত অধ্যায় যোগ করেছে।

Advertisements

নির্বাচন কমিশনের অ্যাকশন দ্রুত এবং কড়া। গতকাল তারা বিহার ডিজিপি-র কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে, এবং আজ সকালে পটনা গ্রামীণ এসপি-র নির্দেশে ঘোয়াশিওয়ারি এসএইচও মধুসূদন কুমার এবং ভাদৌর এসএইচও রবি রঞ্জনকে স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া, মোকামা এবং বাড়ের একজন অতিরিক্ত কর্মকর্তাকেও স্থানান্তর করা হয়েছে, যাতে নিরপেক্ষ তদন্ত হয়।

কমিশনের নির্দেশে সকল লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র জমা দেওয়া এবং অবৈধ অস্ত্রের উপর ক্র্যাকডাউন চালানো হবে। ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার এবং ডিজিপি-র কাছ থেকে আলাদা রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে, যাতে ঘটনার কারণ, তদন্তের অগ্রগতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা যায়।

কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, “এই স্থানান্তরগুলি শুধু শুরু। যদি দায়িত্বশীলরা পাওয়া যায়, তাহলে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হতে হবে।” এই পদক্ষেপ মোকামায় পুলিশি উপস্থিতি বাড়িয়েছে, এবং এলাকাটি এখন দুর্ভেদ্য দুর্গের মতো।