উত্তরবঙ্গে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর সোমবার শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ আধিকারিক, উত্তরবঙ্গের জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মকর্তারা। বন্যা ও ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়ার কর্মসূচিও ছিল মুখ্যমন্ত্রীর।
তবে প্রশাসনিক বৈঠকের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ফের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিকে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে, অথচ বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জিএসটি তুলে দেওয়া উচিৎ। রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে রাখা হচ্ছে। কেন্দ্র নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে অন্যায্যভাবে তহবিল বণ্টন করছে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে ছিল তীব্র ক্ষোভের সুর। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্র রাজ্যগুলির জিএসটি রাজস্বে অন্যায্য হস্তক্ষেপ করছে। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য বীমায় জিএসটি মুকুব করতে গিয়ে সব রাজ্যের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিয়েছে। এখন বলছে— ওরা করেছে! এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের রাজ্যের জিএসটি ফান্ড থেকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা গেছে। অথচ এর জন্য কোনও ক্রেডিট নেই। গদ্দার, মীরজাফররা রাজ্যের ক্ষতি করছে।”
দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারসহ উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা সাম্প্রতিক বন্যা ও ভূমিধসে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়িঘর ভেসে গেছে, সড়ক ও সেতু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। রাজ্য প্রশাসন ইতিমধ্যেই ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে এবং ক্ষতিপূরণ বিতরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এত বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরও কেন্দ্রীয় সরকার কোনও আর্থিক সাহায্য পাঠায়নি। তিনি বলেন, “এত বড় দার্জিলিংয়ে বিপর্যয় হওয়ার পরেও এক টাকা দেয়নি কেন্দ্র। রাজ্য নিজের সম্পদ দিয়েই উদ্ধার ও পুনর্গঠন কাজ করছে।”


