নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় একের পর এক জটিলতার মধ্যে আজ একটি বড় পরিবর্তন ঘটছে। ৯৯ শতাংশ এনুমারেশন ফর্ম জমা পড়ার পরেও SIR প্রক্রিয়াকে ঘিরে বিভিন্ন অভিযোগ সামনে আসছে। একদিকে, বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার)-দের অভিযোগের কারণে সোমবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, অন্যদিকে, বিরোধী দল এবং বিজেপি অভিযোগ তুলছে যে বুথ লেভেল অফিসারদের উপর চাপ দিয়ে ভুয়ো নাম ঢোকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে, নির্বাচন কমিশন একটি বড় পদক্ষেপ নিয়ে বিএলও অ্যাপে একটি নতুন ফিচার যোগ করেছে, যা প্রক্রিয়াটির স্বচ্ছতা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হল—বিএলও-দের দ্বারা এন্ট্রি করা নামের ক্ষেত্রে ভুল বা অসঙ্গতি থাকলে সেটি সংশোধন করার সুযোগ দেওয়া। এতদিন পর্যন্ত, যখন বিএলও-রা কোনো নাম এন্ট্রি করতেন, তখন তা আর পরিবর্তন করার কোনও উপায় ছিল না। কিন্তু এখন থেকে, নতুন ‘এডিট’ অপশন চালু হওয়ার ফলে, বিএলও-রা যদি কোনো ভুল করেন, তবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বরত ইআরও (ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার)-রা সেটি সংশোধন করতে পারবেন।
এটা নির্বাচন কমিশনের তরফে একটি বড় পদক্ষেপ, কারণ এর মাধ্যমে প্রকৃত ভোটারদের তালিকা তৈরি করা আরও সহজ হবে এবং ভুয়ো নামের অভিযোগ কমানো সম্ভব হবে। ‘এডিট’ অপশনটি চলতি সোমবার থেকেই কার্যকর করা হয়েছে, এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
নির্বাচনী কমিশন সবসময়ই স্বচ্ছতা এবং নির্ভুলতার উপর জোর দিয়ে থাকে, কিন্তু নানা সময়ে বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন না। বিশেষ করে, বিএলও-দের মধ্যে নানা অভিযোগ এসেছে যে প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। কিছু স্থানে, দলের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যেখানে ব্লক লেভেল অফিসারদের ওপর ভুয়ো নাম ঢোকানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে, বিএলও অ্যাপে ‘এডিট’ অপশন যুক্ত করা হলে, ভুল তথ্য দ্রুত সংশোধন করা সম্ভব হবে এবং ভোটার তালিকায় ভুল বা মিথ্যা তথ্যের সম্ভাবনা কমে যাবে।
নির্বাচন কমিশন দীর্ঘদিন ধরে এমন একটি ব্যবস্থা খুঁজছিলো, যার মাধ্যমে বিএলও-রা নাম এন্ট্রি করার পরেও ভুল বা অসঙ্গতি থাকলে তা সহজেই সংশোধন করা যাবে। ‘এডিট’ অপশন চালু হওয়ার পর, ইআরও-রা এখন মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ভুল তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। এটি একদিকে যেমন স্বচ্ছতার প্রমাণ, তেমনি এর মাধ্যমে ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল হবে। এই নতুন ব্যবস্থা ভোটার তালিকার নির্ভুলতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করবে, কারণ এখন বিএলও-রা কোনো ভুল করলে সংশোধন করার প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাবে। এমনকি, যে সব জায়গায় ভুয়ো নাম ঢোকানোর অভিযোগ ছিল, সেগুলিতেও এখন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
বিএলও অ্যাপের মাধ্যমে ভোটারদের নাম নিবন্ধিত করা হয়। এখন পর্যন্ত এই অ্যাপটি শুধুমাত্র এনুমারেশন ফর্মের এন্ট্রির জন্য ব্যবহৃত হত। কিন্তু ‘এডিট’ অপশন যুক্ত হওয়ার ফলে, এই অ্যাপের কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোটার তালিকা সঠিক এবং আপডেট রাখা এখন আরও সহজ হবে, কারণ যেকোনো ধরনের ভুল বা অসঙ্গতি দ্রুত সংশোধন করা যাবে। তবে, এই পরিবর্তন সবকিছু ঠিক করবে এমন নয়। বিরোধী দলগুলি এখনও অভিযোগ করছে যে নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে এই প্রক্রিয়া চালু করতে সক্ষম হয়নি। তাদের দাবি, ব্লক লেভেল অফিসারদের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে ভুল তথ্য বা ভুয়ো নাম ঢোকানোর চেষ্টা হচ্ছে। যদিও নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগগুলির তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছে, তবুও বিরোধীরা দাবি করছে, যত দ্রুত সম্ভব আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
