পটনা, ১৪ নভেম্বর: বিহারের ভোট গণনার শেষ লগ্নে কংগ্রেস শিবিরে যখন হতাশার ছায়া ঘনীভূত, ঠিক তখনই একটা আসন থেকে আসছে আলোর ঝলক কিষাণগঞ্জ। ২৪৩টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস এগিয়ে আছে মাত্র একটিতে, সেই কিষাণগঞ্জে।
আর এই আসনের জনসংখ্যার প্রায় ৬৮-৭০% মুসলিম। ফলাফল ঘোষণার পরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তীব্র কটাক্ষ ‘রাহুল গান্ধীর ম্যাসিভ ওয়েভ শুধু মুসলিম অধ্যুষিত কিষাণগঞ্জেই!’ কংগ্রেসের জন্য এটা লজ্জার, না স্বস্তির তা নিয়ে শিবিরের ভিতরেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
দেশে আসছে OnePlus 15R, নতুন ফ্ল্যাগশিপ ফোনের দাম, লঞ্চ টাইমলাইন ও ফিচার সামনে এল
কিষাণগঞ্জে কংগ্রেস প্রার্থী মোহাম্মদ জাওয়েদ এগিয়ে রয়েছেন প্রায় ১৮,৪৫০ ভোটে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেডিইউ-এর স্বীপি জৈন। ২০২০-তেও এই আসন কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছিল, তখনও প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ জাওয়েদ। কিন্তু এবারের ছবি আরও করুণ। ৭০টি আসনে লড়েও কংগ্রেসের ঝুলি প্রায় খালি। সেহরের সীমাঞ্চল কিষাণগঞ্জ, আরিমারা, বহাদুরগঞ্জ—এই তিন-চারটে আসন ছাড়া কংগ্রেসের কোনো অস্তিত্বই নেই।
আর সেই কিষাণগঞ্জেই মুসলিম ভোট এককাট্টা হয়ে কংগ্রেসকে বাঁচিয়ে রেখেছে।বিজেপি সমর্থকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন—‘রাহুল গান্ধী যত ভারত জোড়ো যাত্রা করুন, বিহারে তাঁর জোড়ো শুধু মুসলিম ভোটেই। হিন্দু ভোটাররা একেবারে প্রত্যাখ্যান করেছে।’
একটি ভাইরাল পোস্টে লেখা হয়েছে, “কংগ্রেসের একমাত্র আসন কিষাণগঞ্জ—যেখানে ৭০% মুসলিম। বাকি ২৪২টি আসনে কংগ্রেসের কী হল?” আরেকজন লিখেছেন, “এই হল সেকুলারিজমের আসল চেহারা।”কংগ্রেসের অন্দরে হতাশা।
এক রাজ্য নেতা নাম না করে বলেন, “আমরা মহাজোটে ছিলাম বলে আরজেডি-র ছায়ায় পড়ে গেছি। আমাদের নিজস্ব কোনো ন্যারেটিভ তৈরি হয়নি। রাহুলজি যতই ‘জাত গণনা’, ‘সম্মান’র কথা বলুন, বিহারে তা কাজে লাগেনি।” আরেক নেতা বলেন, “কিষাণগঞ্জে আমরা জিতছি শুধু মুসলিম ভোটের জোরে। কিন্তু এটা দলের জন্য সুস্থ লক্ষণ নয়। আমরা হিন্দু ভোটারদের কাছে পৌঁছতে পারিনি।”
পরিসংখ্যান আরও নিষ্ঠুর। ২০১৫-এ মহাজোটে থেকে কংগ্রেস পেয়েছিল ২৭টি আসন। ২০২০-এ ১৯টি। এবার মাত্র ১টি। ভোটশেয়ার নেমেছে ৫.৪%-এ। সিমানচল ছাড়া কোথাও কংগ্রেসের প্রার্থী তৃতীয় স্থানের ওপর উঠতে পারেননি। পূর্ণিয়া, কাটিহারেও জেডিইউ-বিজেপির কাছে হার। এমনকি রাহুল গান্ধীর সভা হওয়া স্থানগুলোতেও কংগ্রেসের প্রার্থীরা ধরাশায়ী।
রাহুল গান্ধী নিজে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। কিন্তু কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অখিলেশ প্রসাদ সিং বলেছেন, “এখনও গণনা চলছে। কিছু আসনে আমরা লড়াইয়ে আছি। কিষাণগঞ্জে জয় নিশ্চিত। আমরা মহাজোটের অংশ হিসেবে সরকার গঠনে সাহায্য করব।” কিন্তু তাঁর গলায় আত্মবিশ্বাসের অভাব স্পষ্ট।


