মাত্র ১৭ দিনে SIR শেষ করে রেকর্ড নদিয়ার ওয়াহিদের

blo-wahid-akram-mandal-digitisation-success-west-bengal

নদিয়া, ২৪ নভেম্বর: রাজ্যজুড়ে যখন ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে বিতর্ক, প্রতিবাদ ও অস্থিরতা চরমে তখন নীরব কিন্তু অসাধারণ এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে নজর কাড়লেন নদিয়ার রাণাগাছ উত্তরের BLO ওয়াহিদ আক্রম মণ্ডল। বিতর্ক নয়, কাজই তাঁর পরিচয়। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের আবহেও তিনি প্রমাণ করে দিলেন প্রশাসনিক দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলে অসম্ভব বলে কিছু নেই।

Advertisements

সবেমাত্র সতেরো দিনের মধ্যেই EF ফর্ম ডিজিটাইজেশন সম্পূর্ণ করার রেকর্ড গড়লেন ওয়াহিদ। মোট ৮০৬ জন ভোটারের সমস্ত তথ্য শতভাগ ডিজিটাইজেশন, যা সাধারণত BLO-দের জন্য অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও বিশাল পরিশ্রমের কাজ। নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের ভাষায় “এটা শুধু কাজ নয়, এটা দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধা।”

   

মঙ্গলে আসছে Tata Sierra – কী কী চমক থাকতে পারে জানুন

CEO অফিসের দেওয়া তথ্য বলছে, শুরু থেকেই ছিল ওহিদের গতি ও মনোযোগ। প্রথম দুই দিনেই প্রায় ২০০টি ফর্ম ডিজিটাইজেশন করে তিনি সবার নজর কাড়েন। অনেক BLO যেখানে প্রথম সপ্তাহেই স্থির গতিতে পৌঁছাতে পারেন না, সেখানে ওহিদের ধারা অন্যরকম—সময়, ক্লান্তি বা দিন-রাতের বাধা তাঁর কাজে প্রভাব ফেলেনি। পরিবার ও ব্যক্তিগত সময়ের ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্বকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন তিনি।

সপ্তাহ না যেতেই রাণাগাছ উত্তরের নির্বাচনী অফিস লক্ষ্য করে যে—এই এক ব্যক্তি প্রতিদিনের অগ্রগতিতে একাই গোটা এলাকার গ্রাফ বদলে দিচ্ছেন। আর ১৭তম দিনে, যেখানে অন্য কেন্দ্রগুলিতে ডিজিটাইজেশন এখনও চলছে, সেখানে ওহিদ পুরো কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন।
পেশার জায়গায় এমন নিষ্ঠা কখনও আড়ালে থাকে না। রাজ্যের Chief Electoral Office, West Bengal আনুষ্ঠানিকভাবে BLO ওহিদ আকরাম মণ্ডলকে সম্মানিত করে। সোশ্যাল মিডিয়া, প্রশাসনিক নথি, অফিসিয়াল রিপোর্ট সব জায়গাতেই প্রশংসার সুর।

Advertisements

এমন সময়ে যখন রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে SIR প্রক্রিয়া নিয়ে বিরাট টানাপোড়েন চলছে, কেউ বলছেন চাপ, কেউ বলছেন ষড়যন্ত্র সেখানে BLO-দের কাজের প্রতি মানুষের বিশ্বাস ফেরাতে বড় ভূমিকা রাখছেন ওয়াহিদের মত কর্মীরা। অনেকেই BLO-দের কাজকে অবমূল্যায়ন করেন।

কিন্তু বাস্তবে, ঘরে ঘরে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা, যাচাই করা, নথি পর্যালোচনা করা, ডিজিটাইজেশন করা এ এমন এক দায়িত্ব যা প্রায়শই সমাজের সামনে আসে না। ওয়াহিদ নিজে কারও সামনে প্রচার চান না। ঘনিষ্ঠরা বলেন “ওয়াহিদ ভাই দিনের শেষে কাজ শেষ না করলে ঘুমাতে পারেন না। এটাই তাঁর নেশা।”

তাঁর সহকর্মীর কথায় “ছুটি নেই, ক্লান্তি নেই। রাত হোক বা দিন ওয়াহিদ কাজ চালিয়ে গেছে। যদি সব BLO ওর মতো নিষ্ঠা দেখাত, সিস্টেম বদলাতে সময় লাগত না।” রাজনীতি তার নিজের জায়গায়। তর্কও চলবে। কিন্তু এই মুহূর্তে একটাই সত্য পাহাড়ের মতো স্পষ্ট বেশ কিছু BLO তাদের দায়িত্বের জায়গাটাকে সন্মানের জায়গা হিসেবে দেখেন।

ওয়াহিদ আক্রম মণ্ডল তাঁদের মধ্যে এক উজ্জ্বল নাম। এ রাজ্যে SIR প্রক্রিয়া কত দূর এগোবে, বিতর্ক কোন দিকে মোড় নেবে, তার বিচার ভবিষ্যতের হাতে। কিন্তু ২০২৪-এর এই সময়ে একজন নির্বাচনী কর্মী যে নিজের পরিশ্রম দিয়ে নতুন রেকর্ড গড়লেন, তা দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ওহিদের মতো কর্মীদের কাজই গড়ে তোলে গণতন্ত্রের ভিত্তি।